কর্নফ্লেক্স কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? ছবি: শাটারস্টক
অফিসের তাড়াহুড়োয় অনেকেই প্রাতরাশ না করেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। অথচ খাদ্যাভ্যাসের প্রসঙ্গ এলেই পুষ্টিবিদ এবং চিকিৎসকেরা বরাবর গুরুত্ব দেন দিনের প্রথম খাবারের প্রতি। প্রাতরাশে কী খাচ্ছেন আর কতটা খাচ্ছেন সে দিকে সব সময়ই সচেতন থাকতে বলেন তাঁরা।
গাড়ি নিয়ে বেরোনোর সময় যেমন প্রথমেই অনেকটা পেট্রল ভরে নিলে সারা দিনের জন্য আর চিন্তার অবকাশ থাকে না, প্রাতরাশও অনেকটা সে রকমই। দিনের শুরুতেই ভারী খাবার দিয়ে পেট ভরিয়ে নেওয়াই যুক্তিসঙ্গত। চটজলদি প্রাতরাশ করার জন্য আমরা অনেকেই বেছে নিই কর্নফ্লেক্স এবং মুসলিকে।ভারী খাবার চাই, এ দিকে মেদও বাড়বে না— এই সব শর্ত মেনে চলতে গিয়ে আমরা অনেকেই কর্নফ্লেক্স এবং মুসলিকে রাখি আমাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। বিশ্ব জুড়ে প্রাতরাশের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার হল কর্নফ্লেক্স। বানানোর ঝামেলা নেই বলে এই খাবারের প্রতি ঝোঁক তৈরি হওয়াটাও স্বাভাবিক। কিন্তু কর্নফ্লেক্স খাওয়া কি আদৌ পুষ্টিকর?
পুষ্টিবিদদের মতে, উল্টো পিরামিডের মতো আকার মেনে খাদ্যাভ্যাস তৈরি করতে পারলে ভাল। দিনের প্রথম খাবারটি ভারী হলে তার উপর নির্ভর করে গোটা দিনের শক্তি সঞ্চিত হয়। তাই দিনের প্রথম খাবারের প্রতি যত্নবান হতেই হবে। তাই খাবার বাছতে হবে খুব বুঝে।
প্যাকেটজাত কর্নফ্লেক্সে অতিরিক্ত চিনি থাকে, যা কেবল ক্ষতিকারকই নয়, মেদ বাড়াতেও বিশেষ কার্যকর। ছবি: শাটারস্টক
কর্নফ্লেক্সকে সুস্বাদু করে তুলতে এতে মেশানো হয় ‘হাই ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ’৷ তাই কর্নফ্লেক্সের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স উচ্চ পর্যায়ে থাকে৷ তা ছাড়া এই খাবার শুধু খাওয়া যায় না। এতে মেশাতে হয় নিদেনপক্ষে দুধ। অনেকে শুকনো ফল বা মরসুমি নানা ফলও এর সঙ্গে মেশান। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স আরও বাড়ে, যা শক্তি বাড়ালেও শরীরের জন্য বিশেষ সুখকর নয়।
তা ছাড়া বেশির ভাগ প্যাকেটজাত কর্নফ্লেক্সে অতিরিক্ত চিনি থাকে, যা কেবল ক্ষতিকারকই নয়, মেদ বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা আছে তার। তাই মেদ ঝরাতে যে খাবার খাচ্ছেন, তার হাত ধরেই ঢুকে পড়ছে শরীরে ওবেসিটির বিষ এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ছে।
তাই প্রতি দিন কর্নফ্লেক্স বা অন্য কোনও সিরিয়াল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বদলান। বরং হাতরুটি, প্রয়োজনে পেট ভরে ভাত কিংবা নানা সব্জির স্যালাড— এ সবেই আস্থা রাখুন বেশি। তবে, সকালেই ভাত খেলে সারা দিনে আর ভাত না খেয়ে অন্য কোনও খাবার খান। এতে মেদ যেমন এড়ানো যাবে, তেমনই শরীর থাকবে সুস্থ।