আইসিইউ-র রোগীদের হাসপাতালে বিল অনেকটা বেশি হওয়ার অনেক রকম কারণ থাকতে পারে। প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসার খরচ এখন যে কোনও সংসারের মাসিক খরচের একটি বিরাট অংশ হয়ে দাঁড়ায়। তার উপর যদি আকস্মিক কোনও রোগ-ব্যাধি হয়, কিংবা দুর্ঘটনা কিংবা অস্ত্রোপচারের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হলেই সকলের মাথায় হাত পড়ে যায়। বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করানোর খরচ সামলানো বেশ কষ্টকর হয়ে ওঠে মধ্যবিত্তের কাছে। তাই বেশির ভাগই এখন রাতারাতি স্বাস্থ্যবিমা করিয়ে রাখেন। কিন্তু যদি কোনও কারণে রোগীকে আইসিইউ-তে রাখতে হয়, তা হলে ঘটে বিপত্তি। হু হু করে বাড়তে থাকে হাসপাতালের বিল। খুব অল্প দিনেই বিমার অঙ্ক ছাড়িয়ে যায় সেই বিল। অনেকেই বুঝতে পারেন না কেন এত বেশি বিল হয়। সেই নিয়ে ক্ষোভও কম থাকে না আমজনতার মধ্যে।
প্রতীকী ছবি।
সম্প্রতি খাদ্যাভ্যাস এবং পুষ্টিগুণ নিয়ে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘‘ইন্টারন্যাশন্যাল ক্লিনিকাল নিউট্রিশন আপডেট ২০২২’’-এ ক্রিটিকাল কেয়ার চিকিৎসক অজয় সরকার এই আকাশাছোঁয়া বিলের কিছুটা ব্যাখ্যা করলেন।
তিনি বললেন, ‘‘যে কোনও রোগ থেকে সেরে উঠতে প্রোটিন আমাদের শরীরে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইনটেন্সিভ কেয়ারে যে রোগীদের রাখা হয়, তাঁদের শরীরে প্রোটিনের প্রয়োজন মূলত বেরোতে থাকে শরীরে যতটা প্রোটিন স্টোর করা থাকে, তা থেকে। তাই এই রোগীগের প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন প্রয়োজন হয়। তাই হাই প্রোটিন ডায়েট দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা হয় অন্য জায়গায়। আইসিইউ-তে থাকা বেশির ভাগ রোগীর শরীরে প্রতিরোধক্ষমতা অনেক কম থাকা। তাঁরা নানা ক্ষেত্রে ইমিউনো-কম্প্রোমাইজড হন। তাই সাধারণ রান্নাঘরে তৈরি খাবার খেলে শরীরে নানা রকম সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফর্মুলা ফুডের উপর থাকতে হয়। তাতে খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। আইসিইউ-র রোগীদের হাসপাতালে বিল অনেকটা বেশি হওয়ার অনেক রকম কারণ থাকতে পারে। কিন্তু তাঁর একটি বড় অংশ ডায়েট।’’
কোনও রোগ হলে তার চিকিৎসায় ওষুধের ভূমিকা যতটা, ডায়েটের ভূমিকাও ততটাই। কত দ্রুত এক জন রোগী সেরে উঠবেন, তার অনেকটাই নির্ভর করে, তিনি চিকিৎসা চলাকালীন কী ধরনের খাওয়াদাওয়া করছেন, তার উপরেও। একে বলে ‘থেরাপিউটিক ডায়েট’। পঞ্চসায়রের কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালের উদ্যোগে আয়োজিত পুষ্টিগুণ সম্পর্কিত সম্মেলনের এক মূল আলোচনার বিষয় ছিল এই ‘থেরাপিউটিক ডায়েট’।