এই ধনতেরসে টলি-তারকারা কে কী কিনলেন? ছবি: সংগৃহীত
বেশ কিছু বছর ধরেই ধনতেরাস উৎসবকে নিজের করে নিয়েছে বাঙালি। মূলত উত্তর ভারতের বাসিন্দাদের মধ্যে এই উৎসব পালনের প্রথা ছিল এর আগে। তবে এখন এই উৎসব বেশ উৎসাহের সঙ্গেই পালন করা হয় বাঙালিদের বাড়িতেও।
ধনতেরসে ধাতু কেনার চল রয়েছে। কেউ সোনা কেনেন, কেউ বা কেনেন বাসনপত্র। গয়না হোক বা বাসন— লক্ষ্মীলাভই লক্ষ্য। সেই তালিকায় পিছিয়ে নেই তারকারাও। টলিপাড়ার অনেক অভিনেত্রীকেই এ দিন গয়নার দোকানে ঢুঁ মারতে দেখা যায়। এই ধনতেরসে টলি-তারকারা কে কী কিনলেন? খোঁজ নিয়ে দেখল আনন্দবাজার অনলাইন।
দুর্গাপুজো কিংবা ধনতেরস— যে কোনও উৎসবই খুব জাঁকজমক করে পালন করে থাকেন টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, চট্টোপাধ্যায় বাড়িকে যাঁরা সারা ক্ষণ আগলে রাখেন, ঘরের বিভিন্ন কাজ যাঁরা করেন, ধনতেরসের প্রথম উপহারটি প্রতি বার তাঁদের হাতেই তুলে দেন তিনি। চেষ্টা করেন সোনার কিছু দেওয়ার। তবে সব সময়ে তা হয়ে ওঠে না। সে ক্ষেত্রে রুপোর জিনিস দেন। গয়না ছাড়া বাসনও থাকে সেই তালিকায়। এ ছাড়া বাড়ির জন্য দু’টি ঝাঁটা কেনেন সুদীপা। ধনতেরসে ঝাড়ু কেনা শুভ বলে মানেন অনেকেই। সুদীপার শ্বশুরবাড়িতে অবশ্য সোনা কেনা ধনতেরসের রীতি নেই। এমন নিয়ম কেন? সুদীপা বলেন, ‘‘ধনকুবেরের গায়ের রং অসম্ভব সাদা এবং উজ্জ্বল। সে জন্য অ্যালুমিনিয়াম, প্ল্যাটিনাম, রুপো এবং হিরে— এগুলির মধ্যে কোনও একটি কেনারই চল আছে। যে বছর যেমন সুবিধা হয়, সেটাই কিনি। তবে রুপো আর হিরেই বেশি কেনা হয়।
দুর্গাপুজো কিংবা ধনতেরস— যে কোনও উৎসবই খুব জাঁকজমক করে পালন করেন সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আমি আর অগ্নি শুধু এক বার পরস্পরকে প্ল্যাটিনামের আংটি দিয়েছিলাম। মা আমাদের সঙ্গে থাকেন। তাই ধনতেরসে আমার মায়ের জন্যও মনে করে কিছু কিনি। আমার শাশুড়ি মা আবার এ সব সংস্কারমুক্ত থাকতে চান। ধনতেরসে আলাদা করে কোনও উপহার নিতে চান না।’’ শুটিং, সংসার, রেস্তরাঁ, বুটিক এবং আদিদেব— এত কিছু একসঙ্গে সামলে ধনতেরসে কেনাকাটার সময় পান? নিজের জন্যেই বা এই ধনতেরসে কী কিনলেন তিনি? সুদীপার কথায়, ‘‘সময় বার করেই বাড়ি সকলের জন্য আমি কেনাকাটা করে আসি। তবে আমার জন্য কেনেন অগ্নিদেব। আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে কিনতে পারেন। আবার নিজেও কিনে নিয়ে আসেন অনেক সময়ে। এ বছরও হিরের আংটি কেনার কথা ভেবেছি। সেটা অগ্নি দেবে। আসলে ছোটবেলায় ধনতেরস নিয়ে আলাদা করে কোনও উৎসাহ ছিল না। ঝাঁটা কেনার চল ছিল। ঝাড় দিয়ে অলক্ষ্মীকে বিদায় করে লক্ষ্মীকে ঘরে ডাকার জন্যই এই ঝাঁটা কেনার নিয়ম। এ দিন বাড়িতে মা সারা রাত মা লক্ষ্মীর সামনে একটা রুপোর প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতেন। আমিও এখন তেমনই করি। বলা হয়, যে বাড়িতে কোনও কোলাহল নেই, অশান্তি নেই, শান্ত, নিরিবিলি, পরিষ্কার এবং যে বাড়িতে প্রদীপ দেখতে পান, ধনতেরসে ক্লান্ত হয়ে সেখানেই ধনকুবের মা লক্ষ্মীর পায়ের কাছে এসে শুয়ে পড়েন। ধনকুবেরের আগমন হেতু রুপোর থালা-গ্লাসে ফল এবং জল দিয়ে রাখা হয়। কুরুশের ঢাকনা দিয়ে তা ঢেকে রাখা হয়। ধনতেরসে আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মী-গণেশ, ধনকুবের এবং ধন্বন্তরীকে পুজো করা হয়। বছরে এই একটি দিন সুস্বাস্থ্যের কামনা করে তাঁকে পুজো করা হয়।’’
সন্দীপ্তা বলেন, ‘‘ধনতেরসে প্রতি বারই কিছু না কিছু কেনা হয়। এ বারও কিছু কিনব। ফাইল চিত্র।
টলিউডের আরও এক অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন আবার সবে বিদেশে ছুটি কাটিয়ে ফিরেছেন। সন্দীপ্তা বলেন, ‘‘ধনতেরসে প্রতি বারই কিছু না কিছু কেনা হয়। এ বারও কিছু কিনব। গত বছর নিজের জন্য একটা কানের দুল কিনেছিলাম। এ বছর গলার হার কিনতে পারি। মাকে নিয়ে বিকেলে যাব। মায়ের যদি কিছু পছন্দ হয়, মাকেও কিনে দিতে পারি। এখনও ঠিক করে উঠতে পারিনি। মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে দেখি কী কেনা যেতে পারে।’’ ধনতেরসে সোনা কিনলে সুখ-সমৃদ্ধি বাড়ে। এ কথা বিশ্বাস করেন অভিনেত্রী? সন্দীপ্তা বলেন, ‘‘ব্যাপারটা ঠিক বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাসের নয়। মাকে দেখেছি এই দিনটিতে কেনাকাটা করতে। সেই থেকে চলে আসছে। মনের শান্তি আর কি। আজ না কিনলেও অন্য এক দিন কিনতে হবে। আর প্রতি বার আমি সোনা কিনি, এমনও নয়। দুয়েক বার রুপোও কিনেছিলাম।’’