bollywood

বিদেশে ট্যাক্সিচালানো থেকে উন্মাদআশ্রমে দীর্ঘ চিকিৎসা, বহু বছর নিখোঁজ আশির দশকের এই রোমান্টিক নায়ক

চেষ্টা করেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরে আসার। কিন্তু সফল হননি, কারণ মানসিক রোগের চিকিৎসা করিয়ে আসা অভিনেতাকে কাজ দিতে রাজি ছিল না বলিউড।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ১১:০১
Share:
০১ ২০

বলিউড থেকে বিস্মৃত তারকার সংখ্যা কম নয়। কিন্তু তিনি নিখোঁজ। শুধু ইন্ডাস্ট্রিই নয়। কেউ-ই জানেন না কোথায়, কী অবস্থায় আছেন অতীতের জনপ্রিয় নায়ক রাজকিরণ মেহতানি।

০২ ২০

আশির দশকের জনপ্রিয় এই রোমান্টিক নায়কের জন্ম মুম্বইয়ের এক সিন্ধি পরিবারে। ১৯৪৯-এর ৫ ফেব্রুয়ারি। প্রথম অভিনয় সারিকার বিপরীতে, ‘কাগজ কি নাও’ ছবিতে। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৫ সালে।

Advertisement
০৩ ২০

তবে রাজকিরণ খ্যাতির শীর্ষে এসেছিলেন আশির দশকে। ১৯৮০ সালে মুক্তি পায় সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘কর্জ’। ঋষি কপূর, টিনা মুনিম, সিমি গারেওয়ালের সঙ্গে এই ছবির আর এক তারকা ছিলেন রাজকিরণ। বক্স অফিসে সুপারহিট হয় ছবিটি।

০৪ ২০

বলিউডে পরিচিতি পাওয়ার পরে নায়ক ও পার্শ্বনায়ক, দুই ভূমিকাতেই অভিনয় করেছেন রাজকিরণ। তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘অর্থ’, ‘বসেরা’, ‘ওয়ারিস’, ‘বোম্বাই কি মহারাজা’, ‘মান অভিমান’, ‘মনোকামনা’, ‘নজরানা প্যায়ার কা’, ‘পতিতা’, ‘সজন মেরে ম্যায়ঁ সজন কি’ এবং ‘ইয়ে ক্যায়সা ইনসাফ’।

০৫ ২০

কেরিয়ারে চলার পথে বেশির ভাগ ছবিতেই রোমান্টিক যুবকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর এই ইমেজ খুবই জনপ্রিয় ছিল দর্শকদের কাছে। কিছু ছবিতে অবশ্য ছক ভেঙেছিলেন তিনি।

০৬ ২০

‘জাস্টিস চৌধুরী’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন নির্দয় স্বামীর ভূমিকায়। যদিও পরে জানা যায় পরিস্থিতির চাপে তাঁকে সেরকম হতে হয়েছিল।

০৭ ২০

‘এক নয়া রিস্তা’ ছবিতে রাজকিরণ ছিলেন সুরাসক্ত ব্যবসায়ীর ভূমিকায়। তিনি-ই আবার বিয়ে করেন এক যৌনকর্মীকে। এই দু’টি ছবিতেই তাঁর অভিনীত চরিত্রদুটির আলাদা শেড ছিল।

০৮ ২০

আশির দশকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা রাজকিরণের জীবনের পট আচমকাই পাল্টে যায় পরের দশকে। কমতে থাকে ছবিতে কাজের সুযোগ। বাধ্য হয়ে তিনি দূরদর্শনে অভিনয় করেন।

০৯ ২০

তাঁকে দেখা গিয়েছিল নব্বইয়ের দশকে শেখর সুমনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘রিপোর্টার’-এ। ১৯৯৬ সালে ‘কলিঙ্গ’ ছবির কাজ মাঝপথেই ছেড়ে দেন তিনি। তার পরে রাজকিরণের কিছু ছবি মুক্তি পেয়েছিল, যে গুলির শুটিং আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।

১০ ২০

এটাই ছিল পর্দায় রাজকিরণের শেষ আবির্ভাব। পরের দশকে তিনি হারিয়ে যান। মহেশ ভট্ট এক বার সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ২০০০ সালে তিনি রাজকিরণের পরিজনদের কাছে তাঁর সন্ধান করেছিলেন। তার পরে নাকি তিনি জানতে পারেন মুম্বইয়ের বাইকুল্লায় এক উন্মাদআশ্রমে আছেন অভিনেতা!

