স্তন ক্যানসার কি পুরুষদের হতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্ব জুড়ে হৃদ্রোগে মৃত্যুর হার সব থেকে বেশি। আর মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ কর্কট রোগ। এই রোগ কিন্তু মহামারির চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। তবে এই মারণরোগের উপসর্গ সম্পর্কে এখনও সম্যক ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যে কম। বিশেষত, ক্যানসারের ধরন যদি বিরল প্রকৃতির হয়, তখন অনেক দিন পর্যন্ত মানুষ বুঝতেই পারেন না, উপসর্গগুলির গুরুত্ব। তাই পেরিয়ে যায় চিকিৎসার সময়। রোগটি এতটাই ভয়াবহ যে, তা ছড়াতে খুব বেশি সময় লাগে না। শুধু তা-ই নয়, ক্যানসার রোগ সম্পর্কে অনেকেরই নানা ভুল ধারণা আছে। এই সব ধারণার কারণে কিন্তু ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের মানসিক চাপ বাড়ে। তা ছাড়া সাধারণ মানুষের মনেও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থেকে যায়। কর্কটরোগ সম্পর্কে সর্বাধিক প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণাগুলি জেনে রাখা ভাল।
১) ক্যানসার ছোঁয়াচে রোগ: ক্যানসার নিয়ে নানা প্রকার সচেতনতামূলক প্রচার চলে সারা বছর ধরে। তবুও অনেক মানুষের মন থেকে এই ধারণা মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। অনেকেই মনে করেন, ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলেই বুঝি কর্কটরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই ধারণায় বদল আনা জরুরি। ক্যানসার কোনও ছোঁয়াচে রোগ নয়। আশপাশের মানুষের এই আচরণ কিন্তু ক্যানসার রোগীদের মানসিক সমস্যার কারণ হয়ে দাড়ায়।
২) স্তন ক্যানসার মেয়েদেরই হয়: স্তন ক্যানসার মানেই মেয়েদের রোগ— এই ধারণাও ঠিক নয়। তুলনামূলক ভাবে সংখ্যায় কম হলেও পুরুষরাও কিন্তু এই রোগে আক্রান্ত হন। মহিলা-পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই স্তন ক্যানসারের উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা করা উচিত নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে এই ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে নিরাময়ের হার অনেক বেশি।
মোবাইল ব্যবহার করলে শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারে— এই ধারণা একেবারেই ভুল। ছবি: সংগৃহীত।
৩) অত্যধিক মোবাইল ব্যবহার করলে ক্যানসার হয়: মোবাইল ব্যবহার করলে শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারে— এই ধারণা একেবারেই ভুল। কোনও গবেষণা বা সমীক্ষা এই বিষয়টি সমর্থন করে না।
৪) কৃত্রিম চিনি খেলে ক্যানসার হয়: ঘরে ঘরে এখন ডায়াবিটিসের রোগী। তাই চিনির বদলে এখন কৃত্রিম চিনিই ভরসা! তবে অনেকের ধারণা, এই চিনি খেলে নাকি ক্যানসার হয়। এই ধারণা ভুল। কৃত্রিম চিনি খেলে ক্যানসার হয়, এই এমন তথ্য এখনও কোনও গবেষণায় পাওয়া যায়নি। তবে কৃত্রিম চিনি খুব বেশি স্বাস্থ্যকরও নয়। বাজারে যে কৃত্রিম চিনি পাওয়া যায়, তাতে অ্যাসপারটেম ও সুক্রালোজ় নামক যৌগ থাকে। এগুলি কিন্তু শরীরের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। সুক্রালোজ়ের তুলনায় অ্যাসপারটেম আরও বেশি ক্ষতিকর। এই দুই যৌগ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন হৃদ্যন্ত্র, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
৫) মাইক্রোওয়েভে গরম করা খাবার খেলে ক্যানসার হয়: অনেকের ধারণা, মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করলে তাতে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটে। ফলে সেই খাবার খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। এ রকম তথ্য কিন্তু কোনও গবেষণায় পাওয়া যায়নি। তাই মনে অযথা ভয় পুষে রাখবেন না। তবে প্লাস্টিকের বাটিতে খাবার গরম করা স্বাস্থ্যকর নয়। মাইক্রোওয়েভের জন্য উপযুক্ত পাত্রই ব্যবহার করা শ্রেয়।