তৃপ্তি ডিমরি। ছবি: সংগৃহীত।
২০১৭তে ‘পোস্টার বয়েজ়’ ছবিতে অভিনেত্রী তৃপ্তি ডিমরির আত্মপ্রকাশ ঘটে। ‘লায়লা মজনু’ ছবিতে তৃপ্তির বলিষ্ঠ অভিনয়ের পরিচয় পাই, কিন্তু প্রচারের ছটায় তৃপ্তি আসেন ‘অ্যানিম্যাল’ ছবির মাধ্যমে। অবশ্য তৃপ্তির প্রথম অভিনয় ‘বুলবুল’ নামের এক ওটিটি ছবিতে, ভাই কর্নেশের সঙ্গে এই ছবিটি যৌথ প্রযোজনা করেছিলেন অনুষ্কা শর্মা। তখনই সমালোচকদের চোখ টেনেছিলেন তৃপ্তি। সেই হিসাবে তাঁকে বলিউডে পরিচিত করান অনুষ্কাই। তবে ‘অ্যানিম্যাল’-এর পরেই তৃপ্তি ‘জাতীয় প্রিয়া’ (ন্যাশনাল ক্রাশ)-এর জনপ্রিয় খেতাবটি পান। আজ মুক্তি পেয়েছে তৃপ্তি অভিনীত ‘ব্যাড নিউজ়’ ছবিটি। এই প্রথম বার তৃপ্তি কৌতুক ধারার একটি ছবিতে অভিনয় করছেন। প্রযোজক ধর্মার অফিসে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বললেন তৃপ্তি।
প্রশ্ন: ‘বুলবুল’ আর ‘কলা’ ছবিতে আপনি অনবদ্য অভিনয় করেছেন বলে সমালোচকদের মত, কিন্তু রণবীর কপূরের সঙ্গে ‘অ্যানিম্যাল’ ছবি করার পর আপনি ‘জাতীয় প্রিয়া’র খেতবটি পেয়ে যান। এই বিষয়ে আপনার কী মত?
তৃপ্তি: ‘অ্যানিম্যাল’ ছবি থেকে আমার সবথেকে বড় পাওনা হল বৃহত্তর দর্শকের কাছে আমি পৌঁছে গিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত ‘বুলবুল’ আর ‘কলা’ খুব সীমিত দর্শকের কাছেই পৌঁছেছিল। ‘অ্যানিম্যাল’ ছবিতেও আমি অভিনয়ের জন্য প্রশংসা পেয়েছি। ‘লায়লা মজনু’র মুক্তির একটা লম্বা সময় পরে ‘অ্যানিম্যাল’ মুক্তি পেয়েছিল, তাই ছবিটির একটি আলাদা টান ছিল। ‘জাতীয় প্রিয়া’র উপাধিটিকে আমি খুব খুশি মনেই গ্রহণ করেছি, আর একজন শিল্পীর জীবনে জনপ্রিয়তা যে ভাবেই আসুক না কেন, সেটা সব সময়েই উদ্ যাপন করা উচিত।
অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল তৃপ্তির? ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: ‘অ্যানিম্যাল’ ছবির প্রস্তাব যখন প্রথম আসে তখন আপনার বিশেষ আগ্রহ ছিল না— তথ্যটি কি সত্যি?
তৃপ্তি: পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি বঙ্গা আমাকে প্রথম দেখেন ‘বুলবুল’ ছবিতে, তার পর আমি ‘অ্যানিম্যাল’ ছবির অডিশনের ডাক পাই। একদম প্রথমে আমার চিত্রনাট্য শুনে ভাল লাগেনি, কিন্তু পরিচালক সন্দীপ আমাকে আশ্বাস দেন দর্শক আমার চরিত্রটি পছন্দ করবেন। এখনও পর্যন্ত আমি জ়োয়ার জন্য অনেক ভালবাসা পাচ্ছি। আর এখন তো ‘অ্যানিম্যাল ২’ মুক্তি পেতে বাকি আছে।
প্রশ্ন: ‘অ্যানিম্যাল’ ছবির সাফল্য আপনার জীবনে কী কী পরিবর্তন নিয়ে এল?
তৃপ্তি: ‘অ্যানিম্যাল’ যখন মুক্তি পায় তখন আমি ভোপালে শুটিং করছিলাম, হঠাৎ দেখি সমাজমাধ্যমে আমাকে নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। একজন শিল্পীর তো এটাই সবথেকে বড় পাওনা। আমার এই সাফল্যে আমার মা-বাবা দু’জনেই খুব খুশি, আরও আনন্দ পান যখন রাস্তায় অনুরাগীরা কেউ থামিয়ে আমার সঙ্গে নিজস্বী তোলেন।
‘অ্যানিম্যাল’ ছবির সাফল্য কী কী পরিবর্তন নিয়ে এল নায়িকার জীবনে? ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: নিজেকে নিয়ে কোনও দিন সংশয় ছিল?
তৃপ্তি: কৈশোর বয়সে ছিল বইকি! আমার মাথা নাকি খুব বড় ছিল। আমার কোঁকড়া চুলের দরুন আমাকে ‘ম্যাগি ম্যাগি’ বলে সবাই খ্যাপাত। তাই আমি সারা ক্ষণ চেষ্টা করতাম নিজের চুলকে কী ভাবে সোজা করব। নিজেকে মানিয়ে নিতে সময় লাগে, কিন্তু এক বার মানিয়ে নিলে আমি পিছনে ঘুরে তাকাই না।
প্রশ্ন: ‘ব্যাড নিউজ়’-এর সালোনিকে (তৃপ্তির চরিত্রের নাম) আপনি কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
তৃপ্তি: (হেসে) প্রথমেই বলে রাখি সালোনির জীবনে যা হয়েছে তা কোনও দিন তৃপ্তির সঙ্গে হবে না। এর আগে আমি কৌতুক ধারার ছবিতে কোনও দিন কাজ করিনি। তাই প্রথম যখন আমাকে এই ছবির জন্য বাছা হয় আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর একটা কথায় আমি সব সময় বিশ্বাস রাখি, যে জিনিসে আমি ভয় পাই, সেই কাজ আমাকে করতেই হবে। সেটাই জীবনের আসল পরীক্ষা। আমি করিও সেটা।
প্রশ্ন: আপনার কাছে খারাপ খবরের সংজ্ঞা কী?
তৃপ্তি: আমার বাড়িতে দু’টি পোষ্য বিড়াল আছে। আমি যখন মুম্বইয়ের বাইরে শুটিংয়ে যাই, ওদের শরীর খারাপ হলে আমার খুব চিন্তা হয়। আমার দাদু আমার খুব কাছের মানুষ ছিলেন। উনি যখন মারা যান, তখন সেটা আমার কাছে খুব খারাপ খবর ছিল।
প্রশ্ন: পেশার একদম প্রথমে সেটে এসে কী রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল?
তৃপ্তি: তখন মনে কোনও ভয় ছিল না, কারও পরোয়া করতাম না। ভাল লাগত বলে অভিনয় করতাম। দিল্লি থেকে যখন মুম্বই এসেছিলাম তখন ইন্ডাস্ট্রিতে কাউকে চিনতাম না। এতটাই অন্তর্মুখী ছিলাম, বাড়িতেও কারও সঙ্গে বেশি কথা বলতাম না। আর পরবর্তী কালে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ববোধও চলে আসে। আগের তৃপ্তির সঙ্গে আজকের তৃপ্তির প্রধান ফারাক হল আত্মবিশ্বাস; এখন আমার মধ্যে ভয় কাজ করে না। আমি আমার জীবনে সমতা বজায় রেখে চলতে ভালবাসি, অভিনয় করা আমার পেশা। এ ছাড়াও আমি আরও অনেক কিছু করতে ভালবাসি।