কোনও কারণ ছাড়াই ওজন হু হু করে কমতে থাকলে, অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ছবি: সংগৃহীত
সুস্থ থাকতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই বিভিন্ন নিয়ম, বিধিনিষেধ মেনে চলেন। রোজ জিমে যান। নিয়ম মেনে পরিমিত খাওয়াদাওয়া করেন। দৌড়ঝাঁপ, হাঁটাহাঁটি, যোগাসন, প্রাণায়াম তো আছেই। অনেক চেষ্টা ও পরিশ্রম করে কমাতে হয় ওজন। কিন্তু অনেক সময়ে দেখা যায় কোনও রকম পরিশ্রম ছাড়াই শরীরের ওজন কমে যাচ্ছে। অনিচ্ছাকৃত এই ওজন হ্রাস কিন্তু শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। কোনও কারণ ছাড়াই ওজন হু হু করে কমতে থাকলে, অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বয়স, খাদ্যের ধরন, শারীরিক পরিস্থিতির উপর এক জনের ওজন নির্ভর করে। ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে যদি শরীরের ওজন কোনও চেষ্টা ছাড়াই ৫ কেজি মতো কমে যায়, তা হলে বুঝতে হবে শরীরের অন্দরে কোনও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
কী কী কারণে এই অনিচ্ছাকৃত ওজন হ্রাস হতে পারে?
১) ডায়াবিটিস: রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে কমতে পারে ওজন। ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে ওজন কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ডায়াবিটিস মানে রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে যাওয়া। ইনসুলিনের অভাবে শরীরে কোষগুলি নিজেদের সচল ও শক্তিশালী রাখতে পেশী ও চর্বির সাহায্য নেয়। ফলে শরীরের সামগ্রিক ওজন হ্রাস পায়।
অনিচ্ছাকৃত এই ওজন হ্রাস কিন্তু শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। ছবি: সংগৃহীত
2) মানসিক চাপ: ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বা কাজের প্রবল চাপ— মানসিক উদ্বেগ, চাপের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্ট্রেস হরমোন বিপাক হারের উপর প্রভাব ফেলে। বিপাক ক্রিয়া আবার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বিপাক ক্রিয়ার অস্বাভাবাবিকতায় বাড়তে পারে ওজন।
3) হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা: হৃদ্যন্ত্রের কোনও জটিলতা থাকলে শরীরে পেশী, চর্বি, হাড়-সহ প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসের অপচয় ঘটে। ফলে শরীরের ওজন কমতে থাকে।
4) ক্যানসার: ক্যানসারে প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম হল ওজন কমে যাওয়া। ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে ৪০ শতাংশ রোগীর ওজন হ্রাস পেতে দেখা যায়। বিশেষ করে খাদ্যনালী, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রের ওজন হ্রাস পাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
5) ডিমেনশিয়া: ওজন কমার সঙ্গে ডিমেনশিয়ার একটি যোগসূত্র আছে। ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত মানে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়া। এর প্রভাব পড়ে খাওয়াদাওয়াতেও। সঠিক সময়ে ও পরিমাণে খাওয়ার কথা মনে থাকে না। দীর্ঘ দিন ধরে এমন অনিয়ম চললে স্বাভাবিক ভাবে ওজন কমবে। এ ছাড়াও ডিমেনশিয়ার ওষুধের প্রভাবেও হ্রাস পেতে পারে ওজন।