আপনার নতুন ছবিতে আপনি নাকি ডাকসাইটে এক মহিলা রাজনীতিবিদ?
হ্যাঁ, যাকে বলে ট্রু ব্রিড পলিটিশিয়ান। ‘বাবুমশাই বন্দুকবাজ’ হিন্দি ছবিতে আমার চরিত্রটা একদম আজকালকার দিনের পলিটিশিয়ান। পলিটিক্সের জন্য যা করতে হয়, সেটা ও করে। খুব গালিগালাজ করে। শি মিনস হোয়াট শি সেজ। দেখতে বেশ অ্যাট্রাকটিভ।
অ্যাট্রাকটিভ বলতে ও কি স্টিলেটোস পরে, না চপ্পল?
(হাহাহা) হাওয়াই চপ্পল পরে না। স্টিলেটোসও পরে না।
অ্যাট্রাকটিভ বলছেন তাই জিজ্ঞেস করছি। কী ধরনের পোশাক? বাইলুমের শাড়ি? নাকি কাঞ্জিভরম?
তাঁতের শাড়ি পরে। মহিলা বিবাহিতা।
ছেলেমেয়ে আছে?
নেই। হাজব্যান্ড এক সময় পলিটিক্স করত। এখন অসুস্থ। ওর কাজটাই এই মহিলা এখন করে। নাম সুমিত্রা দেবী। লোকে ডাকে বড়দি।
নেগেটিভ শেডসের চরিত্র?
শি ইজ গ্রে। ডাকাবুকো মহিলা।
‘আঁধি’র সুচিত্রা সেন, ‘সাত্তা’র রবিনা, ‘রাজনীতি’র ক্যাটরিনা কইফের থেকে এই চরিত্র কতটা আলাদা?
মহিলা বাঙালি। পুরুলিয়ার এক পলিটিশিয়ান। ‘আঁধি’র সঙ্গে মিল নেই। অন্য দুটো ছবি আমি দেখিনি।
জননেত্রী বলা যায় কি?
হ্যাঁ। লোকজন ওকে মানে।
একডাকে ব্রিগেড ভর্তি হয়?
হ্যাঁ। ও পুরুলিয়ার নেত্রী। একডাকে ওখানে লোক জমা হয়ে যায়।
এই চরিত্রের মধ্যে দিয়ে কি আপনি কোনও বাস্তবের পলিটিশিয়ানের দিকে আঙুল তুলছেন?
না, তা নয়। এখন কিছুই বলব না। লেট পিপল অ্যাজিউম। দেখুন চরিত্রটা তো কাউকে কপি করছে না। মহিলা পলিটিশিয়ান মানেই...
...মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন!
সুমিত্রা দেবী তো বিবাহিতা। মহিলা পলিটিশিয়ান হলেই যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিল থাকবে তা তো নয়। ও হল জাঁদরেল পলিটিশিয়ান।
এই রকম একটা চরিত্র কি আপনার ইমেজে এফেক্ট করতে পারে? একটু ঝুঁকি নিয়ে ফেলছেন কি?
(একটু থেমে) মে বি। আই ডোন্ট কেয়ার। আমি অভিনেত্রী। তাই ভাল চরিত্র পেলে আমি সেটা করবই।
অনস্ক্রিন আপনি বুঝিয়ে দিচ্ছেন আসল পলিটিশিয়ান কেমন হওয়া উচিত নয়। এ ছাড়া নিজে এখন খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সোশ্যাল ওয়ার্ক নিয়ে। এই দুটো ব্যাপার কি আপনার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার দিকে ইঙ্গিত করছে না?
‘বাবুমশাই বন্দুকবাজ’ করলে আমার পলিটিক্সে ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে।
লোকে তো বলছে যে আপনি এক পা বাড়িয়ে আছেন...
কারণ পলিটিক্সে ঢুকলে সবাই ভাববে আমি বাস্তবে ওই চরিত্রের মতন।
কেন? এটা তো হতে পারে যে আপনি চরিত্রটা করে বুঝিয়ে দিতে চাইছেন আসল পলিটিশিয়ানের কী কী করা উচিত নয়...
