শরীর চাঙ্গা হবে যোগের গুণেই। ছবি: শাটারস্টক।
বর্ষা মানেই রোগের বাড়বাড়ন্ত। কারও জ্বর, কারও সর্দি-কাশি, কারও আবার পেটের গোলমাল লেগেই রয়েছে। বর্ষায় ঠান্ডা-গরম আবহাওয়া এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জীবাণু সহজেই বাড়তে পারে। আর্দ্র পরিবেশ, তাপমাত্রার তারতম্য— এ সবই ব্যাক্টেরিয়া এবং ছত্রাক তৈরির জন্য আদর্শ। মরসুমি সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার পর শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ছে। ক্লান্তি, একটুতেই হাঁপিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। সম্পূর্ণ ভাবে সু্স্থ হতে প্রয়োজন শরীরচর্চা। যে হেতু খুব কঠিন কোনও ব্যায়াম এখনই করা সম্ভব নয়, তাই সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পর ভরসা রাখতে পারেন যোগের উপর। কোন যোগাসনগুলি এই সময় করলে শরীর চাঙ্গা থাকবে, জেনে নিন।
মার্জারি আসন
চার হাত-পায়ের উপর ভর দিয়ে বসুন। হাত দুটো একদম কাঁধের নীচে থাকবে এবং হাঁটু দু’টো পশ্চাতের বরাবর। শ্বাস নিয়ে কাঁধ চওড়া করে মাথা নিচু করে শিরদাঁড়া প্রথমে গুটিয়ে নিন। তার পর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ঠিক উল্টো করে মাথা উপরের দিকে করে শিরদাঁড়া উল্টো দিকে মুড়ে নিন। এতে শিরদাঁড়ার ব্যায়াম হয় দারুণ। ৫ থেকে ২০ বার এই আসন করতে হবে।
হলাসন
বজ্রাসনের বসে বা হাঁটু মুড়ে তার উপর বসে হাত দু’টো উঁচুতে তুলে দিন। যতটা সম্ভব টানটান হয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে মাথা নিচু করে শুয়ে পড়ুন। এতে শরীর-মন দুই-ই শান্ত হবে। শরীরে জোর বাড়বে।
ভদ্রাসন
মাটিতে হাঁটু মুড়ে বসুন। তার পর দুই পায়ের পাতা সামনের দিকে জুড়ে দিন। দুই হাত দিয়ে দু’ পায়ের পাতা চেপে ধরে হাঁটু টান টান করে পা স্ট্রেচ করুন। পশ্চাৎ, হাঁটু এবং পায়ের হাড়ের জন্য এই আসন খুব উপকারী। গায়ে হাত পায়ে ব্যথা হলে এই আসন করলে উপকার পাওয়া যায়।
মার্জারি আসন। ছবি: সংগৃহীত।
ভুজঙ্গাসন
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। আপনার দু’টি পায়ের পাতা এবং কপাল যেন মাটিতে স্পর্শ করানো থাকে। পা দু’টি পাশাপাশি রাখুন যাতে গোড়ালি দুটি পরস্পরের স্পর্শে থাকে। এ বার হাতের পাতা দুটিকে উল্টো করে কাঁধের কাছে রাখুন। খেয়াল রাখবেন কনুই দুটি যেন সমান্তরাল থাকে। হাতের পাতার উপর ভর করে আপনার দেহের উপরের অংশটি সামনের দিকে তুলুন। কোমর তুলবেন না। দশ অবধি গুনে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন। তিন বার পর পর আসনটি করুন।
ধনুরাসন
পেট উপুড় করে শুয়ে পড়ুন। তার পর হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা যতখানি সম্ভব পিঠের উপর নিয়ে আসুন। এ বার হাত দুটো পিছনে নিয়ে গিয়ে গোড়ালির উপর শক্ত করে চেপে ধরুন। চেষ্টা করুন পা দুটো মাথার কাছাকাছি নিয়ে আসতে। এই ভঙ্গিতে মেঝে থেকে বুক হাঁটু ও ঊরু উঠে আসবে। তলপেট ও পেট মেঝেতে রেখে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। তার পর পূর্বের ভঙ্গিতে ফিরে যান। এই আসন বার তিনেক করতে পারেন।