সমস্যা এখন এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, মাধুরী ঠিক মতো ঘুমোতেও পারছেন না। ছবি: সংগৃহীত।
দীর্ঘ দিন ধরে এইচআইভি রোগে আক্রাম্ত বছর ৫১-এর মাধুরী। ২০০৫ সাল থেকে জীবনদায়ী অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধের খেয়েই সুস্থ আছেন তিনি। যদিও এই ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে মাধুরীর শরীরে। যেমন তাঁর ঘাড়ের উপর কুঁজের উচ্চতা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই সমস্যাটিও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বটে। সমস্যা এখন এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, মাধুরী ঠিক মতো ঘুমোতেও পারছেন না, ঘাড় ঘোরাতেও সমস্যা হচ্ছে তাঁর। তার উপর রাস্তায় বেরোলেই সবার দৃষ্টি থাকে মাধুরীর কুঁজের উপর, এইটা যেন আরও বেশি অস্বস্তিকর তাঁর কাছে।
অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধের জন্যই এইচআইভি রোগীরা এখন দীর্ঘজীবী হচ্ছেন। তবে এই ওষুধগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সত্যিই চিন্তায় ফেলেছে বহু এইচআইভি রোগীকে। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ দীর্ঘ দিন ধরে খাওয়ার পর লিপোডিস্ট্রফি রোগও অনেকের শরীরে বাসা বাঁধে। এ ক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন অংশে অ্যাডিপোজ় টিস্যুর অসম বণ্টন হয়। ফলে শরীরে বিভিন্ন অংশ ফুলে থাকে। শরীরের বিভিন্ন অংশে ফ্যাট জমতে শুরু করে।
দুই সন্তানের মা উষা। তাঁরও মাধুরীর মতো একই সমস্যা! লোকের চাউনিতে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি অস্ত্রোপচার করানোর সিদ্ধান্ত নেন। উষা বলেন, ‘‘আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। খালি মনে হত আমি ঘাড়ের উপর অতিরিক্ত বোঝা বহন করে চলেছি। আমার কোনও ব্যথা হত না, কিন্তু মানসিক যন্ত্রণাটা কাটিয়ে উঠতে পারছিলাম না। চিকিৎসকরাও আমার সমস্যাকে গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। অস্ত্রোপচার করতে দীর্ঘ দিন সময় লেগেছে সেই কারণে।’’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ২০০৯ সালে এই ওষুধ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবে ভারতে এখনও এইচআইভি রোগীদের অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হয়। ভারতীয় চিকিৎসকদের মতে, এই প্রকার ওষুধ ব্যবহারের পর লিপোডিস্ট্রফির সমস্যা হয় খুব কম সংখ্যক রোগীর। তবে যাঁরা এই সমস্যার শিকার হন, তাঁদের ভোগান্তি অনেক বেশি। কোনও চিকিৎসক আবার মনে করেন, এইচআইভি-র ওষুধের অনেক ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, লিপোডিস্ট্রফিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ার মানে হয় না।