১১ ২০

চিকিৎসার পরে ফিরে এসেছিলেন রাজকিরণ। চেষ্টা করেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরে আসার। কিন্তু সফল হননি, কারণ মানসিক রোগের চিকিৎসা করিয়ে আসা অভিনেতাকে কাজ দিতে রাজি ছিল না বলিউড।

১২ ২০

এত ছবিতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করা রাজকিরণ কার্যত কোনও কাজই পাচ্ছিলেন না। যা সুযোগ পাচ্ছিলেন, তা ছিল তাঁর জনপ্রিয়তার তুলনায় নিতান্ত সামান্য। এর প্রভাব পড়তে থাকে তাঁর পারিবারিক জীবনেও।

১৩ ২০

কেরিয়ারে ব্যর্থতার জেরে রাজের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী রূপার সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। ডিপ্রেশনের শিকার হন পর্দার রোমান্টিক নায়ক। ঘরে বাইরে বিধ্বস্ত রাজ কিরণ যোগাযোগ করেন আমেরিকা প্রবাসী ভাই গোবিন্দ মেহতানির সঙ্গে। তিনি বন্দোবস্ত করার পরে মানসিক হতাশার চিকিৎসা করাতে পরিবারের সঙ্গে আমেরিকা পাড়ি দেন রাজ।

১৪ ২০

আমেরিকায় গিয়ে চিকিৎসার খরচ যোগাড় করতে রাজ কিরণ কাজ করতেন ট্যাক্সিচালক হিসেবে। তাঁকে নাকি নিউ ইয়র্কে ক্যাব ড্রাইভার হিসেবে দেখাও গিয়েছিল। সে কথা নিজের ফেসবুকে লেখেন অভিনেত্রী দীপ্তি নাভাল।

১৫ ২০

দীপ্তি জানান, দীর্ঘদিন রাজ কিরণের কোনও খবর না পেয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। সংশয় দূর করতে তিনি যোগাযোগ করেছিলেন রাজের ভাই গোবিন্দের সঙ্গে। তিনি দীপ্তিকে জানান, রাজ সে সময়ে আটলান্টায় একটি অ্যাসাইলামে ছিলেন। সেখানেই কাজ করে নিজের চিকিৎসার সংস্থান করতেন।

১৬ ২০

এর পর ধীরে ধীরে বলিউডে প্রায় মুছেই যায় রাজকিরণের নাম। আবার ভেসে ওঠে প্রয়াত ঋষি কপূরের দৌলতে। ২০১১-য় তিনি নিউ ইয়র্কে গিয়ে ‘কর্জ’ ছবিতে তাঁর সহঅভিনেতা রাজ কিরণের খোঁজ করেন। গোবিন্দ মেহতানির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন ঋষি।

১৭ ২০

ঋষি জানান, তাঁকে গোবিন্দ বলেছেন, আমেরিকায় এসেও খারাপ সময় রাজের পিছু ছাড়েনি। সেখানেও আর্থিক সমস্যার সুরাহা হয়নি। এর ফলে তিক্ততার আগুনে যেন ঘি পড়ে। তাঁকে ছেড়ে স্ত্রী তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে চলে যান। এরপরই আটলান্টার মানসিক চিকিৎসালয়ে জায়গা হয় রাজ কিরণের।

১৮ ২০

ঋষি কপূরের এই দাবি নস্যাৎ করে দেন রাজের বড় মেয়ে ঋষিকা। তিনি বলেন, তাঁর বাবা হঠাৎই কোথাও নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। নিউ ইয়র্ক পুলিশ তাঁর সন্ধান করছে। পরিবারের তরফে গোয়েন্দাও নিয়োগ করা হয়েছে রাজের খোঁজে।

১৯ ২০

এর পর কেটে গিয়েছে নয় বছর। রাজ কিরণ থেকে গিয়েছেন ‘নিখোঁজ’ হয়েই। তাঁর দুই মেয়ে এখন বিবাহিত। দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছেন রাজের স্ত্রী রূপাও।

২০ ২০

শুধু সন্ধান নেই রাজ কিরণের। কোন দুঃখ তিনি লুকিয়ে রেখেছিলেন, ব্যর্থ নায়কের কাছ থেকে ইন্ডাস্ট্রি জানতে চায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement