দীর্ঘ দিনের অবসাদ শরীরে কর্টিজল হরমোনের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে তোলে। ছবি- সংগৃহীত
সকাল থেকে যোগ আসন, দৌড়াদৌড়ি, প্রাণায়াম, কিছু করেই ওজন কমাতে পারছেন না। বাইরে খাওয়া বন্ধ করেছেন। টানা ছ’মাস পছন্দের বিরিয়ানি পর্যন্ত মুখে তোলেননি। কিন্তু সে কথা আপনার পুষ্টিবিদ বিশ্বাসই করছেন না। কারণ, ওজনে এ সবের এতটুকু ছাপও পড়েনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু শরীরচর্চা বা ডায়েট নয়, ওজন বাড়ার পিছনে আরও অনেক শারীরবৃত্তীয় জটিলতা কাজ করে। তার মধ্যে অন্যতম হল হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়া।
কিন্তু হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয় কেন?
কাজের চাপ, উদ্বেগ, দীর্ঘ দিন ধরে চলা মানসিক অবসাদ যে কোনও বয়সের মহিলা বা পুরুষের হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে পারে। এর সঙ্গে শারীরিক কসরত বা ডায়েটের কোনও সংযোগ নেই। মানসিক চাপ নিয়ে, ডায়েট বা শরীরচর্চা করেও ওজনে যে কোনও হেরফের হয় না, তা বলছে হালের গবেষণা।
মানসিক অবসাদ কী ভাবে দেহের ওজনের উপর প্রভাব ফেলে?
১) দীর্ঘ দিনের অবসাদ শরীরে কর্টিজল হরমোনের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে তোলে। এই অতিরিক্ত কর্টিজল আবার অ্যান্টি-ডিউরেটিক হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে। এই ‘এডিএইচ’ হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে বিভিন্ন জল জমতে থাকে। তাই ওজন কমতে চায় না সহজে।
শরীরে জমতে থাকা এই বাড়তি শর্করাই একটি সময়ে মেদে পরিণত হয়। ছবি- সংগৃহীত
২) আবার এই কর্টিজল হরমোনই কিন্তু থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বিঘ্নিত করে। যার প্রভাব গিয়ে পড়ে আপনার বিপাক হারের উপর। তাই খাবার যতই কম খান ওজন মোটেও কমতে চায় না।
৩) বাড়তি কর্টিজলের প্রভাবে শরীরে বিভিন্ন খনিজের ঘাটতি দেখা যায়। বিশেষ করে শরীর থেকে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম কমে গেলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় থাকে না। ইনসুলিনের মাত্রা বিঘ্নিত হলেও শরীরে মেদ জমে।
৪) শরীরে জমতে থাকা এই বাড়তি শর্করাই একটি সময়ে মেদে পরিণত হয়। এই মেদ কিন্তু সহজে ঝরতে চায় না।
৫) কর্টিজল হরমোন আবার প্রোজেস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। অর্থাৎ, শরীরে ইস্ট্রোজেন তার প্রভাব খাটাতে শুরু করে। শরীরে অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন মেদ জমার ক্ষেত্রে অনুঘটকের মতো কাজ করে।