স্লিপ অ্যাপনিয়ার উপসর্গ কী? ছবি: শাটারস্টক।
ঘুমের ঘোরে নাক ডাকেন, এমন লোকের খোঁজ ঘরে ঘরেই মেলে। কেউ ব্যাপরটা স্বীকার করেন, কেউ আবার বেমালুম অস্বীকার করে যান! চিকিৎসকদের মতে, জীবনযাপনে ব্যাপক অনিয়ম ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ফলে ঘুমের ঘোরে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। নাক ডাকার কারণ হিসাবে অনেকের ক্ষেত্রেই চিকিৎসকেরা ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’-কে দায়ী করছেন।
ঘুমের মধ্যে শ্বাস নিতে না পারার সমস্যাই হল স্লিপ অ্যাপনিয়া। ওজন খুব বেশি হয়ে গেলে ঘুমোনোর সময়ে শ্বাসনালির উপর বেশি চাপ পড়ে ও শ্বাসপ্রক্রিয়া বাধা পায়। এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক ও শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ হঠাৎই অনেকটা কমে যায়। ফলে স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রভাবে আকস্মিক শ্বাসপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে মৃত্যু হতে পারে।
অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপানের কারণেও এই অসুখের ঝুঁকি বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিসের মতো রোগ থাকলেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। কী ভাবে বুঝবেন, আপনি স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত?
১) অতিরিক্ত নাক ডাকাই স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রধান উপসর্গ। হালকা নয়, এই রোগে আক্রান্ত হলে নাক ডাকার তীব্রতা প্রবল হয়।
২) ঘুম থেকে ওঠার পর গলা খুব বেশি শুকিয়ে আসে? এটিও কিন্তু স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ। এই রোগে আক্রান্ত হলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। তাই মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়। ফলে গলা শুকিয়ে আসে। শ্বাসেও দুর্গন্ধও হয়।
৩) সারা ক্ষণ ক্লান্ত লাগা, ঘুম ঘুম ভাব, ঝিমুনি, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ হতে পারে। রাতে ঘন ঘন দুঃস্বপ্ন দেখাও কিন্তু স্লিপ অ্যাপনিয়ার উপসর্গ হতে পারে।
স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগলে ঘুম একেবারেই ঠিকঠাক হয় না। ছবি: সংগৃহীত।
৪) ঘুম থেকে উঠেই প্রবল মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়? মাথা ঘোরায়? নিয়মিত এমনটা হলেই সতর্ক হোন। স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হলে ঘুমোনোর সময়ে শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ ঠিক মতো হয় না। তাই মাথা যন্ত্রণা হওয়া স্বাভাবিক।
৫) স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগলে ঘুম একেবারেই ঠিকঠাক হয় না। ঘুমের ঘাটতির কারণে মেজাজ বিগড়ে যাওয়া, সঙ্গমে অনীহার মতো সমস্যাও দেখা যায়।
স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটে ঘুমের মাঝে মৃত্যুর আশঙ্কাও বেড়ে যায়। তাই স্লিপ অ্যাপনিয়ার উপসর্গ দেখা দিলেই সতর্ক হোন। এই প্রকার কোনও উপসর্গ দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। খাওয়ার পর খানিক ক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন। নিয়মিত যোগব্যায়াম ও শরীরচর্চা করাও প্রয়োজন। চিত হয়ে শোয়ার অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে। পাশ ফিরে শোয়ার অভ্যাস করুন।