ফ্যারেনজ়াইটিসের উপসর্গ কী কী? ছবি: ফ্রিপিক।
ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেই হাঁচি-কাশির সমস্যা শুরু হয় অনেক শিশুরই। গলায় ব্যথা হয়, গলা ফুলে যায়। ঢোঁক গিলতেও সমস্যা হয়। গলায় সংক্রমণ থেকে এমন সমস্যা হতে পারে। অনেক সময়েই শিশুর গলা ব্যথা হলে নিছক ঠান্ডা লেগেছে মনে করে এড়িয়ে যান বাবা-মায়েরা। ফলে রোগ ধরা পড়তেও দেরি হয়। গলায় ব্যথা ফ্যারেনজ়াইটিসের কারণে হচ্ছে কি না, তা আগে বোঝা দরকার বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে সংক্রমণ বেড়ে গিয়ে দাঁত ও মাড়ির সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল বলছেন, ফ্যারেনজ়াইটিস মানে হল গলার ‘ফ্যারিংস’ অংশ অস্বাভাবিক রকম ফুলে যাওয়া। তখন মারাত্মক গলায় ব্যথা শুরু হবে, খাবার গিলতেও কষ্ট হবে। অনেক সময়ে দাঁত ও মাড়িতে ব্যথাও শুরু হয়। শুকনো কাশি বাড়তে থাকে। ঘন ঘন জ্বর আসতে থাকবে। ওষুধ, সিরাপ, অ্যান্টিবায়োটিকেও ঠিকমতো সারতে চাইবে না। তখন বুঝতে হবে, নিছক সর্দি-কাশির সমস্যা নয়। দেরি না করে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
টনসিলাইটিসকে ফ্যারেনজ়াইটিসের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন অনেকে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, মুখ বড় করে হাঁ করলে গলার যে অংশটি দেখা যায়, সেটিই হল ফ্যারিংস। টাকরা, তালু, আলজিভ, গলার পিছন দিকের দেওয়াল— এই পুরো অংশটি নিয়েই ফ্যারিংস। ওই অংশেই একাধিক টনসিল গ্রন্থি থাকে। সেখানে সংক্রমণ মানেই ফ্যারেনজ়াইটিস। এই রোগ হলে গলা ও ঘাড় ফুলে যায়। অনেক সময়ে ঘাড় শক্তও হয়ে যায়।
ফ্যারেনজ়াইটিসের আরও একটি কারণ হচ্ছে, অ্যাসিড রিফ্লাক্স। খাবার ঠিকমতো হজম না হলে পাকস্থলী থেকে অ্যাসিড উঠে এসে গলার পিছনের দেওয়ালের ক্ষতি করে। এটিকে বলা হয় গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজ়অর্ডার (জিইআরডি)। তাই কী কারণে গলায় ব্যথা বা প্রদাহ হচ্ছে, তা চিকিৎসকই বুঝতে পারবেন।
সারবে কীসে?
ফ্যারেনজ়াইটিস ছোঁয়াচে। হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে জীবাণু ছড়াতে পারে। তাই শিশুকে বাইরে নিয়ে গেলে মাস্ক পরাতেই হবে।
মুখে বা নাকে হাত দিলে ভাল করে হাত ধুইয়ে দিতে হবে। সঙ্গে স্যানিটাইজ়ার রাখতে হবে বাবা-মাকে।
ফ্যারেনজ়াইটিস ধরা পড়লে শিশুকে স্কুলে না পাঠানোই ভাল। এতে রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে কোনও রকম অ্যান্টিবায়োটিক, সিরাপ বা ট্যাবলেট খাওয়াবেন না শিশুকে। কোনও রকম সাপ্লিমেন্ট দিলেও ক্ষতি হতে পারে।