চটজলদি ওজন ঝরাতে ইদানীং অনেকেই ভরসা রাখছেন ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’-এর উপর। ছবি- সংগৃহীত
পুজোর আগে ওজন ঝরাতে অনেকেই কসরত শুরু করেন। অনেকে আবার দ্রুত ওজন কমাতে কড়া ডায়েট মেনে চলেন। চটজলদি ওজন ঝরাতে ইদানীং অনেকেই ভরসা রাখছেন ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’-এর উপর। এই ডায়েটে খাবারের ক্ষেত্রে তেমন কড়া বিধি-নিষেধ থাকে না। তবে এ ক্ষেত্রে দিনে ছয় থেকে আট ঘণ্টার মধ্যেই শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার খেয়ে ফেলতে হয়। আর বাকি সময়টা অর্থাৎ, ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা উপোস করে কাটাতে হয়।
‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’- করলে সারা দিন আমরা যা খাচ্ছি তা হজম করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়, শরীর থেকে টক্সিন দূর হয়, ফলে ওজন ঝরে দ্রুত। অভিনেত্রী ছবি মিত্তল সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করার সময় আর পাঁচ জন কী কী ভুল করেন সেই নিয়ে কথা বলেছেন।
অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, ছেলে আরহামের জন্মের পর ওজন কমানোর জন্য তিনি এই ডায়েট করেছিলেন। অনেকেই মনে করেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাবার খেয়ে ফেলতে পারলেই বুঝি এই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করা হয়। এই ডায়েট কিন্তু অনেক ধরনের হয়। এই ডায়েট করার সময় পুষ্টিবিদরা অনেককেই দিনে কেবল এক বার খাওয়ার পরামর্শ দেন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার ঠিক কত ঘণ্টা অন্তর কতটা পরিমাণ খাবার খাবেন তাও ঠিক করে দেওয়া হয়। কখনও আবার সপ্তাহে পাঁচ দিন খেয়ে বাকি দু’দিন উপোস করে থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়। তাই আপনার শরীরের জন্য ঠিক কোন প্রকার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর প্রয়োজন তা পুষ্টিবিদদের কাছে জেনে নেওয়াই শ্রেয়।
‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করার পাশাপাশি পরিমিত মাত্রায় শরীরচর্চাও করতে হবে। ছবি- সংগৃহীত
এই ডায়েটের ক্ষেত্রে কোন ভুলগুলি আমরা করি:
১) এই ডায়েট করা কিন্তু খুব সহজ নয়। হঠাৎ করে কড়া ডায়েট শুরু করে দিলে শরীর তা না-ও মানতে পারে। ক্লান্তিভাব আসতে পারে, কাজে মনোযোগ হারিয়ে ফেলতে পারেন। ছবি বলেন, ‘‘আমি যখন এই ডায়েট শুরু করেছিলাম তখন ছেলে আরহানকে দুধ খাওয়াতে হত। তাই খুব বেশি ক্ষণ উপোস করে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আমি আট ঘণ্টা থেকে শুরু করেছিলাম। ধীরে ধীরে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় বাড়াই। প্রত্যেকের শরীর আলাদা। শরীর বুঝে তবেই উপোস করুন।’’
২) ছবির কথায়, ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ শুরু করলেই আপনার ওজন ঝরবে এমনটা কিন্তু নয়। ছ’থেকে সাত ঘণ্টার মধ্যে আপনি কী খাচ্ছেন সেটাও কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে। ১৬ ঘণ্টা উপোস করলেন অথচ বাকি সময়টা প্রচুর ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেলেন— এমনটা করলে ওজন কখনই কমবে না। আবার খুব কম খাবার খেলেও মুশকিল। এতে শরীরের বিপাকহার কমে যেতে পারে। এই ডায়েটেও কিন্তু ‘জাঙ্কফুড’ খাওয়া যাবে না।
৩) উপোসের সময় অনেকেই সতর্ক থাকেন না। হয়তো চিনিযুক্ত চুয়িংগাম খেয়ে ফেলেন বা মিষ্টি টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মেজে ফেলেন। অভিনেত্রীর মতে এতেও কিন্তু আপনার উপোস করা বৃথা হয়ে যেতে পারে। আপনি কালো কফি খেতে পারেন তবে চিনি-দুধ দিয়ে কফি খাওয়া চলবে না।
৪) চটজলদি ওজন ঝরাতে ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করার পাশাপাশি পরিমিত মাত্রায় শরীরচর্চাও করতে হবে। ছবি বলেন, নির্দিষ্ট সময় উপোস করার পাশাপাশি ৩০ থেকে ৪০ মিনিট মাঝারি ধরনের ব্যায়াম ও শরীরচর্চা করলে বিপাকহার বাড়বে এবং মেদও ঝরবে দ্রুত।