৬০-এর পরেও ওজন ঝরানোো সম্ভব। ছবি: সংগৃহীত।
একটা বয়সের পর শরীরের বিপাকহার তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কমে যায়। তাই ঝট করে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ওজন বেশি হয়ে গেলে পায়ের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। গাঁটে গাঁটে শুরু হয় যন্ত্রণা। এ ছাড়াও বাড়তি ওজন কোলেস্টেরল, হৃদ্রোগ, ডায়াবিটিস এবং কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেক। সেই কারণেই বয়স ৬০ পেরিয়ে গেলেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি।
একটা বয়সের পর গিয়ে ওজন কমানোর আশা প্রায় ছেড়েই দেন মানুষ। ২০, ৩০, ৪০-এর ঘরে যাঁদের বয়স, তাঁরা যত সহজে ওজন ঝরিয়ে ফেলতে পারেন, ৬০-এর পর সেটা যথেষ্ট মুশকিল হয়ে যায়। কারণ খুব বেশি মাত্রায় পরিশ্রম করে ওজন ঝরিয়ে ফেলা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার এমন ব্যায়াম করাও যায় না, যা হাড়ের উপর চাপ ফেলবে। কিন্তু জেনে রাখা ভাল যে ৬০-এর পরেও ওজন ঝরানো সম্ভব। এবং কিছু সহজ ব্যায়াম এই বয়সে নিরাপদও বটে। জেনে নিন সেগুলি কী।
১) হাঁটা: একটা বয়সের পর হঠাৎ দৌড়োলে হাড়ের সংযোগস্থলে চাপ পড়তে পারে। চোট পাওয়া বা কোনও দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। কিন্তু হাঁটা তুলনামূলক ভাবে নিরাপদ। বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাঁটাই হল সবচেয়ে ভাল কার্ডিয়ো ব্যায়াম। প্রত্যেক দিন আধ ঘণ্টা হাঁটলেই ডায়াবিটিস থেকে কোলেস্টেরল, সব রোগের ঝুঁকি কমবে।
২) পিলাটেস: কোনও চোট পেলে, তা সারিয়ে তোলার সবচেয়ে ভাল উপায় পিলাটেস। বয়স্কদের হাড় সুস্থ রাখতে, হাঁটাচলার ধরন ঠিক রাখতে, শরীর নমনীয় করতে পালাটেসের জুড়ি মেলা ভার। নিয়মিত পিলাটেস করলে শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ে এবং ঘাড়ে-পিঠে ব্যথা হওয়ার মতো সমস্যাও কমে। যন্ত্রপাতির আধিক্য নয়, কেবল স্ট্রেচিংয়ের উপর জোর দেওয়া হয় এই বিশেষ পদ্ধতিতে। তবে বাড়িতে একা এক নয়, প্রশিক্ষকের নজরদারিতেই এই ধরনের ব্যায়াম করতে হবে।
৩) বডিওয়েট ওয়ার্কআউট: খুব ভারী ওজন তোলার ক্ষমতা একটা বয়সের পর কমে যেতেই পারে। কিন্তু বডিওয়েট ওয়ার্কআউট নিশ্চিন্তে আপনি নিশ্চিন্তে করতে পারেন। স্কোয়্যাট, লাঞ্জেস বা ক্রাঞ্চেস করতে পারেন নিয়মিত। তবে অবশ্যই প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে তবেই শুরু করবেন।
ডায়েটের উপর বাড়তি নজর দিতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।
৪) ডায়েটে নজর: এই সময়ে ডায়েটের উপর বাড়তি নজর দিতে হবে। প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ডায়েটে বেশি রাখতে হবে। চিনি ও ফ্যাটজাতীয় খাবার ডায়েটে যত কম রাখবেন, ততই ভাল।
৫) পর্যাপ্ত ঘুম: ওজন ঝরাতে হলে দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমোতে হবে। ঘুম পর্যাপ্ত হলে তবেই বিপাকক্রিয়া বাড়বে আর তাতেই ওজন বাগে রাখা সম্ভব।
বেশি বয়সে ওজন খুব দ্রুত কমে গেলে মুশকিল! এই সময়ে ওজন ধীরে ধীরে কমানোই শ্রেয়। অনেক সময়ে নানা রকম চেষ্টা করেও ওজন ঝরানো সম্ভব হয় না, সে ক্ষেত্রে হতাশ হলে চলবে না, লেগে থাকতে হবে। শরীরে কোনও রকম ক্রনিক সমস্যা থাকলে কিংবা হাঁটুর ব্যথা থাকলে ব্যায়াম করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।