প্রশ্নের মুখে কাশির সিরাপ। প্রতীকী ছবি
আফ্রিকার দেশ গ্যাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চারটি কাশির সিরাপের উপর তদন্ত শুরু করল সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যানডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা সিডিএসসিও। বুধবার মেডেন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড নামের হরিয়ানার সোনেপতের একটি ওষুধ নির্মাতা সংস্থার তৈরি চারটি কাশির সিরাপ ব্যবহার করতে নিষেধ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’। তার পরই ওই ওষুধগুলির উপর শুরু হয়েছে তদন্ত।
প্রোমেথাজি়ন ওরাল সলিউশন, কফেক্সমালিন বেবি কাফ সিরাপ, মেকফ বেবি কাফ সিরাপ এবং মাগরিপ এন কোল্ড সিরাপ নামের চারটি কাশির সিরাপের সঙ্গে আফ্রিকার ওই শিশুমৃত্যুর ঘটনার যোগ রয়েছে বলে আশঙ্কা ‘হু’-এর। বুধবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে ‘হু’ প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘‘কিডনির গুরুতর সমস্যা ও ৬৬ শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে যোগ থাকতে পারে ওই ওষুধগুলির।”
জবাবে কেন্দ্রের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অভিযোগের আধ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করে সিডিএসসিও। হরিয়ানার ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোলার’-এর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয় তৎক্ষণাৎ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, যে সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল সেই সংস্থাটি হরিয়ানার ‘স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোলার’-এরই লাইসেন্সপ্রাপ্ত। সংস্থাটি কেবল গ্যাম্বিয়াতেই ওষুধ পাঠিয়েছে বলে মনে করছে প্রশাসন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রীতি অনুযায়ী যখন কোনও দেশ বাইরে থেকে ওষুধ আমদানি করে, তখন নিজেদের মাপকাঠি অনুযায়ী সেই ওষুধের গুণমান বিচার করে নেয়।” এ ক্ষেত্রে সেই রীতি মানা হয়েছে কি না, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
কোন কোন কাশির ওষুধে নজর? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, “ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এই চারটি পণ্যের প্রতিটিতেই ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও ইথিলিন গ্লাইকল নামের দূষক পদার্থের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি।” এই পদার্থগুলি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে শরীরে ঢুকলে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে যেতে পারে শিশুরা। দেখা দিতে পারে পেটব্যথা, বমি, মূত্রত্যাগের সমস্যা ও কিডনির গুরুতর সমস্যা। হতে পারে মৃত্যুও, দাবি ‘হু’-এর। তবে এখনও শিশুমৃত্যুর সঙ্গে সরাসরি এই ওষুধগুলি কী ভাবে যুক্ত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে তা নিশ্চিত করে জানানো হয়নি বলে খবর স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে। যে সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেটির লেবেল বসানো ওষুধের ছবিও পাঠানো হয়নি। এই শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঠিক কবেকার তা নিয়েও তথ্য এসে পৌঁছয়নি, দাবি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের।