ঋতুবন্ধের পর মহিলাদের ‘মেনোপজাল অস্টিয়োপোরসিস’-এর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। ছবি- প্রতীকী
বয়স বাড়লে ক্ষয় হয় হাড়ে। বাইরে থেকে হা়ড়ের যত্ন নেওয়া সহজ নয়। হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করতে গেলে প্রয়োজন বিশেষ যত্নের। হাড়ের প্রধান উপাদান ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস। এ ছাড়াও রয়েছে নানা ধরনের খনিজ পদার্থ।
বয়স বাড়লে হাড়ের ক্যালশিয়াম-সহ অন্যান্য উপাদান কমে যায়। হাড় পলকা হয়ে যায়। ফলে সামান্য চোট-আঘাতে তা ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে অস্টিয়োপোরসিস।
ঋতুবন্ধের পর মহিলাদের ‘মেনোপজাল অস্টিয়োপোরসিস’-এর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। তেমনটাই মনে করেন চিকিৎসকরা। হাড় ক্ষয়ের সমস্যা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে হলেও, একটি বয়সের পর থেকে মহিলাদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।
মেনোপজ বা ঋতুবন্ধের পর শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাব হলে হাড়ের ক্যালশিয়াম শোষণ কমতে থাকে। হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার এটাই মূল কারণ। প্রতি দিনের খাবারে পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম-সহ অন্যান্য খনিজের অভাব হলেও হাড়ের ক্ষয় হতে থাকে। বিশেষ করে যাঁরা নিরামিষ খাবার খান, পর্যাপ্ত পুষ্টির ঘাটতির কারণে তাঁদের হাড়ের সমস্যা বাড়ে। ক্রনিক কোনও অসুখের কারণেও হাড় দ্রুত ক্ষয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চেহারা হালকা হলে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে বেশি। আবার যাঁদের রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা অন্য কোনও ইনফ্লামেটরি অসুখ থাকে, তাঁদের নিয়ম করে ‘কর্টিকোস্টেরয়েড’ খেতে হয়। তাঁদের হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। যাঁদের তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে এই জাতীয় ওষুধ খেতে হচ্ছে, তাঁদের অস্টিয়োপোরসিস প্রতিরোধে ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়াম খাওয়া জরুরি।
হাড়ের ক্ষয় আটাকাতে ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের উপর জোর দেওয়ার কথা বলেছেন পুষ্টিবিদরা। ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে বলছেন পুষ্টিবিদরা। দুধ, দই, ছানা সবচেয়ে ভাল। এ ছাড়া, কিছু সবুজ শাকসব্জি আছে, যেগুলিতে ভরপুর ক্যালশিয়াম আছে, খেতে পারেন সেগুলিও। দুধে অ্যালার্জি থাকলে মাছ, মুরগির মাংস, ডিমও খাওয়া প্রয়োজন। ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ছাড়া আর কী ভাবে নেবেন হাড়ের যত্ন?
১) নিয়মিত হাঁটাহাঁটি, ব্যায়াম, যোগাসন করা অভ্যাস হাড়ের যত্ন নিতে সাহায্য করে। হাড়ের ক্ষয় হ্রাস করে।
২) হাড়ের যত্ন নিতে ক্যালশিয়ামের ভূমিকা অপরিহার্য। ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালশিয়াম শোষণে সাহায্য করে। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও অনেক ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন ডি-এর সর্বোত্তম উৎস হল রোদ। এ ছাড়াও দুগ্ধজাত দ্রব্য, বিভিন্ন মরসুমি ফল, মাছেও পেতে পারেন ভিটামিন ডি।
৩) নিয়মিত মদ্যপানের প্রবণতা শরীরে ক্যালশিয়াম শোষণের ক্ষমতা হ্রাস করে। দীর্ঘ দিন ধরে হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখতে ক্যালশিয়াম অপরিহার্য।