আমি মনে করি রিয়েল পলিটিক্সের এক্সটেনশনই সোশ্যাল ওয়ার্ক।
কিছু দিন আগে আপনার ‘পুনশ্চ’ মুক্তি পেল। তার পর বলা নেই কওয়া নেই আপনি কলকাতা থেকে উধাও হয়ে গেলেন। সাফারি নিয়ে চলে গেলেন গ্রামে। কেন?
আগেও সমাজসেবা করেছি। আপনারা জানতে পারতেন না। আমি আজ ছ’বছর ধরে তিন-চার জন বাচ্চাকে বাড়িতে রেখে, স্কুলে পড়িয়ে মানুষ করছি। কেউ জানে? যখন সিনেমা করতে শুরু করি তখন থেকে অনেক বাচ্চার পড়াশোনার খরচ দিয়েছি। কেউ জানে? কত বছর ধরে টিউশন ফিজ দিই। এ তো গেল নিজের কথা। যেটা আজ খুব ভাল লাগে তা হল যখন দেখি আমাদের এনজিওর খোলা একটা স্কুলে কাজ শিখে একটা গ্রামের দশটা মেয়ে ইসিজি মেশিন চালাতে শিখেছে। আমি যে পাঁচটা বছর মুম্বইতে গাধার মতো খেটে এসেছি, যে টাকা রোজগার করেছি, সেটা ব্যাঙ্কে রেখেছি। আজ সেই জমানো টাকা থাকার জন্যই কম কাজ করেও আমার চলছে। একটা সময় ছিল যখন ‘হ্যালো রূপা বলছি’ (দৈনিক রেডিয়ো শো) আর ‘অগলে জনম মোহে বিটিয়া হি কিজো’ (দৈনিক টেলিভিশন শো) একসঙ্গে করেছি। অক্লান্ত পরিশ্রম। তখন আমার পেশা বা সময় সে সুযোগ দেয়নি যে আমি ফিজিক্যালি গিয়ে সমাজসেবা করব। এখন সেটা পারি। এই তো সে দিন হঠাৎ মৌসুনি গ্রামে চলে গেলাম সাহায্য করতে। টাকা তুললাম। দেড়শো কিলো চাল কিনলাম।
আমার জামাইবাবু একটা সাফারি গাড়ি আর ড্রাইভার দিয়ে দিল। সেটা নিয়ে চলে গেলাম গ্রামে। পথে কিনে নিলাম চিঁড়ে, মুড়ি, বাতাসা। কোমরে কী অসহ্য ব্যথা। তবু গেলাম। এই শক্তিটা মনে হয় বাবার থেকে পেয়েছি। ফেব্রুয়ারি মাসে বাবা মারা গিয়েছেন। জানেন, আজও বাবার সঙ্গে আমি রোজ কথা বলি!
কিন্তু এই কাজের চাপে বেশ কিছু অভিনয়ের সুযোগ ছেড়েও দিয়েছেন!
তেমন ভাল রোল আমার কাছে ক’টা আসে? করতে ইচ্ছে করে এমন রোল তো হয়। কিন্তু আমাকে ডাকে না। কেন জানি না। এটা ঠিক যে গত বছর অন্তত আটটা ভাল রোল এসেছিল। করিনি।
গত সেপ্টেম্বরে ‘পুনশ্চ’র শ্যুটিং হয়েছিল। তার পর আট মাস শ্যুটিং করিনি। তখন আমার প্রায়োরিটি ছিল ছেলের পরীক্ষা।
পরীক্ষা তো শেষ হয়ে গিয়েছে কবে। কিন্তু ‘পুনশ্চ’ রিলিজ করার পরে তো আপনার কলকাতাতে থাকার কথা। আপনি তখন নো-নেটওয়ার্ক জোনে। আপনি কি তা হলে উত্তরটা জানেন না যে কেন আপনার কাছে ভাল ভাল রোল আসে না?
