বহু গুণে নারকেল, কখন ও কী ভাবে খাবেন? —ফাইল চিত্র।
কথায় বলে, বহু গুণে নারকেল। এর জল থেকে শাঁস— সবই উপকারী। প্রায় সব রকম ভিটামিন, আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ়ে সমৃদ্ধ নারকেল পাতে এক থেকে দু’টুকরো থাকলেই যথেষ্ট। এর নাকি উপকার অনেক। ওজন কমবে, উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে, এমনকি ভাল থাকবে হৃদ্যন্ত্রও। সকাল সকাল খালি পেটে নারকেল খেলে কী কী উপকার হতে পারে তা জেনে রাখুন।
এই বিষয়ে চিকিৎসক দীপিকা সুরের বক্তব্য, “কাঁচা নারকেল অনেকেরই হজম হয় না। যদি গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বেশি থাকে তা হলে না খাওয়াই ভাল। তবে পরিমিত খেলে এর উপকার অনেক। যেমন, ছোট দুই থেকে তিন টুকরো খাওয়া যেতেই পারে। নারকেলে প্রচুর ফাইবার থাকে বলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। হজমশক্তিও বাড়ায়।”
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, নারকেলে ‘মিডিয়াম চেন ট্রাইগ্লিসারাইড (এমসিটি)’ থাকে যা শরীরে শক্তি জোগায়। পেটের মেদ কমাতেও সাহায্য করে। নারকেলের ফাইবার অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি রাখে, ফলে বার বার খিদে পায় না। এই এমসিটি-র আরও একটা ভূমিকা হল অতিরিক্ত ক্যালোরি পুড়িয়ে দেওয়া। ‘থার্মোজেনেসিস’ প্রক্রিয়ায় বাড়তি ক্যালোরি পুড়িয়ে মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
নারকেলের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও পলিফেনল শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। এর অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ আছে, যা জীবাণু সংক্রমণ প্রতিহত করতে পারে। নারকেলের আরও একটা গুণ হল স্মৃতিশক্তি প্রখর করা। নিয়মিত খেলে ভুলে যাওয়া, ভাবনাচিন্তা গুলিয়ে যাওয়া বা ‘ব্রেন ফগ’-এর মতো সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। নারকেলে প্রচুর প্রোটিন ও আয়রন থাকে যা ত্বক ও চুলের জন্যও ভাল।
তবে পরিমিতই খেতে হবে। সকালে দুই থেকে তিন ইঞ্চির ২-৩ টুকরো নারকেল খেলে উপকার হবে। আবার নারকেল কুরিয়ে রান্নায় বা স্যালাডে দিয়েও খেতে পারেন। নারকেল ছোট ছোট করে কেটে তরকারিতে দিয়ে খেলেও উপকার হবে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। নারকেলের বহু পুষ্টিগুণ থাকলেও তা সকলের জন্য উপকারী না-ও হতে পারে। তাই যদি কোনও রকম অসুখ বা অ্যালার্জি জনিত সমস্যা থাকে তা হলে খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।