অ্যালঝাইমার্স ও হৃদ্রোগের কী সম্পর্ক ছবি: সংগৃহীত
স্মৃতিশক্তি হ্রাস বা লোপ পাওয়ার মতো সমস্যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ডিমেনশিয়া। স্মৃতিভ্রংশের সমস্যা এমন একটি বিষয় যা প্রাথমিক অবস্থায় অবহেলা করেন অধিকাংশ মানুষই। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে এই রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা যেখানে ছিল প্রায় ৫ কোটি ৭০ লক্ষের কাছাকাছি, সেখান ২০৫০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ১৫ কোটি। অ্যালঝাইমার্স অ্যান্ড রিলেটেড ডিসঅর্ডারস সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার ২০২০ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতবর্ষে ষাটোর্ধ্ব প্রায় ৫৩ লক্ষ মানুষ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত। অন্য দিকে প্রতি বছর পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় হৃদ্রোগে। এ বার এই দু’টি রোগের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকান একাডেমি অব নিউরোলজির সাম্প্রতিকতম সংখ্যায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র বলছে হৃদ্রোগের রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি বাড়িয়ে দিতে পারে ডিমেনশিয়ার আশঙ্কাও। যে যে বিষয়গুলি কোনও একটি বিশেষ রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় সেই বিষয়গুলিকে বিজ্ঞানের ভাষায় সংশ্লিষ্ট রোগের রিস্ক ফ্যাক্টর বলে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, স্থূলতা ও ধূমপানের মতো বিষয়গুলিকে হৃদ্রোগের ঝুঁকির মূল কারণ হিসেবে ধরা হয়। বিজ্ঞানীদের দাবি এই কারণগুলি ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে সবচেয়ে দুরারোগ্য ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমার্স দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় অনেকটাই।
মোট ১২৪৪ জন ব্যক্তি এই গবেষণায় অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ছিল ৫৫। বিজ্ঞানীরা ১০ বছর সময়কালে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের বয়স, লিঙ্গ, বিএমআই, রক্তচাপ, ধূমপানের আসক্তি ও ডায়াবিটিসের মতো বিষয়গুলি পর্যবেক্ষণ করেন। দেখা গিয়েছে ২২ শতাংশ ব্যক্তির এই সময়ে কোনও ধরনের সমস্যা দেখা যায়নি। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ৬০ শতাংশের ক্ষেত্রে ধীর গতিতে বেড়েছে সংবহনতন্ত্রের সমস্যা। আর শতকরা ১৮ ভাগ মানুষ অতি দ্রুত রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। যাঁরা অতিদ্রুত হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে অ্যালঝাইমার্স রোগটির ঝুঁকি প্রায় তিন থেকে ছয় শতাংশ বেশি বলে জানা গিয়েছে গবেষণায়। পাশাপাশি এই ব্যক্তিদের সাধারণ ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও তিন থেকে চার শতাংশ বেশি বলে মত গবেষকদের।