ছবি: সংগৃহীত।
অতিরিক্ত কথা বলার জন্য বন্ধুমহলে কারও কারও ‘বাচাল’ তকমা জোটে। যার পোশাকি নাম ‘ভার্বাল ডায়েরিয়া’। আবার, অনেকের কাছে কথা বলাই তো পেশা। কথা বলে অন্যের মনের তল খুঁজে পাওয়া কিংবা হাসানোর কাজ করেন অনেকেই। তবে সুবক্তা হতে গেলেও কিন্তু আগে ভাল শ্রোতা হওয়া প্রয়োজন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, অতিরিক্ত কথা বলার অভ্যাস এমনিতে খারাপ নয়। যদি না উল্টো দিকের মানুষের কাছে তা অসহনীয় হয়ে ওঠে। তবে, এই অভ্যাস কিন্তু মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত রোগের লক্ষণ হয়ে দাঁড়ায়। বেশির ভাগ সময় তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা মুশকিল। অল্প বয়সের ‘ভার্বাল ডায়রিয়া’ থেকেই বয়সকালে নানা জটিল সমস্যায় পড়তে পারেন।
‘ভার্বাল ডায়েরিয়া’ হয়েছে কি না বুঝবেন কী করে?
১) সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কারও অবাধ যাতায়াত, নানা বিষয়ে জ্ঞান। ভাষা নিয়েও সমস্যা নেই। তাই কথা শুরু করলে একেবারেই ভাবতে সময় লাগে না। যে কোনও সময়ে, অচেনা ব্যক্তির সঙ্গেও অনায়াসে কথা শুরু করে ফেলেন এঁরা।
২) কথা বলার মানুষ না পেলে অনেক সময়ে এঁরা নিজে নিজেই বকবক করেন। সারা দিনের কাজকর্ম, কী হল বা কী করতে হবে, সে সব পরিকল্পনা মুখে বলে বলে মনে রাখেন।
৩) বেশি কথা বলার অভ্যাস অনেক সময়েই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, বেশি কথার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে বাইপোলার ডিজ়অর্ডার, স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া, হ্যালুসিনেশন কিংবা অবসাদের মতো রোগের বীজ।
৪) আবার মনোরোগ চিকিৎসকেরা বলছেন, কোনও কারণে ভয় পেলেও বেশি কথা বলে ফেলেন অনেকে। তাঁদের কাছে ভয় বা উদ্বেগ লুকোনোর পন্থা এটি।
৫) অন্যের নজরে পড়ার একটি কৌশল হতে পারে বেশি কথা বলা। আবার, পছন্দের বিষয় পেলেও অতিরিক্ত কথা বলে ফেলতে পারেন অনেকে।
ভাল শ্রোতা হবেন কী ভাবে?
১) উল্টো দিকের মানুষটিকে বুঝতে চাইলে বেশি বাক্যব্যয় করা যাবে না। মন দিয়ে তাঁর কথা শুনতে হবে।
২) কোনও সমস্যার সমাধান করতে বসলে আগে অন্যদের কথা শুনতে হয়। তাঁরা যদি মনের কথা খোলসা করার সুযোগ না পান, তা হলে নিরপেক্ষ বিচার হবে না।
৩) অন্যের কথার মাঝে ঢুকে পড়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। যদি তা করেও ফেলেন, তৎক্ষণাৎ নিজের ভুল সংশোধন করতে হবে।
৪) আপনার হাতে যথেষ্ট সময় থাকলে তবেই অন্যদের কথা বা সমস্যা শুনুন। কথা শুরু করার পর মাঝপথে উঠে গেলে বক্তা মনে আঘাত পেতে পারেন।
৫) এক কথা বার বার বলবেন না। এতে সময় এবং শ্রম, দুই-ই নষ্ট হয়। উল্টো দিকের মানুষটিও বিরক্তি বোধ করতে পারেন।