জো লিন্ডার। ছবি: সংগৃহীত
অ্যানুরিজম রোগে মৃত্যু হল জার্মানির ফিটনেসবিদ ও ইউটিউবার জো লিন্ডারের। ৩০ বছর বয়সি ইউটিউবারের মৃত্যুতে শোকের ছায়া সমাজমাধ্যম দুনিয়ায়। বেশ কিছু বছর ধরে তাইল্যান্ডে থাকছিলেন জো। ইউটিউবে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। অনুরাগীদের সঙ্গে শরীরচর্চা সংক্রান্ত নানা রকম উপদেশ ভাগ করে নিতেন জো। এর পাশাপাশি, জিম করলে কেমন ডায়েট হওয়া উচিত সেই নিয়েও ভিডিয়ো বানাতেন।
১ জুলাই জো-এর বান্ধবী নিচা জো-এর মৃত্যুর খবর ইনস্টাগ্রামে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন। নিচা জানিয়েছেন, ব্রেন অ্যানুরিজমের কারণেই মৃত্যু হয়েছে জো-এর। ইনস্টাগ্রামে নিচা লিখেছেন, ‘‘গতকাল অ্যানিউরিজম রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে জো-এর। মৃত্যুর সময়ে আমি ওর সঙ্গে ঘরেই ছিলাম। জো আমার গলায় একটা হার পরিয়ে দিয়েছিল। বিছানায় একে অপরের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্ত কাটাচ্ছিলাম। ৪টের সময়ে আমাদের জিমেও যাওয়ার কথা ছিল। ও আমার হাতেই মাথা রেখে শুয়েছিল। মুহূর্তের মধ্যেই অঘটন ঘটে গেল। তিন দিন আগে জো আমায় বলেছিল ওর ঘাড়ে ব্যথা করছে। তবে বিষয়টা এতটা গুরুতর, তখন বুঝতে পারিনি। যখন বুঝলাম তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে।’’
চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ও ‘সেরিব্রাল অ্যানুরিজম’ বা ‘ব্রেন অ্যানুরিজম’-এ আক্রান্ত। অস্ত্রোপচার নয়, রোগ সারাতে প্রাচীন কিছু চৈনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা চলছে তাঁর।
কাকে বলে ব্রেন অ্যানুরিজম?
চিকিৎসকদের মতে, এই রোগে মস্তিষ্কের রক্তবাহগুলি বেলুনের মতো ফুলতে শুরু করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ফুলে ওঠা অংশটি গাছ থেকে ঝোলা ফলের মতোও দেখতে লাগতে পারে। এই বেলুনের মতো অংশটি ফেটে গেলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা তৈরি হয়। স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ে। এই ধরনের রক্তক্ষরণকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘সাব অ্যারাকনয়েড হেমারেজ’।
উপসর্গ কী?
এক চোখের পিছনের দিকে ব্যথা, প্রসারিত চোখের মণি, দৃষ্টির সমস্যা কিংবা মুখের এক দিক অসাড় লাগা এই রোগের লক্ষণ হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে কথা বলার সময়ে কথা জড়িয়ে যেতে পারে, হাঁটার সময়ে ভারসাম্য রাখতেও সমস্যা হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেলুনের মতো অংশটি না ফাটলে এই রোগে কোনও রকম উপসর্গ না-ও দেখা দিতে পারে। কিন্তু যদি বেলুনের মতো অংশটি ফেটে যায়, তবে প্রাণ নিয়ে টানাটানি হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
এই রোগের কারণ কী?
নির্দিষ্ট করে না বলা গেলেও বার্ধক্য, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি।