(বাঁ দিকে) টুইঙ্কল খন্না। সোনালী দাম্পত্যে ডিম্পল কাপাডিয়া ও রাজেশ খন্না (ডান দিকে) ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর বয়স তখন মাত্র আট। বিচ্ছেদ হয়ে গেল বাবা-মায়ের। তারকা দম্পতির সন্তান হিসাবে বড় হয়ে ওঠা এবং তার বিড়ম্বনা সহ্য করা কেমন, তা ভাল ভাবেই জানেন টুইঙ্কল খন্না। নব্বইয়ের দশকে অভিনেত্রী হিসাবে বলিউডে আত্মপ্রকাশ। কিন্তু তারপর নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন অন্য ভাবে। এখন তিনি লেখক, বলিউড তারকা অক্ষয় কুমারের ঘরণী। তাঁর বাবা একদা ছিলেন বলিউডের সুপারস্টার, রাজেশ খন্না। আর মা ডিম্পল কাপাডিয়া, সদ্য তরুণী নায়িকা প্রথম ছবি ‘ববি’-তেই দর্শকমনে তুলেছিলেন হিল্লোল।
খুব অল্প বয়সে ডিম্পল বিয়ে করে ফেলেন বয়সে অনেকটা বড় ‘সুপারস্টার’রাজেশকে। সেটা ১৯৭৩ সালের কথা। ১৯৭৪ আর ১৯৭৭ সালে জন্ম টুইঙ্কল এবং রিঙ্কির। কিন্তু ১৯৮২ সালেই মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি ফিরে যান ডিম্পল। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের সাক্ষী থাকেন টুইঙ্কল।
বেশ কিছু বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে টুইঙ্কল জানিয়েছিলেন, কী ভাবে সেই সময় কেটেছে তাঁদের। বাপের বাড়ি ফিরে গিয়ে অনেকটা লড়াই করতে হয়েছিল ‘একাকী মা’ ডিম্পলকে। টুইঙ্কল বলেছেন, “একটা ছোট্ট ঘরে আমরা সকলে থাকতাম। মা আর মাসি খাটে ঘুমোতেন। আমি আর বোন নীচে মেঝেতে একটা বিছানা করে ঘুমোতাম।”সেই সময় মেঝে থেকেই মুখ তুলে মাকে দেখতেন টুইঙ্কল। যেন ছোট্ট শিশু মায়ের দিকে মাথা উঁচু করে তাকিয়ে নিজের লক্ষ্যও স্থির করে ফেলেছিল।
টুইঙ্কল বলেছেন, “আমার লেখালিখিতে সব সময়ই উঠে এসেছে মহিলাদের লড়াইয়ের কথা। তাঁরা এই পৃথিবীতে নিজেদের খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা কী এবং কী হতে চান, তার মধ্যে সব সময়ই দ্বন্দ্ব চলে। আমার মায়ের লড়াই দেখে বুঝেছি, আসলে মেয়েরা কারও উপর নির্ভরশীল নয়। জীবনে পুরুষ থাকলেও হয়, কিন্তু সেটা শেষপাতে মিষ্টির মতো। কখনওই ক্ষুধার নিবৃত্তি নয়।”
গত কয়েক মাসে, বলিউড, টলিউডে যেন বিচ্ছেদের মরসুম শুরু হয়েছে। কেউ বিবাহিত, কেউ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন প্রেমের সম্পর্কে। কিন্তু হঠাৎই সেখানে ভাঙনের গুঞ্জন। এই তালিকায় যেমন রয়েছেন অভিষেক বচ্চন-ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন তেমনই রয়েছেন টলিপাড়ার যিশু সেনগুপ্ত-নীলাঞ্জনা শর্মা সেনগুপ্ত। দুই দম্পতিরই রয়েছে কন্যাসন্তান। ইদানীং যে কোনও অনুষ্ঠানে বা ভ্রমণে ঐশ্বর্যার সঙ্গী তাঁর কন্যা আরাধ্যা। সম্প্রতি কন্যাদের নিজের শক্তি হিসাবে সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন নীলাঞ্জনাও।
এই আবহে আরও একবার প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে টুইঙ্কলের জীবনের অভিজ্ঞতা। তিনি বলেছিলেন, “আমার মা ভোর ৫টার সময় ঘুম থেকে উঠতেন, শরীরচর্চা সেরে বেরিয়ে যেতেন শুটিংয়ে। তিন বেলা শুটিং সেরে বাড়ি ফিরতেন রাত ৯টায়। তবু তাঁর মুখের হাসিটি লেগেই থাকত অবিকল।”
টুইঙ্কলের সঙ্গে তাঁর মায়ের সম্পর্ক নিয়ে একবার কথা বলেছিলেন ডিম্পলও। তিনি বলেছিলেন, “বিচ্ছেদের সময় টুইঙ্কল যেন আমার মা হয়ে উঠেছিল। অতটুকু বয়সে কী ভীষণ পরিণত ছিল আমার মেয়েটা! সব সময় খেয়াল রাখত আমার। আমার সব থেকে কাছের বন্ধু।”