বাইরে থেকে দেদার বার্গার, পিৎজ়া কিনে খাচ্ছেন? সাবধান!
চিজ় বার্গার খেয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর ছয়েকের এক শিশুকন্যার। খবর, বার্গারটি খাওয়ার পরেই শিশুর অন্ত্রে ই-কোলাই ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হয়। আর ওই সংক্রমণের কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকার ম্যাসাচুসেট্সে। অ্যাঞ্জেলিকা ভ্যাজ়কেজ় নামে ওই শিশুটি তাঁর মা সামান্থা ও বোনেদের সঙ্গে একটি নামী রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিল। সেখানে বাকিরা নানা রকম খাবার অর্ডার করলেও অ্যাঞ্জেলিকা একমাত্র চিজ় বার্গার অর্ডার করে। শিশুটির মা সামান্থা জানিয়েছেন, চিজ় বার্গার বড়ই পছন্দ ছিল তাঁর মেয়ের। কিন্তু একটি নামী রেস্তরাঁর ওই খাবার যে তাঁর মেয়ের প্রাণ কেড়ে নেবে, তা ভাবতেও পারেননি তিনি। সামান্থার কথায়, বার্গারটি খেয়ে বাড়ি ফিরেই খুদে জানায় যে তার পেটে অসহ্য যন্ত্রণা করছে। পেটব্যথার ওষুধ খেয়েও ব্যথা কমেনি। ঘন ঘন বমিও হচ্ছিল শিশুটির। এর ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়। আচমকাই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয় শিশুটি। হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি তাকে।
ই-কোলাই ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ খুবই মারাত্মক। এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, দূষিত জল, পচা ও বাসি খাবার, দীর্ঘ দিন রেখে দেওয়া প্রক্রিয়াজাত খাবার, কাঁচা মাছ-মাংস, কাঁচা দুধ থেকে এই ব্যাক্টেরিয়া ছড়ায়। যদি মাছ বা মাংস দীর্ঘ দিন ধরে রেখে দেওয়া হয়, তা হলে তাতে ওই ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। খাবারের সঙ্গে পেটে গেলে তা অন্ত্রে 'স্টিগা' নামে একটি টক্সিন তৈরি করে, যা অন্ত্রের ভিতরের দেওয়াল নষ্ট করে দিতে পারে। এর ফলে পেটব্যথা, ডায়েরিয়া শুরু হয়। অন্ত্রে বিষক্রিয়াও হতে পারে। যে কোনও অ্যান্টিবায়োটিকে এই রোগ সারে না। ই-কোলাই সংক্রমণ রোখার জন্য নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকই খেতে হয়।
চিকিৎসকের কথায়, বহু রেস্তরাঁয় বা অনেক সময় রাস্তার ধারের দোকানগুলি থেকে যে পিৎজ়া, বার্গার বা চিকেন তন্দুরি খাওয়া হয়, তার বেশির ভাগটাই বাসি। অনেক দিনের রেখে দেওয়া মাংস, সব্জি দিয়ে তা তৈরি করা হয়। চটজলদি বানিয়ে দেওয়ার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে মাংস সংরক্ষণ করে রাখা হয়। যে চিজ় ব্যবহার করা হয়, তা-ও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বহু দিনের পুরনো। এমনকি অনেক দিনের কেটে রাখা স্যালাডও ব্যবহার করা হয়। তাই সেই সব খাবারের মধ্যে শুধু ই-কোলাই কেন, নানা রকম ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক বাসা বাঁধে। খাবারের সঙ্গে তা পেটে গিয়ে অন্ত্রে বিষক্রিয়া ঘটায়। তখন পেটের গোলমাল শুরু হয়। ক্ষেত্র বিশেষে ই-কোলাই সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিলে যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না হয়, তা হলে প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকিও থেকে যায়।