সকালে নির্দিষ্ট সময় ঘুম ভাঙাও ভাল ঘুমের লক্ষণ। ছবি: শাটারস্টক।
রোজ সকালেই কি ঘুম থেকে উঠতে আপনাকে বেশ কসরত করতে হয়? যতই আগে ঘুমোতে যান, মনে হয় ঠিক যেন সম্পূর্ণ হয়নি ঘুম? অগত্যা অফিসে পৌঁছতে রোজ দেরি। আমরা মনে করি, ঘুম ভাল হওয়ার জন্য বা সকালে তরতাজা বোধ করার জন্য রাতে বেশিক্ষণ ঘুমনো প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আসল ব্যাপারটা কিন্তু মোটেও তা নয়। কতক্ষণ ঘুমোচ্ছেন, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ স্লিপ সাইকেল। সেই স্লিপ সাইকেলের উপরই নির্ভর করে সব কিছু। আপনি টিভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ুন বা নিয়ম মেনে ধ্যান করে ঘুমোতে যান, আপনার শরীর এই স্লিপ সাইকেল মেনেই চলবে। শুধু তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়া মানেই কিন্তু রাতে ভাল ঘুম হওয়া নয়। সকালে নির্দিষ্ট সময় ঘুম ভাঙাও ভাল ঘুমের লক্ষণ। আমাদের রোজকার কিছু অভ্যাস সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে বাধা দেয়। জেনে নিন রোজ কার কোন কোন ভুলের কারণে এমনটা হয়।
১) রাতে ভারী খাবার: রাতে ডাল, রাজমা, তরকার মতো দানাশস্য খেলে তা হজম হতে অনেক বেশি সময় নেয়। খেয়েই বিছানায় চলে যাওয়ার অভ্যাস আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে আরও ব্যহত করে। রাতে ভারী খাবার খেলে শরীরের অতিরিক্ত সময় চাই তা হজম করতে। সে ক্ষেত্রে বেশিক্ষণের ঘুম প্রয়োজন। বদলে রাতে সব্জি, স্যুপের মতো হালকা খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। তাই সকালে ঘুমও ভাঙে তাড়াতাড়ি।
২) রাতের দিকে চা-কফি খাওয়া: সন্ধ্যাবেলা কিংবা রাতেও চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। কাপের পর কাপে চুমুক না দিলে আড্ডা জমে না, কাজে মন বসে না এমন কথাও অনেকে বলেন। চা-কফিতে থাকা ক্যাফিন ঘুম আসতে বাধা দেয়। তাই রাতে দীর্ঘ ক্ষণ রাত জাগতে হয় আমাদের। সন্ধ্যার পর কোনও পানীয় খেতে মন চাইলে সাধারণ দুধ চা কিংবা কফির বদলে ভেষজ চা খেতে পারেন, এতে ঘুম ভাল হয়।
রাতে খাওয়ার পর মিষ্টি খেলে শরীরের শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। ছবি: শাটারস্টক।
৩) রাতে মিষ্টি খাওয়া: রাতে খাওয়াদাওয়ার পর মিষ্টি না খেলে চলে না, এমন অনেকেই আছেন। রাতে খাওয়ার পর মিষ্টি খেলে শরীরের শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। ফলে যখন শরীর ঘুমোনোর প্রস্তুতি নিতে শরু করে সেই সময় শরীর আরও বেশি চাঙ্গা অনুভব করে। ফলে রাতে ঘুম আসতে দেরি হয়।
৪) সন্ধ্যার পর বেশি জল খাওয়া: জল শরীরের পক্ষে ভীষণ জরুরি। তবে সন্ধ্যার পর থেকে বেশি করে জল খেলে রাতে প্রস্রাবের জন্য বার বার উঠতে হয়। তাই ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। পরের দিন উঠতেও দেরি হয়। তাই সকালবেলা জলের মাত্রা বাড়িয়ে সন্ধ্যার পর থেকে কমিয়ে দেওয়াই ভাল।