জন্মবধিরের চিকিৎসায় সফল ‘জিন থেরাপি’। ছবি: সংগৃহীত।
জন্ম থেকেই কানে একটি শব্দও শুনতে পেত না ১৮ মাসের শিশুকন্যা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, কান এবং মস্তিষ্কের স্নায়ুর জটিল একটি সমস্যার কারণেই সদ্যোজাতটির শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়েছে। শিশুটির অভিভাবকেরাও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা হাল ছাড়েননি। শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনতে তাঁরা সাধারণ কোনও ওষুধ নয়, ‘জিন থেরাপি’-র সাহায্য নিয়েছিলেন। আশার কথা হল, অদ্ভুত ভাবে সদ্যোজাতটির ক্ষেত্রে ওই থেরাপি কাজ করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তার শ্রবণশক্তি ফিরে আসে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, ১৮ মাসের ওই শিশুকন্যা, ওপাল স্যান্ডি কান এবং মস্তিষ্কের স্নায়ুর জটিল রোগ ‘অডিটরি নিউরোপ্যাথি’ নিয়েই জন্মেছিল। কোনও রোগ জন্মগত হলে তা সম্পূর্ণ নিরাময়ের আশা কম। সে কথা জেনেই কেমব্রিজের অ্যাডেনব্রুক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা শিশুটির উপর পরীক্ষামূলক ভাবে বিশেষ এই থেরাপিটি করার সিদ্ধান্ত নেন। ওই হাসপাতালে কান, নাক এবং গলার চিকিৎসক এবং এই ট্রায়ালের প্রধান মনোহর বেয়ান্স জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলক এই পদ্ধতিতে আশাতীত ফল মিলেছে। পরবর্তী কালে শ্রবণ সংক্রান্ত সমস্যায় এই থেরাপি কাজ করবে বলেই তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
‘অডিটরি নিউরোপ্যাথি’ কী?
এটি আসলে জিনগত একটি রোগ। ‘ওটিওএফ’ বা ওটোফারলিন জিনে কোনও সমস্যা থাকলে কানে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। এই জিনটি থেকে একটি প্রোটিন নিঃসৃত হয়, যা মস্তিষ্কের এবং কানের সঙ্গে যুক্ত স্নায়ুর কর্মকাণ্ড সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। সদ্যোজাতটির ক্ষেত্রেও এই জিনটির কোনও সমস্যা ছিল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জিন থেরাপি করার ৪ সপ্তাহ পর থেকেই শিশুকন্যাটির শ্রবণশক্তি ফিরতে শুরু করে। ব্যাপক উন্নতি লক্ষ করা যায় ২৪ সপ্তাহ পর থেকে।