High Altitude Affects Male Fertility

অধিক উচ্চতায় ট্রেকিং করলে পুরুষের সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা কমে! আর কী বলছে গবেষণা?

নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ‘রিভিউ’ প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে ওই গবেষণা। সেখানে সবিস্তার বলা হয়েছে, কী ভাবে অধিক উচ্চতায় অক্সিজেনের অভাব পুরুষের জননাঙ্গের উপর প্রভাব ফেলে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪০
Share:

ছবি: ফ্রিপিক।

পাহাড়ের ডাকে সাড়া দিয়ে অ্যাডভেঞ্চারের টানে বেরিয়ে পরেন অনেকেই। চড়াই উতরাই পেরিয়ে পাহাড়ের মাথা ছোঁয়ার যে নেশা, তা এড়ানো সোজা কথা নয়। কিন্তু একটি গবেষণায় প্রকাশিত ফল বলছে, অধিক উচ্চতায়, যেখানে অক্সিজেনের মাত্রা কম, সেখানে ট্রেকিং করলে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা কমতে পারে! এমনকি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা সন্তানের মধ্যেও ওই সমস্যা সঞ্চারিত হতে পারে!

Advertisement

নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ‘রিভিউ’ প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে ওই গবেষণা। সেখানে সবিস্তার বলা হয়েছে, কী ভাবে অধিক উচ্চতায় অক্সিজেনের অভাব পুরুষের জননাঙ্গের উপর প্রভাব ফেলে। গবেষকেরা বলছেন, শরীরে অক্সিজেনের অভাবের ফলে পুরুষের অন্ডকোষ বা শুক্রাশয়ে অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যায়। ওই সমস্যাকে বলা হয় ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’। যা শুক্রাণুর মানকে প্রভাবিত করে। পুরুষের সার্বিক প্রজনন ক্ষমতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

— ফাইল চিত্র।

সাধারণত ১২ মাস নিয়মিত অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গের পরও যদি পুরুষ তাঁর মহিলা সঙ্গীর গর্ভে সন্তান জন্ম দিতে না পারেন, তবে তাকে বলা হয় প্রজননে অক্ষমতা বা ইনফার্টিলিটি। তবে যদি পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়, তবে ওই একই পরিস্থিতিতে সন্তান জন্ম দেওয়া অসম্ভব না হলেও সম্ভাবনা কম হবে। সেই পরিস্থিতিকে বলা হয় সাব ফার্টিলিটি।

Advertisement

নেচার পত্রিকায় যে গবেষণার ‘রিভিউ’ প্রকাশিত হয়েছে সেটি করেছে অস্ট্রেলিয়ার নিউকাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। প্রতিবেদনটি লিখেছেন সেই গবেষক দলেরই অন্যতম প্রধান তথা নিউ কাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রজনন বিজ্ঞানী টেসা লর্ড। টেসা বলছেন, বেশ কিছু শারীরিক কারণেও শুক্রাশয়ে অক্সিজেন পৌঁছনোর সমস্যা হতে পারে। টেসার কথায়, ‘‘স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো কোনও রোগ থাকলে বা পুরুষের শুক্রাশয়ের যে বহিরাবরণ তার শিরা প্রসারিত হলেও টেস্টিস হাইপক্সিয়া হতে পারে।’’

— ফাইল চিত্র।

শুক্রাশয়ের শিরা প্রসারিত হওয়ার সমস্যার একটি নাম আছে। ভারিকোসেল। টেসা জানাচ্ছেন, পুরুষের প্রজননের অক্ষমতার প্রতি ১০০টি ঘটনার মধ্যে ৪৫টিরই কারণ ওই ভারিকোসেল থেকে হওয়া ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’। আবার যাঁদের স্লিপ অ্যাপনিয়া রয়েছে, অর্থাৎ ঘুমনোর সময় যাঁদের গলার পেশি সঙ্কুচিত হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা তৈরি করে, তাঁদেরও রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’ হতে পারে। বিশেষ করে যাঁদের স্থূলত্ব বেশি, তাঁদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার ঝুঁকিও বাড়তে দেখা গিয়েছে গবেষণায়। এ ছাড়া অধিক উচ্চতায় শরীরে অক্সিজেনের অভাব হলেও ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’ হয় বলে জানাচ্ছেন টেসা।

— ফাইল চিত্র।

তবে একই সঙ্গে গবেষকেরা জানিয়েছেন, অধিক উচ্চতায় থাকার জন্য যে ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’ হয়, তা দীর্ঘস্থায়ী নয়। রিভিউ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘সাধারণত অধিক উচ্চতা থেকে সমতলে ফেরার পর কিছু মাস ওই সমস্যা থাকে তার পরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে।’’ অবশ্য এর পরেও টেসা লিখছেন, শুক্রাশয়ে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার প্রভাব যে শুক্রাণুর মানের উপর পরে, তা বোঝা গেলেও বিষয়টি সেই শুক্রাণুজাত ভ্রুণকে কতটা প্রভাবিত করে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

টেসা তাঁর প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, তাঁদের হাতে কিছু প্রমাণ রয়েছে, যাতে দেখা গিয়েছে পিতার শরীরে টেস্টিস হাইপক্সিয়া থাকলে, তা ভ্রুণের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করছে। এমনকি, ওই ভ্রুণ থেকে যখন সন্তানের জন্ম হবে, তবে তার মধ্যেও প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে জানাচ্ছেন টেসা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement