বয়স্ক যে সকল ব্যক্তির হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা আছে, তাঁদের শরীরে ক্যালশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। ছবি: শাটরস্টক
ইদানীং ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করেছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এর পরিণতি উদ্বেগজনক। সম্প্রতি ব্রিটেনের ‘হার্ট’ নামক গবেষণাপত্রের একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বয়স্ক যে সকল ব্যক্তির হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা আছে, তাঁদের শরীরে ক্যালশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। গবেষকদের দাবি, শরীরে অধিক মাত্রায় ক্যালশিয়াম জমা হলে হৃদ্পিণ্ডের অর্টিক ভাল্ভের চারপাশেও এর উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ আরও বাড়ে। ফলে অর্টিক ভাল্ভটি সম্পূর্ণ ভাবে খুলতে পারে না। শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। আর এতেই ঘটে বিপত্তি।
তবে ক্যালশিয়ামের অভাবও শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। কারণ, রোজের খাবার থেকে ক্যালশিয়াম না পাওয়া গেলে রক্তে এর অভাব হয়। তখন ক্যালশিয়াম নেওয়া শুরু হয় হাড় থেকে। স্বভাবতই, হাড়ের ক্ষয় হতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৫০-এর নীচের মহিলা এবং ৭০-এর কম বয়সি পুরুষের শরীরে প্রতি দিন ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম প্রয়োজন। ৫০ এবং ৭০ পার করা মহিলা ও পুরুষের জন্য রোজ প্রয়োজন ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম। মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুবন্ধের পর দরকার ১৫০০ মিলিগ্রাম। অথচ বেশির ভাগ মহিলাই ৬০০ থেকে ৭০০-র বেশি পান না। তবে যা প্রয়োজন, তার সবটাই রোজের খাবারের মধ্যে দিয়ে শরীরে যাওয়া ভাল। দুধ, দই, শাকসব্জি, ডিম, মাশরুম, ছোট মাছে ক্যালশিয়াম থাকে।
প্রতীকী ছবি
রোজের খাদ্যতালিকা থেকে যদি শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম না পাওয়া যায়, তা হলে কেবলমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ক্যালশিয়ামের ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে গবেষকরা ষাট বছরের বেশি বয়সিদের ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টের মিশ্রণ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালশিয়ামের শোষণ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
চিকিৎসকদের মতে, ‘ওভার মেডিকেশন’ এ ক্ষেত্রে খুব ক্ষতিকর। শরীরের বিভিন্ন পেশীতে ক্যালশিয়াম জমতে থাকে। ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজনীয়তাই নেই, তা-ও হরেক বিজ্ঞাপনে মজে অনেকেই খাওয়া শুরু করে দেন। তাতে সমস্যা তো হবেই। হাইপার ক্যালশেমিয়া খুবই খারাপ।
অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম শরীরে গেলে হার্টের অসুখের ঝুঁকি তো বাড়েই পাশাপাশি পেট ব্যথা, বমি ভাব, অবসাদ এমনকি কিডনিতে পাথরও হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্টেট ক্যানসারের ভয় থাকে। শরীরে আয়রন, জিঙ্ক ও ম্যাগনেশিয়ামের মিশে যাওয়া নিয়ন্ত্রিত করে দেয় অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম।