শিশুদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে রীতিমতো সাধ্যসাধনা করতে হয়। ছবি: সংগৃহীত।
দুধ না খেলে হবে না ভাল না ছেলে! এ গান ছোটদের খুব প্রিয়। কিন্তু গানের সারমর্ম বুঝে ছোটরা যে পুষ্টিকর খাবার খুব ভালবেসে খেয়ে ফেলে, তেমনটা নয়। তাদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে রীতিমতো সাধ্যসাধনা করতে হয়। তার পর যদি সেগুলি খুব মুখরোচক কিছু না হয়, তা হলে তো হয়েছে! কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, খেতে সুস্বাদু না হলেও এমন কিছু খাবার আছে, যেগুলি ছোট থেকে খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে পারলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যেতে পারে সেখান থেকেই।
এমন কোন কোন খাবার শিশুদের প্রতিদিন খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে?
১) দই
মিষ্টি দই হলে খাওয়ার কথা বলতে হয় না। কিন্তু টকদই খেতে গেলেই খুদেদের মুখ ব্যাজার হয়ে যায়। বাচ্চারা সাধারণত ওই ধরনের টক বা স্বাদহীন খাবার খেতে পছন্দ করে না। কিন্তু প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ এই খাবারটি শিশুদের অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। হজমে সহায়তা করে। তাই দু’দিন অন্তর পেটের ব্যথার জন্য স্কুল ছুটি নেওয়ার অজুহাত থেকে মুক্তি।
২) দানাশস্য
চিপস্, নাচোজ়, পপকর্ন ছেড়ে মুগ, রাজমা, বিভিন্ন সব্জির বীজ খেতে মোটেই তাদের ভাল লাগার কথা নয়। কিন্তু ফাইবার এবং বিভিন্ন খনিজে সমৃদ্ধ এই দানাশস্যগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
৩) ডিম
বেশির ভাগ শিশুই ডিম খেতে ভালবাসে। আবার অনেকেই ডিমের আঁশটে গন্ধ সহ্য করতে পারে না। অথচ বাড়ন্ত বয়সে শিশুদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম এবং বিভিন্ন খনিজের অভাব পূরণের জন্য চিকিৎসকরা প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়াতে বলেন।
৪) রাঙা আলু
তরকারিতে দিয়ে হোক বা মুখরোচক কোনও পদ, আলুর বদলে রাখার চেষ্টা করুন রাঙা বা মিষ্টি আলু। ফাইবার-সমৃদ্ধ এই আলু অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে। পাশাপাশি, আয়রনের পরিমাণও বাড়িয়ে তুলতে পারে মিষ্টি আলু।
দুধ খেতে পছন্দ করে এমন শিশু খুঁজে পাওয়াই ভার। ছবি: সংগৃহীত।
৫) দুধ
দুধ খেতে পছন্দ করে এমন শিশু খুঁজে পাওয়াই ভার। কিন্তু দুধের মতো পুষ্টিকর, সহজপাচ্য পানীয় আর দুটো নেই। ক্যালশিয়ামে ভরপুর দুধ, হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
৬) বাদাম এবং বিভিন্ন বীজ
বাদাম খেতে ভালবাসে না এমন বাচ্চার সংখ্যা খুবই কম। তবে সুস্বাস্থ্যের জন্য শুধু চিনে বাদাম নয় আখরোট, কাঠবাদাম, কাজু, পেস্তা— সব মিশিয়ে একমুঠো করে রোজ খাওয়াতে হবে। বয়ঃসন্ধির মুখে হরমোনের ভারসাম্যে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য খাওয়াতে পারেন কুমড়ো, সূর্যমুখী-সহ বিভিন্ন রকমের বীজ।
৭) বেরিজাতীয় ফল
বর্তমানে টাইপ-২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা দিন দিন বে়ড়ে চলেছে। খেলাধুলা না করা, প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত ভাজা খাবার বেশি খাওয়ার কারণে এই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। ছোট থেকে যদি সামান্য হলেও স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, মালবেরি, রাস্পবেরি— জাতীয় ফল খাওয়াতে পারেন, তা হলে হরমোনের সঙ্গে জড়িত অনেক সমস্যাই বশে থাকতে পারে।