ঘুমের মধ্যে বোবায় ধরে কেন? ছবি- সংগৃহীত
প্রায়শই কি রাতে ঘুম ভেঙে যায়? মনে হয় কেউ যেন শরীরের উপর কিছু চাপিয়ে দিয়েছে? হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে? ডাক্তারি ভাষায় একে বলে স্লিপ প্যারালাইসিস বা ঘুমের মধ্যে পক্ষাঘাত। স্লিপ প্যারালিসিস এমন একটি অবস্থা যেখানে ব্যক্তির শরীর কিছু ক্ষণের জন্য অবশ হয়ে যায়। নড়াচড়া তো দূর, কাউকে যে ডাকবেন সেই উপায়ও থাকে না। তবে কিছু সময় পর এই পরিস্থিতি নিজে থেকেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। এই সময় রোগীর মনে নানা উদ্বেগ তৈরি হয়। কেন এমন হচ্ছে ভেবে ভয় অনেকে পেয়ে যান। চলতি ভাষায় একে বলে বোবায় ধরা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কমবয়সি বিশেষত ২২-৩৫ বছরের মানুষদের মধ্যে এই সমস্যা লক্ষ্য করা যায়।
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা বা এনএইচএস-এর চিকিৎসকেরা স্লিপ প্যারালাইসিস হওয়ার পিছনে কয়েকটি কারণকে নির্দেশ করেছেন। ২০১১ সালে ‘পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি’-র একটি গবেষণা বলছে, বিশ্বের ৭.৬ শতাংশ মানুষ স্লিপ প্যারালিসিসে ভোগেন। বিষণ্ণতায় ভোগা ব্যক্তিদের শতকরা প্রায় ৩২ ভাগ মানুষের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়। মূলত মস্তিষ্কে দু’ধরনের রাসায়নিকের নিঃসরণের কারণে মাংসপেশি অসাড় হয়ে পড়ে। এর ফলে ব্যক্তির মস্তিষ্ক ঘুমের সময় সচল থাকলেও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করতে পারে না বলে মনে করেন টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই স্নায়ুবিজ্ঞানী প্যাট্রিসিয়া এল ব্রুকস এবং জন এইচ পিভার। রাসায়নিক দু’টি হল, গ্লাইসিন এবং গামা অ্যামাইনোবিউটিরিক অ্যাসিড-গ্যাবা।
স্লিপ প্যারালাইসিসের ফলে কী কী হতে পারে?
১) মনে হতে পারে কেউ যেন আপনাকে নীচের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
২) কেউ আপনার ঘরের মধ্যে আছে বলে আপনার মনে হতে পারে।
৩) খুব ভয় লাগতে পারে।
৪) হ্যালুসিনেশনের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি হয় এই সময়ে।
স্লিপ প্যারালিসিসের লক্ষণ কী কী?
১) শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।
২) মনে হতে পারে আপনি এখনই মারা যেতে পারেন।
৩) প্রচণ্ড পরিমাণে ঘাম হবে।
৪) পেশিতে অসহ্য যন্ত্রণা হবে।
৫) মাথা ধরে থাকবে।
কী কী কারণে স্লিপ প্যারালিসিস হতে পারে?
১) অনিদ্রা
২) নারকোলেপ্সি
৩) গুরুতর কোনও ডিপ্রেশন
৪) বাইপোলার ডিজ়অর্ডার
৫) পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজ়অর্ডার