কোলন ক্যানসারের ৫ উপসর্গ। ছবি: সংগৃহীত।
সকালে শৌচালয়ে গেলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এই কারণে অনেককেই বাড়ির লোকের হাসি-ঠাট্টা শুনতে হয়, কখনও আবার অভিযোগও মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। এরই মধ্যে মলের সঙ্গে যদি রক্তপাত হয়, তা হলেই বুক দুরু দুরু শুরু! অনেকে আবার কোষ্ঠকাঠিন্য বা অর্শের সমস্যা ভেবে অবহেলা করেন। অথচ মলের সঙ্গে রক্তপাত এবং মলত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন কোলন ক্যানসারের বা মলাশয়ের ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
বৃহদান্ত্রের কোষগুলির বৃদ্ধি অস্বাভাবিক হারে হলে এই অসুখ বাসা বাঁধে শরীরে। অন্ত্রে দীর্ঘস্থায়ী কোনও মাংসল অংশের বৃদ্ধি এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান, ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার ইত্যাদি কারণে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। সাধারণত, পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকলেও ইদানীং এই প্রবণতা বদলাচ্ছে, কম বয়সিরাও এই অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে কিছু উপসর্গ জানা থাকলে রোগের শুরুতেই চিকিৎসা করানো যায় ও সেরে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে।
কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
যদি মাঝবয়সে হঠাৎ মলত্যাগের অভ্যাস বদলে যায়, পর্যাক্রমে ডায়েরিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হয়, তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই ক্যানসারের উপসর্গ হিসেবে অনেক সময় মলের সঙ্গে রক্ত বেরোতে পারে, বেশির ভাগ মানুষই যা পাইল্স বলে ভুল করেন। এ ছাড়া পেটে অস্বস্তি (ক্রনিক গ্যাস, খিঁচুনির মতো পেটে ব্যথা), হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, খিদের বোধ কমে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যেতে পারে। খেতে ইচ্ছে না করা, সারা ক্ষণ বমি বমি ভাবও কিন্তু ভাল লক্ষণ নয়।
মলত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
ঝুঁকি এড়াবেন কী করে?
চিকিৎসকদের মতে, স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত শরীরচর্চা, মদ্যপান ও ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ, রেড মিট খাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ, ঠিক সময় অন্যান্য ক্রনিক অসুখের চিকিৎসা, এ সব মূল শারীরিক নিয়মনীতি মেনে চললেই এই অসুখের সম্ভাবনা কমিয়ে আনা যায় অনেকটা। রোজকার খাবারে পর্যাপ্ত টাটকা ফলমূল, শাকসব্জি, ভূষি-সহ আটার রুটি, ওট্স, মিলেট বেশি করে খেতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায় যাওয়ার আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।