নাক-মুখ ছাড়া শ্বাস নেওয়া যাবে অন্য ভাবেও! ছবি: সংগৃহীত
অদ্ভুত শোনালেও সত্যি। মলদ্বারের মাধ্যমেও নাকি শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে প্রাণীরা! ক্লিনিকাল অ্যান্ড ট্রান্সলেশনাল রিসোর্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনসাইটসে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় এমনটাই দাবি করলেন একদল বিজ্ঞানী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কচ্ছপের বিপাক প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীর গতিতে চলে। তাই তারই অনুকরণে শূকর ও ইঁদুরের উপর বিশেষ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান গবেষকরা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, কচ্ছপের অন্ত্রে যে শ্লেষ্মা বা মিউকাসের আস্তরণ থাকে তা অত্যন্ত পাতলা। ফলে অন্ত্রে কোষগুলিতে অনেক সহজে সংস্পর্শে আসতে পারে অক্সিজেন। তাই কচ্ছপের পেটের ওই অঞ্চলের মাধ্যমেও অক্সিজেনের আদান-প্রদান হয়। আর সেই কারণে কচ্ছপ মলদ্বার ব্যবহার করেও শ্বসন চালাতে পারে কিছুটা।
এ বার এই গবেষণাটিতে প্রাণীগুলিকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করেন বিজ্ঞানীরা। প্রতিটি ভাগেই নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রথম দলে অন্ত্রের মাধ্যমে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা ছিল না। দেখা যায় গড়ে ১১ মিনিটের মাথায় এই প্রাণীগুলির মৃত্যু হয়েছে অক্সিজেনের অভাবে। দ্বিতীয় পরীক্ষায় অন্ত্রের মাধ্যমে শ্বসন প্রক্রিয়া চালানোর ব্যবস্থা করা হয়। দেখা যায় প্রাণীগুলি গড়ে প্রায় ১৮ মিনিট জীবিত ছিল। আর তৃতীয় বারে প্রতিটি প্রাণীর অন্ত্রের মিউকাস কচ্ছপের মতো পাতলা করে দেওয়া হয়। ও মলদ্বারের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। দেখা যায় ৭৫ শতাংশ প্রাণী পরীক্ষা চলাকালীন জীবিতই ছিল। এই ঘটনা থেকেই গবেষকরা মনে করছেন, অন্ত্রের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি মলদ্বারের মধ্য দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করা যায় তবে পশ্চাদ্দেশ দিয়েও শ্বসন প্রক্রিয়া চালানো সম্ভব। তবে এ কথা মনে রাখতে হবে, বিষয়টি একেবারেই গবেষণার প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। তা ছাড়া মানুষের উপরেও যে এই পদ্ধতি কাজ করবে, এমনও কোনও নিশ্চয়তা নেই।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।