ববি দেওল, সানি দেওল, অক্ষয় খন্না, শাহিদ কপূরের মতো প্রথম সারির অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন বিবেক শৌক। তাঁর অভিনয় দক্ষতা সকলেরই প্রশংসা কুড়িয়েছিল। তাঁর কাছেও অভিনয়ই ছিল ধ্যান-জ্ঞান। রোগা হতে গিয়ে জীবন থেকেই ছুটি নিতে হয়েছিল এই অভিনেতাকে।
বিবেকের জন্ম ১৯৬৩ সালে চণ্ডীগড়ে। ইন্দো-সুইস প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি।
থিয়েটার এবং টেলিভিশন দুটোতেই সমান্তরাল ভাবে অভিনয় চালিয়ে গিয়েছেন কেরিয়ারের শুরুর দিকে। পরে বড় পর্দাতেও যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
কমেডিয়ান যশপাল ভাট্টির সঙ্গে তাঁকে দূরদর্শনের ‘উল্টা পুল্টা’, ‘ফ্লপ শো’-এ দেখা গিয়েছিল।
জনপ্রিয় কমেডিয়ান যশপালের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দর্শকদের হাসিয়ে গিয়েছেন তিনি।
এক সময় যশপালের ছায়া সঙ্গী হয়ে উঠেছিলেন বিবেক। ১৯৯৮ সালে তিনি বড় পর্দায় প্রথম সুযোগ পান। প্রথম ছবি ছিল ‘বরসাত কি রাত’।
এর পর ‘গদর: এক প্রেম কথা’, ‘দিল্লি হাইটস’, ‘এতরাজ’, ‘৩৬ চায়না টাউন’, ‘হমকো দীবানা কর গয়ে’, ‘দিল হ্যায় তুমহারা’- মতো ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
১৯৯৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত চুটিয়ে কাজ করে গিয়েছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালের আশেপাশে আচমকাই তাঁর শরীর খারাপ হতে শুরু করে।
তিনি আগের চেয়ে অনেক মোটা হয়ে গিয়েছিলেন। নিজেকে এ রকম দেখতে একেবারেই পছন্দ করতেন না বিবেক। মানসিক ভাবে অনেক ভেঙে পড়তে শুরু করেছিলেন।
চটজলদি আবার আগের মতো নিজেকে করে তুলতে তিনি শেষে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। চটজলদি মেদ কমাতে গিয়ে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে থেমে যায় তাঁর জীবন-ঘড়ি।
২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি ঠাণের জুপিটার হাসপাতালের এক চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। লাইপোসাকশন করান।
অস্ত্রোপচার সফল হয়। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে বিবেকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।
অস্ত্রোপচারের কিছু ক্ষণের মধ্যেই কোমায় চলে যান বিবেক। ৭ দিনের মাথায় ১০ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।
অস্ত্রোপচার সফল হওয়া সত্ত্বেও কেন এমন হল, তা ভাবিয়ে তুলেছিল চিকিৎসকদের। পরে যে তথ্য সামনে উঠে এসেছিল, তা সত্যিই বিস্ময়কর।
হৃদরোগের জন্য বহু বছর আগে থেকেই ওষুধ খেতেন তিনি। কিন্তু স্বাস্থ্য ফিরে পেরে এতটাই মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন যে চিকিৎসকদের কাছে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন করে গিয়েছিলেন।
লাইপোসাকশনের মতো বড় অস্ত্রোপচারের আগে এক জন রোগীর চিকিৎসার ইতিহাস চিকিৎসকদের কাছে জানানো খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়।
কিন্তু রোগা হওয়ার তাগিদে বিবেক সেই তথ্য সম্পূর্ণ গোপন করে গিয়েছিলেন। এমনকি ওষুধও খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এত বড় অস্ত্রোপচারের ধকল নিতে পারেনি তাঁর শরীর। অকালেই মারা যান তিনি।