—প্রতীকী ছবি।
প্রতি বছর বর্ষার মরসুমে ডেঙ্গি-আতঙ্ক তৈরি হয় বাংলায়। কলকাতায় বরাবর আক্রান্তের সংখ্যা বেশি থাকে। তবে এ বার তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জেলাতেও সংক্রমণ বাড়ছে। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ডেঙ্গি নিয়ে গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২ দিন ধরে জ্বর, মাথার যন্ত্রণা, শরীরে, হাত-পায়ে ব্যথা থাকলে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। শরীরে যদি লাল র্যাশ দেখা যায়, তা হলেও রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায়। নাক-মুখ থেকে রক্তক্ষরণ হলেও সময় নষ্ট না করে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে।
চিকিৎসকদের মতে, সাবধানতা বা সতর্কতা শুধু চিকিৎসকদের বা পুরকর্মীদের দায় নয়, সাধারণ মানুষকেও এর দায় ও সচেতনতায় অংশ নিতে হবে। নইলে মশাবাহিত কোনও অসুখ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু রাজ্যে যে হারে হাইরাইজ বিল্ডিং তৈরি হয়, স্যাঁতসেতে ইটের পাঁজা চারদিকে স্তূপ হয়ে থাকে, চারপাশে যে মাত্রায় আবর্জনার স্তূপ জমে থাকে, তাতে ডেঙ্গি আটকানো কঠিন। ব্লিচিং বা কীটনাশক দিয়ে মশাকে কিছুটা প্রতিহত করতে পারলেও তার প্রভাব আধ-এক ঘণ্টার বেশি থাকে না। তাই যে সব জায়গায় মশা ডিম পাড়ে, সেই জায়গাগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া উচিত।
বর্ষার সময় ঘরের জানালায় নেট লাগানোর ব্যবস্থা করুন। —প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি থেকে দূরে থাকতে কী করবেন?
১) নোংরা হোক বা পরিষ্কার— বাড়ির আশেপাশে কিছুতেই জল জমতে দেবেন না। প্রয়োজনে কর্পোরেশন, স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আশপাশে থাকা ফুলের টব, ডাবের খোলা, পরিত্যক্ত টায়ারে, বালতিতে যেন জল না জমে লক্ষ্য রাখুন। জমে থাকা ইট, বালি-সিমেন্টের স্তূপে মশারা বসবাস করে। তাই এলাকার আশপাশে একেবারেই এ সব জমে থাকতে দেবেন না। একান্তই কোনও বাড়ি তৈরির পরিস্থিতি এলে ওই জায়গার চারপাশে নিয়মিত কীটনাশক ও মশা মারার স্প্রে দেওয়ানোর ব্যবস্থা করুন। ব্লিচিং, কীটনাশক বা তেলে ভরসা করুন, তবে তার চেয়েও বেশি জোর দিন আগাছা পরিষ্কারে।
২) যত অনভ্যাসই থাক, বর্ষার ক’দিন মশারির ভিতর ঘুমোনোর অভ্যাস করুন। বাড়ির চারপাশ অপরিষ্কার হলে অবশ্যই সারা দিন মশারি টাঙিয়ে রাখুন। বর্ষার সময় ঘরের জানালায় নেট লাগানোর ব্যবস্থা করুন।
৩) শিশুদের তো বটেই, বাইরে বেরলে নিজেরাও চেষ্টা করুন ফুল হাতা জামা-কাপড় পরতে। রাসায়নিক দেওয়া মশা নিরোধক ক্রিম মাখানোর চেয়ে ঘরোয়া কিছু উপায়ে মশা দমন করুন। ভেষজ কোনও কোনও ধূপেও মশা যায়, সেগুলিও ব্যবহার করতে পারেন। মশা মারার ওষুধ বা তেল ব্যবহার করলে তার উপাদান দেখে নিন। মাঝে মাঝেই বদলে দিন ওষুধ। একই ওষুধ অনেকদিন ব্যবহার করলে মশা নিজের শরীরেও সেই প্রতিষেধকের বিপরীতে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ফেলে।