শোকবার্তা দিলেন অনিরুদ্ধ, ঋতুপর্ণা, মুখ্যমন্ত্রী, পরমব্রত, সুদীপ্তা
তিন বার জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী সুরেখা সিক্রির মৃত্যুতে হিন্দি ছবির দুনিয়ার মতোই শোকস্তব্ধ বাংলা ছবির জগৎ। শোকমগ্ন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে শোকবার্তায় মমতা জানিয়েছেন, প্রতিভাময়ী অভিনেত্রীর মৃত্যুতে তিনি মর্মাহত। তাঁর অভাব আজীবন অনুভব করবে রুপোলি দুনিয়া। পাশাপাশি তিনি অভিনেত্রীর পরিবার এবং অনুরাগীদেরও সমবেদনা জানিয়েছেন।
মঞ্চ, ছোট পর্দা, বড় পর্দায় অনায়াস গতিবিধি ছিল নাসিরুদ্দিন শাহের প্রাক্তন শ্যালিকার। সেই তিনিই চলে গেলেন অর্থাভাবে, কাজের অভাবে, রোগগ্রস্ত অবস্থায়। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে আক্ষেপ করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও। জানিয়েছেন, এক জন বহুমুখী, সাহসী অভিনেত্রীর প্রয়াণে তিনি শোকস্তব্ধ, হতবাক। ‘‘যাঁরা সুরেখা সিক্রিকে চেনেন তাঁরা জানেন, অভিনেত্রীর প্রতিটি অভিনয় প্রত্যেক অভিনেতার কাছে অনুপ্রেরণামূলক। তিনি অনেক ভাল ভাল কাজ দিয়ে গিয়েছেন দর্শকদের। যেমন ‘মাম্মো’, ‘তমস’, ‘বধাই হো’ ইত্যাদি। নিজগুণেই তিনি আমাদের কাছে বহুমূল্য ‘উপহার’ হয়ে উঠেছিলেন। আমাদের দুর্ভাগ্য সেই দামি ‘উপহার’ আমরা হারিয়ে ফেললাম। সুরেখাজির মৃত্যু শিল্পীদের কাছে, অভিনয় দুনিয়ার কাছে অপূরণীয় ক্ষতি," জানালেন ঋতুপর্ণা।
এই জায়গা থেকে আক্ষরিক অর্থে ‘লজ্জিত’ বাংলা এবং হিন্দি ছবির জনপ্রিয় পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। তিনিও সুরেখা সিক্রির গুণমুগ্ধ ভক্ত। আনন্দবাজার অনলাইনকে অনিরুদ্ধ জানিয়েছেন, প্রবীণ অভিনেত্রীর এ ভাবে চলে যাওয়া একেবারেই মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
মর্মাহত আরেক জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীও। একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, তারকা পুজোর দাপটে কি ম্লান হয়ে যান অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীরা? সুদীপ্তা মনে করেছেন, সেটাই সম্ভবত ঘটেছে সুরেখা সিক্রির সঙ্গে। তাই প্রতিভাবান হয়েও তিনি শেষজীবনে অর্থাভাবে ভুগেছেন। তাঁর অভিনয় দক্ষতার সঠিক মূল্যায়ন হলে তাঁর উপার্জনে ভাটা পড়ত না। পাশাপাশি অভিনেত্রী এও জানিয়েছেন, এই প্রজন্ম প্রচণ্ড পেশাদার। প্রবীণদের সঙ্গে কাজের দুনিয়ায় অনেক সময়েই তাঁদের সহাবস্থানে সমস্যা দেখা দেয়। যে সমস্ত প্রবীণ অভিনেতা যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারেন, তাঁরা টিকে যান। যাঁরা পারেন না তাঁরা সরে যেতে বাধ্য হন।
স্বনামধন্য অভিনেত্রীর মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘‘অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কেউই বাঁধা মাইনের কাজ করেন না। আমাদের এই ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হয় প্রতি মুহূর্তে।’’ তাই একটা বয়সের পর অভিনেতাদের জীবনে প্রবল নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়, জানালেন পরমব্রত।