দেখুন, ‘বাবুমশাই বন্দুকবাজ’য়ের পরিচালক কুশন নন্দী তো আমাকে খুঁজে খুঁজে বের করেছে। ওরা যদি আমাকে ১৫ বার ফোন করে থাকে, তা হলে আমি ৪ বার উত্তর দিয়েছি।
দায়টা কার? পুরোটাই পরিচালকদের?
(হাসি) বিশ্বাস করি আপনি সেটাই করবেন, যাতে লোকে আপনাকে চায়। তা ছাড়া এটা আমি মানতেই পারি না কলকাতায় কোনও ভাল পরিচালক একটা ভাল রোলের জন্য আমাকে চেয়ে পায়নি। অঞ্জন দত্ত একটা ছবির কথা বলেছে। করলে ওটা ও আমাকে নিয়ে করবে। কলকাতায় আর ক’জন পরিচালক? কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, রীনাদি...
হয়তো অনামী কিন্তু দারুণ আইডিয়া। তিনি তো আপনার পিছনে গ্রামে গ্রামে ঘুরতে পারবেন না...
(হাসি) একদম নতুন ডিরেক্টর হলে কাজ করতে একটু ভয় পাই। মাঝখানে সাউথ ইন্ডিয়া থেকে একটা ফ্যান্টাস্টিক রোল এসেছিল। ছবিতে এমন একটা ফিজিক্যাল এক্সপোজার ছিল যেটা আমি করতে পারিনি। আমাকে কেউ ভাল রোলের জন্য খুঁজে দেখুক পায় কি না।
কিন্তু ১৫ বার ফোন করলে ৪ বার উত্তর দেওয়া। এটা কী...
...কনফিডেন্স?
না, ওভার-কনফিডেন্স বলব।
(হাসি) না, না, না।
কেন ভাবলেন যে কোনও পরিচালক আপনার জন্য তা-ও বসে থাকবেন? দক্ষ অভিনেত্রীরাও তো ছুটছেন ভাল রোলের জন্য...
আমার কপালটা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
দানে দানে পে লিখা হ্যয়...
...খানেওয়ালে কা নাম।
তা হলে আর জিজ্ঞেস করবেন না কেন ভাল রোল আপনার কাছে আসছে না...
হয়তো নেই আমার কপালে। তবে কলকাতাতে এমন কোনও ভাল ডিরেক্টর (যাকে আমি ভাল মনে করি) আমাকে ভাল রোল দিতে চেয়ে পায়নি, এটা কি হয়েছে? হয়নি।
কেউ কেউ তো বলছে যে হঠাৎ আপনার এই অ্যাক্টিভ সোশ্যাল ওয়ার্কে থাকার কারণ হল আপনার রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা...
রাজনীতিতে জয়েন করার অফার আমার কাছে ২০ বছর ধরে এসেছে। ভারতে এমন কোনও রাজনৈতিক দল নেই, যারা আমাকে অফার দেয়নি। ১৯৮৮ থেকে অফার আসছে। দিল্লি-মুম্বইয়ের অনেককে রাগিয়ে ফেলেছিলাম অফারগুলো না নিয়ে। একবার এক বিখ্যাত পরিচালক তাঁর ফিল্ম থেকে আমাকে বের করে দিয়েছিলেন কারণ তাঁর অনুরোধে আমি একটা পার্টিতে জয়েন করিনি!
সবাই তো ‘না’ নিতে পারেন না। আরও এ রকম কিছু ঘটনা আছে?
গোটা দু’বছর ধরে আমার কিছু ছবি শেষ রাউন্ডে পৌঁছেও অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে না। রাত চারটে অবধি ঠিক থাকছে। কিন্তু পরের দিন শুনছি যে আমার ছবিটা অ্যাওয়ার্ড পাবে না। ‘পুনশ্চ’র জন্য অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে পাল্টে গেল। পরের দিন কাগজে দেখলাম আমি পাইনি। তবে আর এ সব নিয়ে ভাবি না। আমার অভিনয় দেখে কেউ তো বলতে পারে না যে আমি মন দিয়ে কাজ করিনি! যতক্ষণ না সেটা বলতে পারছে, আমি জানব আমার কাজ লক্ষ লক্ষ অ্যাওয়ার্ড পেয়ে গিয়েছে।
আপনি এনজিও-র সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু তার একটা লিমিটেড ফান্ড আছে। আগে পলিটিক্স জয়েন করার অফার ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখন মনে হয় না যে পলিটিক্স জয়েন করলে আপনি সমাজসেবার কাজটা আরও ভাল করে করতে পারবেন?
