মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি শরীরের বিভিন্ন হরমোনের ক্ষরণকে প্রভাবিত করে। প্রতীকী ছবি।
অতিরিক্ত ওজন মানেই শরীরে হাজারটা রোগকে আমন্ত্রণ! চিকিৎসকরা সব সময়ই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দেন। কেবল দেখতে সুন্দর লাগার জন্য নয়, সুস্থ থাকতেও ওজন কমানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। কিন্তু ওজন কমানোর সঠিক পন্থা না মেনে হঠাৎ খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিলে বা হঠাৎ মাত্রাতিরিক্ত শরীরচর্চা শুরু করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তবে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা শরীরচর্চা করতে মোটেই পছন্দ করেন না। বার বার জিমে ভর্তি হলেও দিন দুয়েক করেই হাল ছেড়ে দেন অনেকে। অফিসের কাজের চাপে জিমে ভর্তি হয়েও যেতে পারছেন না? অথচ বাড়তি ওজন চিন্তায় ফেলেছে? জিমে গিয়ে শরীরচর্চা না করেও আপনি মেদ ঝরিয়ে ফেলতে পারেন। ভাবছেন, বুঝি মশকরা করছি! একদমই না। জেনে নিন কোন কোন অভ্যাস শুরু করলেই ওজন ঝরবে দ্রুত।
১) উচ্চ প্রোটিনযুক্ত প্রাতরাশ: অফিসের দেরি হওয়ার ভয় অনেকেই খালি পেটে বেরিয়ে যান। এই অভ্যাসের কারণে ওজন বাড়ে বইকি! প্রাতরাশে বেশি করে প্রোটিন রাখুন। এতে অনেক ক্ষণ পেট ভরাট থাকবে, বাইরের খাবার খাওয়ার ইচ্ছে কমবে। তাই ব্রেকফাস্টে ডিম, পিনাট বাটার, ওট্স, বাদাম এই সব রাখতে পারেন।
২) হেলদি স্ন্যাকস: কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যেই আমাদের খিদে পায়। আর অফিসে খিদে পাওয়া মানেই হয় রাস্তার ধারের রোল, চাউমিন আর না হয় চপ-মুড়ি। ভাজাভুজি না খেয়ে অফিসের ব্যাগে কিছু স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস রাখার অভ্যাস রাখুন। গোটা ফল, ড্রাই ফ্রুটস, মাখানা দিয়েই সারুন নাস্তা!
৩) মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক স্বাস্থ্যকে অবহেলা করা নতুন কিছু নয়। অথচ দীর্ঘস্থায়ী মানসিক উদ্বেগ অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি ডেকে আনে স্থূলতাও। মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি শরীরের বিভিন্ন হরমোনের ক্ষরণকে প্রভাবিত করে। পাশাপাশি, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে খাওয়াদাওয়ার উপরেও। এই সব কিছুই ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। কাজেই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ওজন কমানোর জন্যেও অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে পরামর্শ নিতে হবে মনোবিদের।
বিশেষজ্ঞদের মতে এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দিনে অন্তত ছ’ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন। ছবি: শাটারস্টক।
৪) পর্যাপ্ত ঘুম: গবেষণা বলছে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বডি মাস ইন্ডেক্স (বিএমআই) বেড়ে যেতে পারে। আর বডি মাস ইন্ডেক্স বেড়ে যাওয়ায় অর্থ ওজন বৃদ্ধি। বিশেষজ্ঞদের মতে এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দিনে অন্তত ছ’ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন।
৫) কর্মঠ থাকা: জিমে যাওয়ার সময় না থাকলেও সারা দিনে এমন কতগুলি কাজ করা যায় যা শরীরচর্চার সমান ক্যালরি ঝরায়। ধরুন, বাসস্যান্ড থেকে বাড়ি রিক্সা করে না ফিরে হেঁটে ফিরতে পারেন, রাতে শোওয়ার আগে প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলার সময় নীচে নেমে একটু হাঁটাহাঁটি করে নিলেন। খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে ঘুমোতে যাবেন না। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই অভ্যাস ছাড়তে হবে।