প্লাস্টিকের কাপের ব্যবহার বন্ধ হওয়ার পর সর্বত্র কাগজের কাপেই চা দেওয়া হয়। প্রতীকী ছবি।
চায়ের দোকানগুলিতে ইদানীং কাচের গ্লাসের বদলে ব্যবহার করা হয় মাটির ভাঁড় কিংবা কাগজের কাপ। কাচের গ্লাস পরিষ্কার করার আলাদা ঝক্কি আছে। সেই সঙ্গে ভেঙে যাওয়ার ভয়ও রয়েছে। কাগজের কাপের ক্ষেত্রে তেমন আশঙ্কা নেই। চা খাওয়ার পর ফেলে দিলেই হয়। কিন্তু জানেন কি, কাগজের কাপে চা খেলেও হতে পারে বিপদ? প্লাস্টিক শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্লাস্টিকের কাপের ব্যবহার বন্ধ হওয়ার পর সর্বত্র কাগজের কাপেই চা দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও বাড়ছে বিপদ। খড়্গপুর আইআইটি-র গবেষকদের করা একটি গবেষণা বলছে এমনটাই।
কাগজ মানেই স্বাস্থ্যকর। এই ধারণা কিছুটা হলেও ভাঙতে বসেছে এই গবেষণা। গবেষণায় কাগজের কাপ থেকে পাওয়া গিয়েছে ‘হাইড্রোফোবিক ফিল্ম’ নামক এক ধরনের মাইক্রোপ্লাস্টিক। এই কাপে গরম চা ঢাললে সেই প্লাস্টিকের কণা মিশে যায় পানীয়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রায় অনেকটা পরিমাণ প্লাস্টিক চায়ে মিশে যায়। গবেষকরা জানাচ্ছেন, এই অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় কয়েক হাজার ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক’ মিশে যেতে পারে চায়ে। গবেষণা বলছে, এক একটি প্লাস্টিকের কাপে প্রায় পঁচিশ হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে। এ ছাড়াও জিঙ্ক, লেড এবং ক্রোমিয়ামের মতো শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক কিছু উপাদানের উপস্থিতিও পাওয়া গিয়েছে কাগজের কাপে।
এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সারা দিনে অন্তত তিন কাপ চা খেয়েই থাকেন। আর প্রতি বারই যদি কাগজের তৈরি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে শরীরে প্রবেশ করে প্রায় পঁচাত্তর হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক। এই ধরনের প্লাস্টিকে থাকে আয়ন, প্যালাডিয়াম, ক্রোমিয়াম এবং ক্যাডমিয়ামের মতো ক্ষতিকর সব পদার্থ। এ ছাড়াও মাইক্রোপ্লাস্টিকে রয়েছে বিসফেনল জাতীয় টক্সিক পদার্থ। তা ক্যানসারের অন্যতম কারণ। এই উপাদান মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন ক্ষরণ ব্যাহত করে। অন্য দিকে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যাও কমিয়ে দিতে পারে এই পদার্থ। ‘পলিইথিলিন’ জাতীয় এই ধরনের বিষাক্ত পদার্থ শরীরে প্রবেশ করলে রক্তের কোষগুলি ছোট ছোট অংশে ভেঙে গিয়ে প্লাজ়মা কোষের হার অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যেতে পারে। তা থেকেই মারণরোগের আশঙ্কা তৈরি হয়।