ছপকে দীপিকার লুক।
প্রায় দু’বছর পরে বড় পর্দায় ফিরছেন দীপিকা পাড়ুকোন। শুধু অভিনেত্রী হিসেবে নয়, প্রযোজকের নতুন দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে। তাই তাঁর কেরিয়ারে ‘ছপাক’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র নিগ্রহের ঘটনায় প্রতিবাদী পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী। ছবির প্রচারেই তাঁর দিল্লি যাওয়া। যে লক্ষ্মী আগরওয়ালের চরিত্র তিনি পর্দায় ফুটিয়ে তুলবেন, তাঁর মুখে অ্যাসিড ছোড়ার ঘটনাটি বাস্তবে দিল্লিতেই ঘটেছিল। দীপিকার এই পদক্ষেপ অনেকের মতে ‘পিআর স্টান্ট’। অনেকের মতে, ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এর পরে যে কথা উঠবে, তা তিনি ভাল করেই জানতেন। টুইটারে সমান্তরাল ভাবে চলছে #আইসাপোর্টদীপিকা এবং #বয়কটদীপিকা-র ট্রেন্ড।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু টুইটে লিখেছেন, ‘‘দীপিকার জেএনইউতে যাওয়ার পিছনের গণিতটা বোঝা সহজ। ওঁর ফলোয়ারের সংখ্যা অনেক। দশ শতাংশ ওকে বয়কট করা মানে ওর ছবির দর্শক আশি শতাংশ বেড়ে যাওয়া। অনেকেই দু’বার করে ছবিটি দেখবেন...’’ বিতর্ক যে বক্স অফিসে লক্ষ্মীলাভে সহায়ক, তার বড় প্রমাণ গত বছরের ‘কবীর সিং’। দীপিকার কেরিয়ারেও এই ধরনের বিতর্ক প্রথম বার নয়।
২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘পদ্মাবত’-এর শুটিংয়ের সময় থেকে ছবি রিলিজ়ের পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। পরিচালকের থাপ্পড় খাওয়া, করণী সেনাদের দীপিকার মুণ্ডচ্ছেদের হুমকি, ছবির নাম পরিবর্তন, গানে দীপিকার অনাবৃত অংশ ঢেকে দেওয়া... জল গড়িয়েছিল বহু দূর। তবে ছবি বক্স অফিসে ধুন্ধুমার ব্যবসা করেছিল।
গত পুজোয় রিলিজ় হওয়া বাংলা ছবি ‘গুমনামী’র ব্যবসাতেও বিতর্ক কিন্তু ভালই মাইলেজ় দিয়েছিল। ছবি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল দর্শকের। এর আগে আমির খানের ‘পিকে’ ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দিয়েছে বলে এক শ্রেণির মানুষ আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাতে ছবির ব্যবসায় অবশ্য প্রভাব পড়েনি।
তবে বিতর্কের ভরসায় ছবি যে সব সময়ে চলে না, সে দৃষ্টান্তও বলিউডে রয়েছে। ২০১৫ সালে শাহরুখ খানের ‘অসহিষ্ণুতা’ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর পরই রিলিজ় করেছিল রোহিত শেট্টির ‘দিলওয়ালে’। সে ছবি কিন্তু বক্স অফিসে চলেনি। জাতপাতের ভিত্তিতে শিক্ষায় সংরক্ষণের বিষয়টি তুলে ধরায় প্রকাশ ঝায়ের ‘আরক্ষণ’ ছবিটি উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, অন্ধ্রপ্রদেশে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছবিটিও চলেনি।
এই মুহূর্তে দেশের পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগপূর্ণ। বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতাদের অনেকেই যেখানে মন্তব্য পর্যন্ত করছেন না, সেখানে দীপিকার সশরীর ক্যাম্পাসে উপস্থিতি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে এর জন্য তাঁর ছবি মাশুল গুনবে, না কি দর্শক হল ভরিয়ে দেবেন, তার জন্য অপেক্ষা আর একটা দিনের।