ঋতুস্রাবের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঝুঁকি প্রায় থাকে না বললেই চলে।
মাত্র বছর খানেক হল বিয়ে হয়েছে। এখনই সন্তান চাননি অনামিকা আর সোহম। যৌন সম্পর্কের সময় কোনও ভাবে অসাবধানও হননি তাঁরা। ঋতুস্রাবের সময়টা যৌন মিলনের জন্য নিরাপদ মনে করেই বিনা গর্ভনিরোধকেই যৌনসমঙ্গমে লিপ্ত হন দম্পতি। অধিকাংশ দম্পতিই মনে করেন, কন্ডোম ছাড়া যৌনমিলনের এটাই আদর্শ সময়। কিন্তু তা সত্ত্বেও এমনটা হল কী ভাবে? প্রায় দেড় মাস অপেক্ষা করেও ঋতুস্রাব না হওয়ায় অনামিকা জানতে পারেন, তিনি ৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।
গর্ভধারণের ঝুঁকি রুখতে মহিলাদের কন্ডোম, গর্ভ নিরোধক বড়ি— ইত্যাদি বহু সুবিধা থাকলেও ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল’-এর তথ্য জানাচ্ছে, ভারতের ৪৯ শতাংশ গর্ভধারণই এখনও অপরিকল্পিত। ঋতুচক্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকার জন্যই এমনটা হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋতুস্রাব চলাকালীন গর্ভধারণের আশঙ্কা কম হলেও যে সব মহিলার ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। অনেক মহিলার ক্ষেত্রে ডিম্বাস্ফোটনের সময়েও রক্তপাত হয়। যাঁদের ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়, তাঁরা এই রক্তপাতকেই ঋতুস্রাব ভেবে ভুল করেন। আর তাতেই হয় বিপত্তি! পুরুষদের শুক্রাণু মহিলাদের মধ্যে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত জীবিত থাকে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঋতুস্রাবের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঝুঁকি প্রায় থাকে না বললেই চলে, তবে তৃতীয় বা চতুর্থ দিনে সেই ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
প্রতীকী ছবি।
তবে কি ঋতুঃস্রাবের সময় সঙ্গম না করাই ভাল?
চিকিৎসকদের মতে, ঋতুস্রাবের সময় যৌনমিলনের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। অনেক মহিলাই ঋতুস্রাবের সময় প্রবল যন্ত্রণায় ভোগেন। অনেক ক্ষেত্রে যৌনমিলনে যন্ত্রণা থেকে উপশম পেতে পারেন। ঋতুস্রাব চলাকালীন মহিলাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, তাই তাঁদের মেজাজ বিগড়ে যায়। সঙ্গম করলে মানসিক অবসাদ দূর হয়, মেজাজও ভাল থাকে। তাই দম্পতিরা চাইলে গর্ভনিরোধক ব্যবহার করে ঋতুঃস্রাব চলাকালীন সঙ্গমে মত্ত হতেই পারেন!