দিনের নির্দিষ্ট সময় উপোস করেও ওজন কমছে না কেন? ছবি: শাটারস্টক
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে জন্য কেবল শরীরচর্চা করলেই চলবে না, সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়াতেও রাশ টানতে হবে। চটজলদি ওজন ঝরাতে ইদানীং অনেক তারকাই এখন ভরসা রাখছেন ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ ডায়েটের উপর। এই ডায়েটে খাবারের ক্ষেত্রে তেমন কড়া বিধি-নিষেধ থাকে না। এই ডায়েটে দিনে ছয় থেকে আট ঘণ্টার মধ্যেই প্রয়োজনীয় খাবার খেয়ে ফেলতে হয়। আর বাকি সময়টা অর্থাৎ, ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা উপোস করেই কাটাতে হয়।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে সঠিক কায়দায় ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ মেনে চললে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, কোলেস্টেরল হ্রাস পায় এবং শরীরও চাঙ্গা থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার খেলে বিপাক হারও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে ক্যালোরিও কম যায় শরীরে। এই ডায়েটের ফলে মেদ ঝরে দ্রুত।
তবে এই ডায়েট মেনে চললেও অনেকের ওজন কমতে চায় না। কেন জানেন?
১) এই ডায়েটে খাদ্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে খুব বেশি বিধিনিষেধ থাকে না। তাই অনেকেই এই ডায়েট চলাকালীন অস্বাস্থ্যকর খাবারও খেয়ে নেন। এতে কিন্তু ডায়েট করেও কোনও লাভ হবে না। এই ক্ষেত্রেও কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস মেনে চলতে হবে। এই ডায়েট চলাকালীন প্রচুর শাকসব্জি, মাছ-মাংস এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তবে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়। আপনি যতটা পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করছেন সেই পরিমাণ ক্যালোরি খরচ হচ্ছে কি না সেটাও লক্ষ রাখা যে কোনও ডায়েটের ক্ষেত্রেই ভীষণ জরুরি।
২) অনেকেই ধারণা, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাবার সারতে পারলেই বুঝি এই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করা হয়। এই ডায়েট কিন্তু অনেক ধরনের হয়। এই ডায়েট করার সময় পুষ্টিবিদরা অনেককেই দিনে কেবল এক বার খাওয়ার পরামর্শ দেন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার ঠিক কত ঘণ্টা অন্তর কতটা পরিমাণ খাবার খাবেন তা-ও বেঁধে দেওয়া হয়। তাই আপনার শরীরের জন্য ঠিক কোন প্রকার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর প্রয়োজন, তা পুষ্টিবিদদের কাছে জেনে নেওয়াই ভাল।
অনেকেই ধারণা, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাবার সারতে পারলেই বুঝি এই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত।
৩) যে কোনও ডায়েট করলে শুরুর দিকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। এই সমস্যার জেরে অনেকেই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ দীর্ঘ দিন চালিয়ে যেতে পারেন না। ফলে ওজন ঝরানোর স্বপ্ন অধরাই থাকে যায়। এই সমস্যা এড়াতে প্রচুর জল খেতে হবে আর ডায়েটে যেন পর্যাপ্ত মাত্রায় ফাইবার থকে সে দিকে নজর রাখতে হবে।
৪) এই ডায়েটে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খেয়ে ফেলতে হয়। তবে সেই সময় খাওয়াদাওয়ায় ফাঁকি দিলে কিন্তু চলবে না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অল্প অল্প করে বেশি বার খাওয়ার খাওয়ার চেষ্টা করুন, তখন কিন্তু খালি পেটে থাকলে চলবে না।
৫) খাবারের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবারের সঠিক ভারসাম্য রাখা ভীষণ জরুরি। সুষম খাদ্য না খেলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন, সখন কিন্তু খুব বেশি দিন এই ডায়েট চালাতে পারবেন না।