হৃদ্রোগে আক্রান্ত সুস্মিতা সেন। ছবি: সংগৃহীত।
হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত প্রাক্তন ব্রহ্মাণ্ডসুন্দরী সুস্মিতা সেন। সমাজমাধ্যমে অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছেন সে কথা। অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি হয়েছে তাঁর। হৃদ্যন্ত্রে স্টেন্ট বসানো হয়েছে। ১৮ থেকে ৬০— যে কোনও বয়সেই কাবু করছে হার্ট অ্যাটাক। কঠোর নিয়মের মধ্যে থেকেও রেহাই পেলেন না বছর ৪৭ এর সুস্মিতা।
চিকিৎসকদের মতে, নিঃশব্দে শরীরের ভিতরে যে ক্ষয় হচ্ছে, আর্টারি ব্লক হচ্ছে, তা টের পাওয়া যাচ্ছে না। তবে হার্ট কাবু হওয়ার আগে একেবারেই যে জানান দেয় না, তা কিন্তু নয়। অধিকাংশ সময় বিপদের সঙ্কেত ধরতে পারা যায় না। আবার কখনও বুঝতে পেরেও ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে ক্ষান্ত থাকি আমরা। তাতে সাময়িক ভাবে স্বস্তি পাওয়া গেলেও ভিতরে ভিতরে বাড়তে থাকে ঝুঁকি।
হার্টের রোগ হলেই কেন স্টেন্ট লাগানোর দিকেই ঝুঁকছেন চিকিৎসকরা?
হার্টের সমস্যা ধরা পড়ার পর কিংবা হার্ট অ্যাটাকের পরে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করে স্টেন্ট বসানো হবে, নাকি বাইপাস সার্জারি করা হবে, তা নির্ভর করে কতগুলি আর্টারির কত শতাংশ ব্লক হয়েছে এবং রোগীর বয়স ও তাঁর শারীরিক অবস্থার উপর। ইদানীং হার্টের অসুখে এখন ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করে স্টেন্ট বসিয়ে দেওয়ার দিকেই ঝুঁকছেন চিকিৎসকরা। বাইপাস করতে যে পরিমাণ সময় ও খরচ লাগে, তা স্টেন্ট বসানোর ক্ষেত্রে লাগে না।
এ ছাড়া বাইপাস অস্ত্রোপচারের পর কাটা জায়গায় ব্যথা হওয়া, চুলকানির মতো বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে। বাইপাসের চেয়ে স্টেন্ট বসালে ঝুঁকি অনেক কম, তা ছাড়া একবার স্টেন্ট বসানোর কয়েক বছর পরে সমস্যা হলে আবার অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করে স্টেন্ট বসানো যায়। কিন্তু এক বার বাইপাস সার্জারির পর আবার কোনও সমস্যা হলে সে ক্ষেত্রে শারীরিক জটিলতা বাড়ে। তবে আর্টারির বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ব্লক থাকলে এবং ব্লকগুলি লম্বা লম্বা হলে সে ক্ষেত্রে বাইপাস করতেই হয়। এক বার স্টেন্ট বসানো মানেই চিরতরে বিপন্মুক্ত হওয়া নয়। প্রয়োজনে আবারও স্টেন্ট বসানো হতে পারে।
আর্টারির বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ব্লক থাকলে এবং ব্লকগুলি লম্বা লম্বা হলে সে ক্ষেত্রে বাইপাস করতেই হয়। ছবি: শাটারস্টক।
দ্রুত সুস্থতার পথে ফের সম্ভব?
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্টেন্ট বসানোর দু’-তিন দিনের মধ্যেই রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রোগীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে খুব বেশি সময় লাগে না। তবে স্টেন্ট বসানোর পরে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুয়ায়ী বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগে থাকতে হয়। নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, শারীরচর্চা, পুষ্টিবিদের নির্দেশ মেনে ডায়েট অনুসরণ ও নিয়মিত মেডিকাল চেকআপ করালে দীর্ঘ দিন সুস্থ জীবনযাপন করা যায়।