ভেস্টিবুলার সিস্টেমের গোলমাল হলেই মূলত ভার্টিগো হয়। ছবি: সংগৃহীত।
২ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানার ‘অ্যান অ্যাকশন হিরো’। ছবির প্রচারে ব্যস্ত অভিনেতা। তারই মাঝে আয়ুষ্মান জানালেন, তাঁর ভার্টিগো রয়েছে। তাই ‘অ্যাকশন হিরো’-র চরিত্রে কাজ করা মোটেই সহজ ছিল না।
আয়ুষ্মান জানান, বছর ছয়েক আগে তাঁর ভার্টিগো ধরা পড়ে। তিনি বলেন, ‘‘এই ছবিতে আমার উঁচু বিল্ডিং থেকে ঝাঁপ দেওয়ার একটি দৃশ্য ছিল। যদিও সব রকম সুরক্ষাই নেওয়া ছিল টেকনিশিয়ানদের তরফ থেকে, তবুও মনে সারা ক্ষণ কাজ করছিল যে, যে কোনও মুহূর্তে অঘটন ঘটে যেতেই পারে। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায় আমার। মনের মধ্যে অজানা ভয় কাজ করতে থাকে।’’
ভার্টিগো রোগে আক্রান্ত হলে কী সমস্যা হয়?
ধরুন দাঁড়িয়ে কোনও কাজ করছেন, এর মাঝে হঠাৎই মাথা ঘুরে গেল। কিংবা দিব্যি শুয়ে মোবাইলে সিনেমা দেখছেন, আচমকাই মনে হল কেমন যেন ঘরটা ঘুরছে। এগুলি হতেই পারে ভার্টিগোর উপসর্গ! এ ক্ষেত্রে শারীরিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়।
কেন ভার্টিগো হয়?
ভেস্টিবুলার সিস্টেমের গোলমাল হলেই মূলত ভার্টিগো হয়। মস্তিষ্কের যে অংশ কিংবা ভেস্টিবুলার যে সব স্নায়ু দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে, সেগুলিতে সমস্যা দেখা দিলেই ভার্টিগো হতে পারে। কেবল তা-ই নয়, কানের ভিতরের অংশে সংক্রমণ, যা ভেস্টিবুলার নিউরাইটিস নামে পরিচিত, সেটিও ভার্টিগোর অন্যতম কারণ হতে পারে। এই সংক্রমণের কারণে বেশ কয়েক দিন বমি ভাব ও ভার্টিগোর সমস্যা দেখা দিতে পারে। মেনিয়ারের মতো কানের অসুখ থেকেও ঘন ঘন ভার্টিগো হতে পারে। এই অসুখে কানের নালিকায় তরল জমে যায়। এমনকি, শ্রবণশক্তিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মস্তিষ্কের কোনও রোগের সঙ্কেত হতে পারে ভার্টিগো। মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলেও ভার্টিগো হতে পারে।
বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ব্রেন স্ট্রোকের পূর্ব ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের ভার্টিগোর ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক নেওয়া প্রয়োজন। ছবি: সংগৃহীত।
ভার্টিগোর কোন উপসর্গগুলি বিপজ্জনক?
ভার্টিগো মানেই যে সব সময়ে চিন্তার, তা নয়। কিন্তু বেশি মাত্রায় হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এই সব ক্ষেত্রে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, ভারসাম্যহীনতা, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, বমি, হঠাৎ কানে শুনতে না পাওয়া, দুর্বলতা, মুখ বেঁকে যাওয়া, কথা বলতে অসুবিধে হওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ব্রেন স্ট্রোকের পূর্ব ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের বাড়তি সতর্ক নেওয়া প্রয়োজন। আয়ুষ্মানের মতে, ‘‘এই রোগের সঙ্গে লড়াই করার জন্য আমি নিয়মিত ওষুধ খেয়ে যাচ্ছি। ওষুধ খেয়ে আমি ভালই থাকি। ভিতর থেকে শান্ত থাকলে এ ক্ষেত্রে অনেকটাই উপকার পাওয়া যায়। এই রোগ সম্পূর্ণ কখনও আসবে কখনও যাবে। মনে জোর রাখতে হবে।’’