মুখে অতিরিক্ত রোম কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে? ছবি: শাটারস্টক।
মেয়েদের মুখভর্তি রোম হলেই তা অনেকের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ঘন রোম কেবল সৌন্দর্যের অন্তরায় হয় এমনটা নয়, এই সমস্যা পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে জটিল রোগও। মহিলাদের শরীরে এই রোমের আধিক্যকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘হারসুটিজ়ম’ বলা হয়। এতে চিবুক, ঠোঁটের উপরের অংশে, গালের পাশে, পিঠ, বুক ইত্যাদি স্থানে অতিরিক্ত ঘন রোম গজাতে শুরু করে। মূলত পুরুষ হরমোন তথা অ্যান্ড্রোজেনের আধিক্যের ফলেই এমনটা ঘটে।
কেন হয় হারসুটিজ়ম?
জন্মগত: কারও কারও ক্ষেত্রে হারসুটিজ়ম জিনগত কারণে হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে কোনও কারণ ছাড়াও এই অবস্থা দেখা যায়।
ওষুধের প্রভাব ও ওবেসিটি: চিকিৎসকেদের মতে অনেক সময় স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে হারসুটিজ়ম দেখা যায়। ওবেসিটির সমস্যা থাকলেও হারসুটিজ়ম দেখা দিতে পারে শরীরে।
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) এবং পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজ়িজ় (পিসিওডি)— দু’টি ক্ষেত্রেই শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ফলে, অ্যান্ড্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। একটি সময়ের পর থেকে মেয়ের শরীরের দু’টি ডিম্বাশয় বা ওভারি থেকে প্রতি মাসে ডিম্বাণু বেরোতে থাকে। পিসিওডি-র ক্ষেত্রে ওভারি সাধারণত অপরিণত কিংবা আংশিক পরিণত ডিম্বাণুতে ভরে যায়। ফলে পরবর্তী সময়ে তা জমে জমে সিস্টে পরিণত হয়। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয় বলেই পিসিওএস ও পিসিওডি রোগ থাকলে মহিলাদের শরীরে রোমের আধিক্য দেখা দিতে পারে।
কুশিং সিনড্রোম: এটিও হরমোনঘটিত অসুখ। শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে গেলে এই রোগ হয়। এই রোগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হারসুটিজ়ম দেখা যায়।
কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়া: অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় কর্টিসল ও অ্যান্ড্রোজেন হরমোন নিঃসরণ হলে এই সমস্যা হয়। অনেক সময়ে টিউমরের ফলেও এটি হয়।