সমাজসেবা আমি করে যাব। ইফ আই গেট আ পলিটিক্যাল ব্যাকিং, আই উইল। ইফ আই ডোন্ট গেট ইট, আই স্টিল উইল। আমার কাছে রাজনীতিতে যোগ দেওয়াটা হল সমাজসেবার একটা এক্সটেনশন।
এই যে কেউ কেউ বলে থাকেন যে রাজনীতি মানেই হয়তো নোংরা একটা জায়গা। এমনটা তা হলে ভাবেন না আপনি...
অনেক বছর অবধি ভাবতাম পলিটিক্স নোংরা জায়গা। এখন তা ভাবি না। বরং ভাবি যদি ভাল মানুষ না আসে, তা হলে কী করে হবে? আমি বলব না সব রাজনীতিকই খারাপ। আমার গড়জঙ্গলে যদি কেউ রাস্তা করে দেয়, আমার সুন্দরবনে যদি কেউ আলো এনে দেয়, আমি তার সঙ্গে হাত মেলাব।
একটা পার্টি যদি গড়জঙ্গলে রাস্তা করে আর অন্য পার্টি যদি সুন্দরবনে করে, তা হলে? দু’টো পার্টির সঙ্গে তো একসঙ্গে কাজ করতে পারবেন না...
যে পার্টি আমাকে দু’টো জায়গাতেই কাজে হেল্প করবে, তাদের সঙ্গে থাকব।
আদর্শের দিক থেকে নির্দিষ্ট কোনও পার্টির প্রতি একটু বেশিই ঝোঁক আছে আপনার?
না, নেই। তবে এটুকু জানি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পার্টির সঙ্গে আমি কোনও দিন হাত মেলাব না।
ওয়ান রুলড আউট...
তৃণমূলে হাত মেলাব না এটা আমি কথা দিতে পারি। কারণ একটাই। বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে। কলকাতা শহরে যে রাস্তায় রাস্তায় একটা করে চকচকে স্ট্রিটলাইট রয়েছে, সেখানে আবার ত্রিফলা বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার ছায়া পড়ছে রাস্তায়। কেন? ১৫-১৬ কোটির বেশি টাকা দিয়ে সাদার্ন অ্যাভেনিউয়ের লেক পুনর্নির্মাণ হয়েছে। আরও কিছু টাকা দিয়ে ফাউন্টেন তৈরি হয়েছে। সে ফাউন্টেন আর কাজ করে না। কেন? সুন্দরবনে একটু আলো লাগবে। সব ত্রিফলা লাইট নিয়ে সুন্দরবনে দেওয়া যায় না? যেখানে সাপের ভয় আছে। যে জায়গা বছরে ৪-৫ মাস জলে ডুবে থাকে। কলকাতাকে লন্ডন বানাচ্ছি আমরা? পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি থেকে পেতে পেতে কাজ করতে ভুলে যাচ্ছে। মিস্ত্রিদের টাইমিং এখন কমতে কমতে সকাল ১০টা থেকে ৪টে। ছুটির টাইম কিন্তু কমেনি।
আপনি কি বলতে চাইছেন যে আগেই বেশ ভাল ছিল?
১০০ শতাংশ। আই ওয়ান্ট সিপিএম টু কাম ব্যাক। ৩৪ বছর যে লোকগুলো শাসন করেছে তারা যত না হ্যাম্পার করেছে, এই তিন বছরে তার থেকে পঞ্চাশ হাজার গুণ খারাপ হয়ে গিয়েছে আমাদের পশ্চিমবঙ্গে। মানুষ আজকাল কাজ করে না। তারা দানের আর দয়ার ওপর বিচরণ করছে।
আপনি তো তৃণমূলের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং পার্টির কাছের মানুষ দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘নাটকের মতো’ করলেন। শেখর দাশের পরিচালনায় ‘নয়নচাঁপা’ করলেন। এই সব বিষয়ে ওঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে?
