সোনালির স্মৃতিচারণায় অনুপ। ফাইল চিত্র।
একটু আগেই খবরটা পেলাম। সোনালিদি আর নেই বিশ্বাস করতে পারছি না। শঙ্করদা আর সোনালিদির সঙ্গে আমার যে কত স্মৃতি তা বলে শেষ করতে পারব না। উনি ছিলেন আমার পরিবারেরই এক জন।
আমার প্রায় সিংহভাগ ছবিতেই সোনালিদি কাজ করেছেন। ‘হারজিত’, ‘ইনকিলাব’ থেকে শুরু করে ‘মহাগুরু’, ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই’— তালিকা শেষ হবে না। তখন আমার একাধিক ছবির শুটিং করতাম হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে। ওখানে সোনালিদি থাকা মানেই একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, হইহুল্লোড়, আড্ডা দেওয়া— দিদি যেন পুরো ইউনিটকে মাতিয়ে রাখেতন। ওর মেয়ে সাজি এবং এবং আমার ছেলে (বনি সেনগুপ্ত) একসঙ্গে ওখানে প্রচুর আড্ডা দিয়েছে। ওরা তো খুব ভাল বন্ধু।
পরিচালকের বাড়িতে লক্ষ্মী পুজোয় সোনালি, শঙ্কর, পিয়া। ছবি: সংগৃহীত।
এ রকম দিনে সোনালিদির পরিবার নিয়ে কতগুলো কথা না বললেই নয়। ২০০৫ সালে কলকাতার ই এম বাইপাসে আমি মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ি। তার পর শহরের একটা বেসরকারি হাসপাতালে আমাকে প্রায় দিন কুড়ি থাকতে হয়েছিল। তখন সোনালিদিরা থাকতেন গোলপার্কের কাছে। আমার পরিবার তখন গভীর ট্রমায়। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শঙ্করদার পরিবার। সোনালিদি খাবার রান্না করে দিতেন। আর শঙ্করদা গাড়ি করে সেই খাবার হাতপাতালে আমার কাছে পৌঁছে দিতেন। শঙ্করদার গাড়িতেই আমার পরিবার তখন যাতায়াত করত। আমি তখন ওঁদের নাম দিয়েছিলাম ‘শঙ্কর ট্র্যাভেলস অ্যান্ড সোনালি ক্যাটারার’। আজ এই কোম্পানির জুটিটা ভেঙে গেল।
আরও একটা ঘটনা মেন পড়ছে। ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই’ হিট করার পর এক বার আমার বাড়িতে একটা বিশাল সাকসেস পার্টির আয়োজন করেছিলাম। ওই পার্টিতে মিঠুনদা (চক্রবর্তী) এসেছিলেন। মনে আছে পার্টির মাঝেই মিঠুনদা সোনালিদির নামকরণ করলেন ‘পার্বতী’! আমরা তো সকেলই অবাক। দাদার কাছে কারণ জানতে চাইলে বলেছিলেন, ‘‘পার্বতী ছাড়া শঙ্করের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় নাকি।’’
শেষের দিকে আমার সঙ্গে সোনালিদির পরিবারের যোগাযোগ একটু কমে আসে। প্রায় তিন-চার বছর আগে আমার ‘জানবাজ’ ছবিতে কাজ করেছিলেন শঙ্করদা। তখন ওঁর থেকে দিদির খবর নিয়েছিলাম। পরে সোনালিদির শরীর যে খুব একটা ভাল নেই, সে খবরও পেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁর এই পরিণতি আমি আশা করিনি।