ঝাল বা মশলাদার খাবার আলসারের জন্য দায়ী নয়। ছবি: সংগৃহীত
অনেক সময় আমাদের খাবারে অরুচি আসে। কিছু খেলেই যেন পেটে জ্বালা করে। এমনটা হলে কিন্তু অবহেলা করবেন না। হতেই পারে, এই উপসর্গ পেটে আলসারের প্রাথমিক লক্ষণ। ‘আলসার’ কথার অর্থ ‘ক্ষত’। এই ক্ষত পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে হতে পারে এবং তা থেকে পরবর্তীকালে জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। খাদ্যনালীতে অধিক মাত্রায় অ্যাসিড উৎপন্ন হলে এই রোগ হয়। তা ছাড়া ‘এইচ পাইলোরি’ নামক একটি ব্যাক্টেরিয়া থেকেও সংক্রমণ হয়। এই সংক্রমণের ফলে ক্ষুদ্রান্ত্রের ভিতরে আলসার দেখা দিতে পারে। এই আলসার থেকে কিন্তু পরবর্তীকালে হতে পারে গুরুতর সমস্যা। তাই আলসার সম্পর্কে সচেতন হন শুরু থেকেই। জেনে নিন আলসারের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ।
১) যদি প্রায়শই পেটের উপরের ও মাঝের দিকে জ্বালা করে, কামড়ে ধরা ব্যথা হয় তবে সতর্ক হতে হবে।
২) গ্যাসট্রিক আলসারের ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার দু’তিন ঘণ্টা পর পেটে ব্যথা বাড়ে। খাবার খাওয়ার পর যদি এমনটা প্রায়ই ঘটে, তা হলে তা আলসারের লক্ষণ হতে পারে।
৩) খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পেটে ব্যথা বাড়লেও আপনার আলসার হয়ে থাকতে পারে। অনেক সময় দীর্ঘ ক্ষণ খালি পেটে থাকলে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয়।
প্রতীকী ছবি
৪) বুক জ্বালা করলে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অম্বলের সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যাই। ঘন ঘন এমনটা হলে কিন্তু তা আলসারের লক্ষণ।
৫) সারা ক্ষণ গা গোলানো, বমি-বমি ভাবের সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই আলসার হয়েছে কি না, পরীক্ষা করিয়ে নিন।
পরিপাকতন্ত্রের আলসার কিন্তু প্রাণঘাতী হতে পারে। এই রোগের কারণে খাদ্যথলি বা খাদ্যনালীতে রক্তক্ষরণও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বমি কিংবা মলের সঙ্গে রক্ত বেরিয়ে আসে। এই রোগে বাড়াবাড়ি হলে খাদ্যথলি ফুটো হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসা না করিয়ে ফেলে রাখলে এই আলসার থেকে সহজে মুক্তি মেলে না। এবং বেশি বাড়াবাড়ি হলে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
অনেকেরই ধারণা ঝাল, তেল, মশলাদার খাবার খেলেই আলসার হতে পারে। এই ধারণা কিন্তু ভুল। ঝাল বা মশলাদার খাবার আলসারের জন্য দায়ী নয়। তবে এই খাবার রোগের তীব্রতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে। ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস পরিপাকতন্ত্রে আলসারের সম্ভাবনা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। কর্মব্যস্ত জীবনে কাজের চাপে আমরা খেতেও ভুলে যাই। দীর্ঘ ক্ষণ খালি পেটে থাকলেও আলসারের ঝুঁকি বাড়ে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথা উপশম করার ওষুধ খাওয়া বন্ধ করুন। ঘন ঘন ব্যথার ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস কিন্তু পেটের মধ্যে এই মারণ রোগ ডেকে আনছে।