তামার পাত্রে গরম জল খেলে কী হবে? ছবি: ফ্রিপিক।
তামার পাত্রে জল খেলে অনেক রোগব্যাধি দূরে থাকে, এমনটাই দাবি করা হয় আয়ুর্বেদে। বলা হয়, রাতে তামার জগ বা গ্লাসে জল ঢেকে রেখে দিন। সকালবেলায় খালি পেটে সেই জল খেলেই বিভিন্ন অসুখবিসুখ থেকে দূরে থাকা যাবে। অনেকেই নিয়মিত তামার বোতলে সারা দিন ধরে জল খান। আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুযায়ী, তামার পাত্রে জল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দূর হয়, আলসার নিরাময় করা যায়। কিন্তু, তামার বোতল থেকে বেশি জল খাওয়া কি সত্যিই ভাল অভ্যাস?
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামের একটি পোস্ট থেকে জানা গিয়েছে, বছর সতেরোর একটি মেয়ে তামার পাত্রে গরম জল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। জানা গিয়েছে, মেয়েটি উষ্ণ জলে লেবুর রস মিশিয়ে তা রোজই তামার পাত্রে ঢেলে খেত। আর এই অভ্যাসের কারণেই মেয়েটির শরীরে সাংঘাতিক বিষক্রিয়া ঘটে। বমি, পেটখারাপ শুরু হয়।
মেডিসিনের চিকিৎসক অকুল সেন এই বিষয়ে বলছেন, আগেকার দিনে তামার পাত্রে জল ঢেলে খাওয়ার অভ্যাস ছিল। এখনও অনেকেই খান। তবে তামার পাত্র থেকে জল খেতে হবে পরিমিত। দিনে এক গ্লাস জল তামার পাত্র থেকেই খেতেই পারেন। কিন্তু সারা দিন তামার বোতল বা পাত্র থেকে জল খাওয়া সঠিক অভ্যাস নয়। অতিরিক্ত তামা পেটে গেলে তা অনেকের ক্ষেত্রেই বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে। বমি, পেটখারাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে। লিভার এবং কিডনির ক্ষতি হতে পারে। শ্বাসনালিতে প্রদাহ, মাথা ঘোরা, গলা-বুক জ্বালার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। মেয়েটি লেবুর রস খেয়েছিল তামার পাত্রে। লেবুর অ্যাসিড তামার সঙ্গে বিক্রিয়া করে এমন উপাদান তৈরি করেছিল, যা শরীরে ঢুকে বিষক্রিয়ার কারণ হয়ে ওঠে। তাই তামার পাত্রে কখনওই গরম জল বা টক জাতীয় পানীয় খাওয়া উচিত নয়।
তামার পাত্রে রাখা জল খাওয়া ভাল, তবে খেতে হলে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সারা দিন তামার বোতল থেকে জল খেলে লাভের পরিবর্তে ক্ষতি বেশি হবে। সবচেয়ে ভাল হয়, রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা তামার পাত্রে জল রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে তা খেলে। দিনে এক বার বা দু’বার খাওয়াই ভাল। তার বেশি নয়।