ইলন মাস্ক। ছবি : সংগৃহীত।
বিশ্বের ধনকুবের শ্রেষ্ঠ ইলন মাস্কের প্রিয় পানীয় ডায়েট কোক। বিনা চিনির সোডা জাতীয় ওই নরম পানীয় অনেকেই পছন্দ করেন। তবে চিনি না থাকলেও ডায়েট সোডায় এমন অনেক উপাদান থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী নয় বলে মনে করেন পুষ্টিবিদেরা। এমনকি, তা থেকে হৃদরোগ, কিডনির অসুখের মতো ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে মনে করেন অনেকে। হয়তে সেই কারণেই মাস্কের যাঁরা শুভানুধ্যায়ী, তাঁরা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ডায়েট কোক খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে দেওয়ার। সেই উপদেশ মেনে গত এক মাস নিজেকে সংবরন করে জীবনে কী কী বদল এল, এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্টে সে কথা জানিয়েছেন মাস্ক।
ডায়েট কোকে চিনির বদলে অ্যাসপারটেম নামের একটি কৃত্রিম সুইটনার ব্যবহার করা হয়। টাফ্টস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং হৃদরোগের চিকিৎসক ড্যারিয়াস মোজাফারিয়ান ওই অ্যাসপারটেম সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানাচ্ছেন, ২০২৩ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-এর একটি নির্দেশিকায় অ্যাসপারটেমকে একটি বিশেষ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যে সমস্ত উপাদান মানবদেহে ক্যানসারের কারণ হতে পারে, সেই তালিকায় রাখা হয়েছে অ্যাসপারটেমকে। মাস্ক অবশ্য এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘আমি প্রচুর পরিমাণে ডায়েট কোক খেতাম। কিন্তু এক মাস হল একটি ফোঁটাও খেয়ে দেখিনি। তাতে আমার জীবনে যে বদল গুলি এসেছে, তা হল— এক, আমার স্বাস্থ্যের কোনও পরিবর্তন হয়নি। দুই, আমি কিছুটা হলেও এখন কম সুখী এবং তিন আমার একটি খুশির উৎস হারিয়ে গিয়েছে! যাঁরা আমাকে ওই পানীয় ছাড়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন, তাঁদের অসংখ্য ধন্যবাদ!’’
মাস্কের ওই পোস্ট দেখার পরে ডায়েট কোক খেতে ভালবাসেন যাঁরা তাঁরা অনেকেই উৎসাহিত হয়েছেন। কেউ কেউ মাস্কের পোস্টের নীচে লিখেছেন, তাঁরা অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু ডায়েট কোককে নিজেদের জীবন থেকে বিদায় জানাতে পারেননি। কারণ ডায়েট কোকের মতো ভাল জিনিস আর দু’টি হয় না। বস্তুত মাস্কও নিজের পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘‘আমি মজা করছি, ডায়েট কোক আমি ছাড়তে পারব না, ছাড়ব না।’’
চিকিৎসক ড্যারিয়াস বলছেন, অ্যাসপারটেম এফডিএ অনুদিত কৃত্রিম সুইটনার। তা অল্প পরিমাণে খেলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু যিনি দিনে বহুবার ডায়েট কোক খান এবং সঙ্গে প্রক্রিয়াজাত ক্যালোরি নিয়ন্ত্রিত খাবার খান, তাঁদের শরীরে অ্যাসপারটেম অনেকটাই বেশি পরিমাণে যেতে পারে। ম্যাসাচুসেটসের গণ বিশ্ববিদ্যালয় ইউমাস লোয়েলের অধ্যাপক এবং পু্ষ্টিবিদ কেলসি ম্যাঙ্গানো অবশ্য বলছেন, ‘‘ডায়েট কোক বা ডায়েট সোডায় অ্যাসপারটেমই শুধু একমাত্র চিন্তার বিষয় নয়। ডায়েট সোডায় থাকেন ক্যাফিন এবং ফসফরিক অ্যাসিড। যা অত্যধিক না খাওয়াই ভাল।’’ বিশেষ করে ফসফরিক অ্যাসিড হাড়ের তন্তুর ক্ষতি করতে পারে বলে জানাচ্ছেন তিনি। যা থেকে অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যাও হতে পারে বলে মত পুষ্টিবিদের।