ছ’মাস টানা স্তন্যপান করালে মায়ের গর্ভাবস্থার বাড়তি ফ্যাট ঝরে তাড়াতাড়ি। ছবি: শাটারস্টক
মায়ের দুধের চেয়ে বাজারচলতি কৃত্রিম দুধের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। স্তন্যপান করালে ওজন বেড়ে যাবে! ফিগারও নষ্ট হবে। এমন ধারণা রাখেন কেউ কেউ। অথচ চিকিৎসকেরা সব সময়েই বুঝিয়ে এসেছেন, বাস্তবটা উল্টো। জন্মের পরে প্রথম ছ’মাস শুধু স্তন্যপান করালেই শিশু যথাযথ পুষ্টি পায়। বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। মায়ের ওজন বাড়ে না। বরং ফ্যাট ঝরে অনেক তাড়াতাড়ি।
স্তন্যপান করানো নিয়ে অনেকেই অনেক রকম ভুল ধারণা রাখেন। ছ’মাস শুধুমাত্র স্তন্যপানে শিশুর সঠিক পুষ্টির পাশাপাশি জ্বর-সর্দিকাশি, পেটের গন্ডগোল, হাঁপানি, ত্বকের সমস্যা জাতীয় রোগে শিশুর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। ছ’মাস টানা স্তন্যপান করালে মায়ের গর্ভাবস্থার বাড়তি ফ্যাটও ঝরে তাড়াতাড়ি। শারীরিক গঠনও ঠিক থাকে। তাই মায়েদের মনে শিশুকে স্তন্য খাওয়ানো নিয়ে কোনও ভুল ধারণা থাকলেই মুশকিল। জেনে নিন, স্তন্যপান করানো নিয়ে কী কী ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে অনেকের মনে।
১) প্রথম প্রথম স্তন্য আসতে সময় লাগে
এই ধারণা কিন্তু ঠিক নয়। সাাধারণত প্রসবের পর তৃতীয় দিন থেকে দুধে উৎপাদন বেশি হয় মায়ের শরীরে। কিন্তু প্রথম দিনে যে মাত্রায় দুধ উৎপাদন হয়, তা-ই শিশুকে খাওয়ানো উচিত। এতে থাকা কোলোস্ট্রাম শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ জরুরি।
২) মা বেশি করে খেলেই বেশি দুধ উৎপাদন হয়
প্রসবের পর শারীরিক সুস্থতার জন্য মেয়েদের সঠিক খাওয়াদাওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু মহিলাদের দুধ উৎপাদনের সঙ্গে তাঁর খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে তেমন কোনও সম্পর্ক নেই। শিশুর চাহিদার উপর কতখানি দুধ উৎপাদন হবে তা নির্ভর করবে।
ঘন ঘন স্তনবৃন্ত পরিষ্কার করলে সেই অঞ্চল শুষ্ক হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত।
৩) স্তন্যপান করানোর আগে স্তনবৃন্ত পরিষ্কার করা উচিত
ঘন ঘন স্তনবৃন্ত পরিষ্কার করলে সেই অঞ্চল শুষ্ক হয়ে যায়। বেশি শুষ্ক হয়ে গেলে সেই এলাকায় র্যাশ, ফুসকুড়ির সমস্যা দেখা যায়। ওই অঞ্চলের আর্দ্রভাব থাকাই শ্রেয়।
৪) মায়ের সংক্রমণ হলে স্তন্য খাওয়ানো উচিত নয়
এই ধারণাও ভুল। কোনও মা যদি সর্দিকাশির সমস্যায় ভোগেন, তা হলে তাঁর শরীর সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে। সেই অ্যান্টিবডি স্তন্যের মাধ্যমে শিশুর শরীরে ঢুকলে তারও রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে।
৫) স্তন্য খাওয়ালে স্তনের আকার বাড়ে
শিশু বেশি স্তন্যপান মায়ের স্তনের আকার বাড়ে, এই ধারণা ভুল। পুরোটাই নির্ভর করে জিন ও শরীরের গঠনের উপর।