না, হয়নি। কেউ কোনও দিন জিজ্ঞেস করেছে আমাকে এই নিয়ে? আই হ্যাভ নাথিং এগেনস্ট তৃণমূল। কিন্তু যে কালচারটা প্রোপাগেট করা হচ্ছে, সেটা নিয়ে সমস্যা আছে। আমি মনে করি না কোনও রাজনৈতিক দলের নিজের সুবিধের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করা উচিত।
ধর্ম প্রসঙ্গে বিজেপির অবস্থান নিয়ে আপনার কী মত? গোধরা দাঙ্গা, বাবরি মসজিদ...
পুরনো সময়ে কবে কী হয়ে গিয়েছে তা নিয়ে কথা বলতে পারব না। কারণ আমি অতটা নলেজেবল নই এ বিষয়ে। এখন বিজেপির যাদের দেখি, মনে হয় দে ওয়ান্ট টু ডু ওয়ার্ক। নরেন্দ্র মোদীর কিছু কথা আমার পরে ভাল লেগেছে।
অনেকের ধারণা সিপিএম-এর থেকে আপনাকে অফার করা হয়েছিল...
সিপিএম ইজ দ্য ওনলি পার্টি যারা সরাসরি আমাকে পলিটিক্সে জয়েন করার কথা বলেনি। এক সময় আর্টিস্ট ফোরামের সেক্রেটারি ছিলাম। আমার খুব ইচ্ছে ছিল আর্টিস্টদের একটা ট্রেনিং স্কুল হবে। গভর্নমেন্ট অ্যাফিলিয়েটেড স্কুল হবে। আমাকে বুদ্ধবাবু (বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য) বলেছিলেন, ‘তোমার এটা করার এত ইচ্ছে। তুমি এটা করো। আর্টিস্ট ফোরামের জন্য কী দরকার বলো। সরকার থেকে সাহায্যের দরকার হলে আমি সেটার চেষ্টা করব।’ আমি নিইনি। কারণ আমি জানি কোনও ফেভার নেওয়া যায় না। ফ্রিতে জমি নেওয়া, কম টাকাতে জমি নেওয়া মানে ঘাড়টাকে বিকিয়ে দেওয়া। আমার ঘাড় আমি পৃথিবীর কারও কাছে বিকোতে পারব না।
আজকের দিনে পলিটিক্সে সারভাইভ করতে গেলে এই ঘাড় সোজা রাখাটা অসুবিধার হয়ে যেতে পারে না?
অসুবিধার তো। তাই এত সময় নিয়েছি পলিটিক্স জয়েন করার জন্য।
সর্বজনবিদিত খবর যে, আপনাকে নাকি বিজেপি অফার দিয়েছে...
(প্রচণ্ড হাসি) আমি জানি না।
হাইপোথেটিক্যালি আপনাকে দু’টো চয়েস দেওয়া হল। আপনি চান সিপিএম ফিরে আসুক। ধরুন ডিরেক্ট অফার এল সিপিএমের থেকে। বিজেপি থেকেও এল। হয়তো কংগ্রেস থেকেও এল।
অল আই নো, উই নিড রিয়েল চেঞ্জ।
আপনি কি ‘অচ্ছে দিন’য়ের স্বপ্ন দেখছেন?
(হেসে) কী দুষ্টু প্রশ্ন! আই ওয়ান্ট আ হ্যাপি পশ্চিমবঙ্গ। যেখানে গ্রামের রাস্তায় আলো থাকবে। যেখানে লোকে কাজ করবে। বাঙালিরা আজকাল কাজ করতে ভুলে গিয়েছে। পলিটিক্সে জয়েন করলে গ্ল্যামারের জন্য করব না। লালবাতির গাড়ি আমার চাই না।
ফ্রি ফরেন ট্যুর, বিজনেস ক্লাস টিকিট চাই না। সত্যিকার কাজের সুযোগ পেলে আমি পলিটিক্স জয়েন করতে রাজি।
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল