করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধকারী জেনেটিক উপাদান খুঁজে বার করতে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা চালানো হচ্ছে।
কোভিড অতিমারি বিশ্ব জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়েছে। কেবল শারীরিক ভাবে নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেরও হানি ঘটিয়েছে এই ভাইরাস। তবে এখনও এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁদের এই রোগ বাগে আনতে পারেনি। এমন অনেকেই আছেন যাঁরা বার বার কোভিড রোগীদের সংস্পর্শে আসার পরও সংক্রমিত হননি।
এই বছরের মে মাসে প্রকাশিত ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদন কেন সেই মানুষগুলি কখনও কোভিডে আক্রান্ত হননি, তা নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, যাঁরা করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদে থেকেছেন তাঁদের জিন পরীক্ষা করলে সংক্রামিত এবং সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় এই রোগের ধরণ সম্পর্কে অনেক বেশি তথ্য পাওয়া যাবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধকারী জেনেটিক উপাদান খুঁজে বার করতে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা চালানো হচ্ছে।
ক্লিনিকাল মাইক্রোবায়োলজিস্ট এবং নিউ ইয়র্কের ‘রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়’-এর গবেষক আন্দ্রেস স্পান সেই গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই গবেষণার জন্য ৫,০০০ জনেরও বেশি লোকের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা কোনও দিনই কোভিডে আক্রান্ত হননি।
প্রতীকী ছবি।
বেভিন স্ট্রিকল্যান্ড নামে এক নার্স অ্যানেস্থেটিস্ট এই গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি জানান, তাঁকে সারা ক্ষণ করোনা রোগীদের মধ্যেই থাকতে হত। তিনি যে সব সময়ে মাস্ক পরে থাকতেন এমনটিও নয়। তবুও আজ অবধি তাঁর করোনা সংক্রমণ হয়নি।
‘ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়’-এর স্কুল অব পাবলিক হেলথের অতিমারি বিষয়ের অধ্যাপক জেনিফার নুজো ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, যাঁরা কোনও দিন কোভিডে আক্রান্ত হননি, তাঁদের জিন পরীক্ষা করলেই জানা যাবে এই ভাইরাস কী ভাবে মানুষের শরীরে বিস্তার ঘটায়। আদৌ কি জিনের সঙ্গে এই ভাইরাস কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা-ও স্পষ্ট হবে।
অতীতের গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে, যে কিছু জেনেটিক বৈচিত্র আছে যা এইচআইভি, যক্ষ্মা এবং ফ্লু-এর মতো সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। এই নতুন গবেষণায় কোভিডের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির জন্য এই ধরনের জেনেটিক উপাদান থাকতে পারে কি না তা খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে।