শরীরের খেয়াল রাখতেও এদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ছবি: সংগৃহীত
আদা এবং রসুন বাটা— আমিষ রান্নার অন্যতম উপকরণ। রান্নার স্বাদ বাড়াতে এই দু’টি মশলার জুড়ি মেলা ভার। খুব সাধারণ রান্নাও আদা-রসুনের গুণে ভাল হতে বাধ্য। মাংস ছাড়াও আরও অনেক রান্নাতেই আদা এবং রসুন বাটা দেওয়া হয়। রান্নার স্বাদ বাড়ানো আদা-রসুনের এক মাত্র কাজ নয়। শরীরের খেয়াল রাখতেও এদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
রসুনের মধ্যে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। শরীর ভাল রাখা ছাড়াও বিশেষ কিছু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে রসুন প্রায় বিকল্পহীন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি এর অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য নানা ধরনের সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে। গুণে রসুনের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দেয় আদাও। আদা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। আদায় ফাইবার থাকে প্রচুর পরিমাণে, যা শরীরের পিএইচ লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে হজমের প্রক্রিয়া খুবই ভাল হয়। আদা এবং রসুনের যৌথ গুণও কম নয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, স্বতন্ত্র ভাবে আদা এবং রসুনের উপকারিতা প্রচুর। আবার এই দু’টি আনাজ একসঙ্গে মিশে গেলে নাকি বাড়তি কিছু সুফল মেলে। এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। রান্নায় শুধু আদা বা রসুন না দিয়ে এই দু’য়ের মিশ্রণ দিলে তা কিন্তু বেশি কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। অপ্রত্যাশিত কিছু সুফল মিলতে পারে। আদা-রসুন বাটা শরীরের ঠিক কী কী উপকার করে?
হজমের গোলমাল কমায়
আদার জিঞ্জেরল এবং রসুনের অ্যালিসিন— এই দু’টি উপাদান আলাদা ভাবে পেটের গোলমাল কমাতে পারে না। তবে যখন এই উপকরণগুলি একসঙ্গে মিশে যাচ্ছে, নতুন একটি উপাদান তৈরি হয়ে হজমের গোলমাল কমাতে সহায়তা করে। আদা এবং রসুনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ডায়েরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা ইত্যাদি দূর করে, শরীরের যাবতীয় টক্সিন বার করে দিয়ে শরীরকে রাখে চনমনে ও ঝরঝরে। শরীরের যাবতীয় কার্যকলাপ সচল রাখে এই মিশ্রণ। লিভার এবং মূত্রাশয়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে আদা-রসুন বাটা ব্যবহার করতে পারেন রান্নায়। সত্যিই উপকার পাবেন।
হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়
এই মিশ্রণের আরও একটি সুবিধা হল, এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তের সঠিক প্রবাহ নিশ্চিত করে। হৃদ্রোগের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁরা অনেকেই আদা-রসুন দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলেন। এতে আখেরে লোকসান-ই হয়। রোজকার সাধারণ তরকারিতেও অল্প আদা-রসুন ব্যবহার করতে পারেন। হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা অনেকাংশ কমে তাতে।
সর্দি-কাশি কমাতে
কার্তিক মাস পড়ে গিয়েছে। সর্দি-কাশিতে ভোগার একেবারে মোক্ষম সময় এই হেমন্তকাল। এই সময় সুস্থ থাকতে রান্নায় ব্যবহার করতে পা্রেন আদা এং রসুন বাটা। এগুলির মধ্যে থাকা নানা উপকারী উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ঠান্ডা লেগেছে মনে হলে রোজের কোনও একটি রান্নায় অল্প পরিমাণে হলেও ব্যবহার করতে পারেন আদা এবং রসুন বাটা।
স্তন্যদুগ্ধের উৎপাদন বাড়াতে
নতুন মা হওয়ার পর শরীরের বিভিন্ন উপাদানের ঘাটতির কারণে অনেকেরই স্তন্যদুগ্ধের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকে। এতে আশঙ্কিত হয়ে পড়ার কিছু নেই। স্তন্যদুগ্ধের উৎপাদন বাড়াতে রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন আদা-রসুন বাটা। সমাধান হবে সমস্যার।