কিছু ক্ষেত্রে বুকে কফ বসে এমন পরিস্থিতি হয় যে রীতিমতো শ্বাসকষ্ট হতে শুরু করে। ছবি- সংগৃহীত
গরমে তীব্র কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে ঘামে ভেজা জামা পরেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে গিয়ে গা এলিয়ে বসে পড়ছেন। দিনের পর দিন সেই ঘাম গায়ে শুকিয়ে, বুকে সর্দি বসছে। সারা ক্ষণ খুসখুসে কাশি হয়েই চলেছে। রাতে শোয়ার সময় সারা ক্ষণ গলায় কী যেন সুড়সুড় করছে। চিকিৎসকদের মতে, আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ে এই সমস্যা যেমন কষ্ট দেয়, তেমনই গরমে ঘাম থেকেও বুকে সর্দি বসতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে বুকে কফ বসে এমন পরিস্থিতি হয় যে রীতিমতো শ্বাসকষ্ট হতে শুরু করে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই কাফ সিরাপ খেয়ে থাকেন। এই ধরনের ওষুধে সাময়িক আরাম মিললেও তা বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয় না। তাই ওষুধের পাশাপাশি ভরসা করা যেতে পারে ঘরোয়া কিছু টোটকার উপর।
১) আদা চা
গলায় খুসখুসে ভাব দূর করতে আদা চা দারুণ কাজ করে। ২ কাপ জলে কিছুটা আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে এর সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলেই গলার খুসখুসে ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আদা-মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান গলার গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া কমায় এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি আদা দিয়ে জল ফুটিয়ে, সেই জল দিয়ে গার্গল করতে পারলেও উপকার মিলবে। গার্গল করার আধ ঘণ্টা আগে ও পরে কোনও খাবার খাবেন না এবং কথা কম বলবেন। তা হলে অবশ্যই উপকার মিলবে।
২) মধু
শুকনো কাশিতে মধু উপকারী। ছোট থেকে বড়, সকলের জন্যই কার্যকর এটি। এক টেবিল চামচ মধু সারা দিনে তিন থেকে চার বার খেতে পারেন। মধু শুধুও খেতে পারেন, আবার কখনও হালকা গরম জল কিংবা চায়ের সঙ্গে মিশিয়েও মধু খাওয়া যেতে পারে।
৩) রসুন
রসুনে অ্যালিসিন নামে একটি যৌগ থাকে, যা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল হিসাবে পরিচিত। রসুন চিবিয়ে খেলে অ্যালিসিন সক্রিয় হয়। এগুলি শ্বেত রক্তকণিকার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, ফলে সাধারণ সর্দি-কাশি যে ভাইরাসের জন্য হয়, সেগুলির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। তাই প্রতিদিন একটি করে রসুনের কোয়া খেতে পারলে সর্দিকাশি থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
দিনে দুই থেকে তিন বার এই স্টিম বা ভেপার নিতে পারলে খুসখুসে কাশি থেকে আরাম মিলবে। ছবি- সংগৃহীত
৪) গরম জলের বাষ্প
চলতি ভাষায় একে বলে ‘ভাপ নেওয়া’। গরম জল থেকে যে স্টিম বা বাষ্প ওঠে, সেটা যদি নাক দিয়ে টেনে নিতে পারেন তা হলে উপকার পাবেন। অনেকে এই গরম জলে বিভিন্ন ওষুধ ফেলেও তার পর স্টিম নেন। দিনে দুই থেকে তিন বার এই স্টিম বা ভেপার নিতে পারলে খুসখুসে কাশি থেকে আরাম মিলবে।
৫) দুধ-হলুদ
হলুদের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ লবণ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লোহা প্রভৃতি যৌগ। তাই হলুদ খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শুকনো কাশির জন্য হলুদ খুব কার্যকরী। এক কাপ দুধের মধ্যে ১ চা চামচ হলুদ মিশিয়ে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে খেতে পারেন। শুকনো কাশি কমাতে হলে হলুদের রস খেয়ে নিন কয়েক চামচ।